খেলাধুলা

সেঞ্চুরি প্রয়াত কোচকে উৎসর্গ তামিমের

বাংলাদেশের ক্রিকেটে ওপেনার তামিম ইকবালের অবদান অনস্বীকার্য। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ওপেনিংয়ের এক প্রান্ত আগলিয়ে যাচ্ছেন। নিজের করে নিয়েছেন দেশের ব্যাটিংয়ের প্রায় সব রেকর্ড। হয়েছেন বিশ্বের সেরা ওপেনারদের একজন।

তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছেন আরেক তামিম। যুব দলের হয়ে আলো ছড়ানো এ ওপেনারের নাম তানজিদ হাসান তামিম। এবারের যুব বিশ্বকাপে দুর্দান্ত কিছু না করতে পারলেও কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছেন চোখ জুড়িয়ে যাওয়া ৮০ রানের ইনিংস। তারই ধারাবাহিকতায় আরেকটু বড় মঞ্চে সুযোগ মিলেছে তার। জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের বিপক্ষে লাল বলের প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামার।

আর প্রথম সুযোগে বাজিমাত তামিমের। বিকেএসপির মাঠে খেলেছেন ১২৫ রানের অপরাজিত ঝকঝকে ইনিংস। তাও মাত্র ৯৯ বলে ১৪ চার ও ৫ ছয়ে। এমন ইনিংস খেলে শতক উৎসর্গ করলেন নিজের প্রথম কোচকে। যিনি চার বছর আগে মারা গেছেন।

‘আমার বাড়ি বগুড়ায়। সেখানে আমার কোচ ছিলেন মুসলিম উদ্দিন স্যার। আমি যার কাছে ছোট বেলা থেকে ক্রিকেট শিখেছি। উনি চার বছর আগে মারা গেছেন। আমার সেঞ্চুরিটা আমি উনাকে উৎসর্গ করতে চাই।’

ম্যাচে তামিম যখন ব্যাটিংয়ে নামেন তখন বিসিবি একাদশের স্কোর ৬৯/৫। তবে এমন চাপে ভেঙে পড়েননি তামিম। আর এজন্য অধিনায়ক আল আমিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এ টিনেজ ক্রিকেটার, ‘আমি যখন ক্রিজে আসি তখন পরিস্থিতিটা সত্যি অন্যরকম ছিল, আমরা চাপে ছিলাম। ভাইয়া আমাকে বলেছে জাস্ট ন্যাচারাল খেলাটা খেলতে। আসলে সত্যি কথা বলতে, ভাই আমাকে অনেক সমর্থন করেছে। আমি ভাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’

লাল বলের খেলায় মনযোগ ধরে রাখা কষ্টকর। হুট করে এ ফরম্যাটে নেমে মনযোগ হারিয়েছেন তামিমও। তবে আল আমিন থাকায় কোনো সমস্যা হয়নি তার। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কও পেয়েছেন শতকের দেখা। আর সেটি উপভোগ করেছেন তামিম নিজেও, ‘আমি যখন অন্যমনষ্ক হয়ে যাচ্ছিলাম তখন ভাই আমাকে সাহায্য করেছে। স্বাভাবিক থাকতে বলছে। ভাই অনেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, উনার সেঞ্চুরিটা উপভোগ করেছি।

এদিকে প্রথমবারের মতো লাল বলের ক্রিকেট খেলেও কিভাবে এত নির্ভার ছিলেন তামিম। খেলেছেন এমন ঝড়ো ইনিংস। উত্তরে বলেছেন, ‘সাদা বল দুই বছর খেলে লাল বলে আসা কঠিন। তবে আমি স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করেছি। আমার জোনে বল পেলে মারার চেষ্টা করেছি। আর এটাই আমার ন্যাচারাল গেম। আমি প্রস্তুত ছিলাম সুযোগ কাজে লাগানোর। আর বিশ্বকাপ জিতে এসে জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে খেলা চাপের। তবে এ ম্যাচে আমরা চাপ নিই নাই, চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমরা মাঠে যেরকম মজা করি। সেভাবে খেলে উপভোগ করেছি।’

তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটিংশৈলী অসাধারণ। হাতে আছে সব ধরনের শট। ফ্রন্টফুটে-ব্যাকফুটেও স্বচ্ছন্দ। বড় খেলোয়াড় হওয়ার সব গুণ আছে এ বাঁহাতির। তামিম ইকবালের পর ওপেনিংয়ে বাজির ঘোড়া হিসেবে এখন থেকে চোখ রাখা যেতে পারে এ তরুণ তুর্কির উপর। ঢাকা/কামরুল