খেলাধুলা

ওয়ানডেতে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি!

ইনিংসে কোনো একজন নির্দিষ্ট বোলারের ১০ উইকেট শিকার ক্রিকেটে বিস্ময়ের পর্যায়ে পড়ে। প্রায় দেড়’শো বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ঘটনা দেখা গেছে মাত্র দুইবার। তাও টেস্ট ক্রিকেটে।

তবে এবার সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইনিংসে ১০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়লেন এক ভারতীয় নারী ক্রিকেটার। মঙ্গলবার অনূর্ধ্ব-১৯ স্তরের চন্ডিগড় ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্যকার ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করেন কেসভি গৌতম। ১৬ বছর বয়সী কেসভি ম্যাচটিতে হ্যাটট্রিকও করেছেন। ম্যাচে তার বোলিং ফিগার ছিল ৪.৫-১-১২-১০।

টেস্ট ক্রিকেটের শুরু হয় ১৮৭৭ সাল থেকে। তখনকার ক্রিকেটে বোলারদের জন্য সুযোগ সুবিধা থাকলেও ইনিংসে ১০ উইকেট পাওয়ার কীর্তি প্রথম দেখা যায় ১৯৫৬ সালে। ইংল্যান্ডের জিম লেকার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গড়েন এ কীর্তি। তবে ১০ উইকেট নিতে স্পিনার লেকারকে করতে হয়েছে ৫১.২ ওভার। সে ইনিংসে ২৩টি মেডেনের সঙ্গে ৫৩ রান খরচায় ১০ উইকেট নেন বাঁহাতি এ স্পিনার।

এরপরে আবার ইনিংসে একজন বোলারের ১০ উইকেট দেখতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৪৩ বছর। ১৯৯৯ সালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে এ কীর্তি গড়েন ভারতের অনিল কুম্বলে। তাকেও হাত ঘুরাতে হয়েছে ২৬.৩ ওভার। ৭৪ রানের বিনিময়ে পাকিস্তানের সব উইকেট নিজের নামে কুড়ায় কুম্বলে।

টেস্টে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেও ওয়ানডেতে এটা প্রায় অসম্ভব পর্যায়ের পড়ে। একজন বোলার সর্বোচ্চ ১০ ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পান। এর মধ্যে ইনিংসের সবকটি উইকেট নেওয়া কঠিনতর কাজের একটি। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভাসের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৯ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট নেন এ বাঁহাতি পেসার। এছাড়াও ৭ উইকেট নিয়েছেন ১১ জন বোলার। ডমেস্টিক পর্যায়েও ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮টি উইকেট নিতে পেরেছে নির্দিষ্ট এক বোলার। আর এ কীর্তিতে সবার উপরের নাম শাহীদ আফ্রিদির।

তবে এবার সবকিছু ছাড়িয়ে গেছেন ভারতীয় ডানহাতি নারী পেসার কেসভি। চন্ডিগড়ের হয়ে নিয়মিত খেলেন কেসভি। অনূর্ধ্ব-১৬, ১৮, ১৯ ও ২৩ দলের হয়েও খেলে ফেলেছেন। চলতি মৌসুমে সুইং বোলিংয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে নাজেহাল করে ৬৩ উইকট নিয়েছেন। গতকাল অরুণাচল প্রদেশের বিপক্ষে আবারও রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন কেসভি।

কোনো ফিল্ডারের সহযোগিতা ছাড়াই তুলে নিয়েছেন দশ উইকেট। এর মধ্যে ছয়টি এলবিডব্লিউ এবং চারটি বোল্ড। এর মধ্যে হ্যাটট্রিকও করেছেন ১৬ বছর বয়সী এ নারী ক্রিকেটার। বল হাতে আগুণ ঝরানোর আগে ব্যাট হাতেও করেন ৪৯ রান। এতে তার দল ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৬ রান সংগ্রহ করে। জবাবে কেসভির বোলিং তোপে অরুণাচল প্রদেশ মাত্র ২৫ রানে অল আউট হয়ে যায়।

ম্যাচ শেষে কেসভি নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে বলেন, ‘আমি ফিফটি মিস করলেও এটা আমাকে ভালো বোলিংয়ে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না যে, বিষয়টি সত্যি ঘটেছে। টানা এক জায়গায় বল ফেলাটা আমায় উইকেট পেতে সহায়তা করেছে। আমার ৮ উইকেট হওয়ার পর সতীর্থরা আমায় ১০ উইকেট নিতে বলেছে। এর আগে বিষয়টি নিয়ে আমি ভাবিইনি।’

এদিকে নিজের প্রিয় বোলার নিয়ে কেসভি বলেন, ‘আমি সুইং বোলার। আর এক্ষেত্রে আমি আদর্শ মানি ভুবনেশ্বর কুমারকে। তবে পেসার হিসেবে আমার প্রিয় জোফরা আর্চার। আমি আসন্ন আইপিএলে তার খেলা দেখতে মুখিয়ে আছি।’ ঢাকা/কামরুল