খেলাধুলা

মাতৃত্বের ছোঁয়ায় বদলে যাবে নিউজিল্যান্ড?

মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবার মাতৃত্বের শিহরণ অন্যমাত্রা যোগ করছে নিউজিল্যান্ডের ড্রেসিংরুমে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সোমবার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নামার আগে সমলিঙ্গ দম্পতি লি তাহুহু ও অ্যামি স্যাটারওয়েটের ঘরের নতুন অতিথি উজ্জীবিত করছে হোয়াইট ফার্নদের। মাত্র ৪২ দিনের গ্রেস মারি যে জাংশন ওভালের গ্যালারির দর্শক!

২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড সমলিঙ্গের বিয়ে আইনসিদ্ধ ঘোষণা করে। পরের বছর থেকে সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাহুহু ও স্যাটারওয়েটের, করে ফেলেন আংটিবদল। ২০১৭ সালের মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়েও করেন। গত বছরের আগস্টে স্যাটারওয়েট টুইটারে ঘোষণা দেন, পরিবারের তৃতীয় সদস্য আসছে নতুন বছর। প্রথম সন্তানের দেখভালের জন্য ক্রিকেট থেকে সাময়কি বিরতি নেন সাবেক অধিনায়ক স্যাটারওয়েট। তার এ ত্যাগ বৃথা যাক চান না তাহুহু। স্ত্রী-সন্তান দুজনকেই গর্বিত করতে চান, ‘এই বিশ্বকাপে খেলতে আমার স্ত্রীর সমর্থন পাওয়া বিশাল ব্যাপার।’

গ্যালারিতে স্যাটারওয়েট ও গ্রেসি থাকছেন, ভেবেই রোমাঞ্চিত তাহুহু, ‘আমাদের পরিবারের জন্য সত্যিই দারুণ একটা মাস এটা। আমাদের ঘরে এসেছে প্রথম মেয়ে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাওয়া এটা। অ্যামি ও গ্রেস আমাদের মেলবোর্নের খেলাগুলো দেখার জন্য এসেছিল। খেলা শেষে স্ত্রী ও মেয়ের কাছে ফেরা সত্যিই বিশেষ কিছু।’

তবে শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টে থাকতে চান এবং শিরোপা নিয়ে ফেরার লক্ষ্য ২৯ বছর বয়সী পেসারের, ‘আমাদের ও দেশের সবার একটাই লক্ষ্য বিশ্বকাপ জেতা। গত দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যেতে না পেরে হতাশ হয়েছিলাম। তাই প্রথমে আমরা এই বাধাটা জয় করতে চাই।’ দুই দলই ৩ ম্যাচে সমান ৪টি করে পয়েন্ট পেয়েছে। তবে রান রেটে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় স্থানে অজিরা। জিতলেই সেমিফাইনালে, এই সমীকরণ নিয়ে সোমবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল।

অতীত অবশ্য নিউজিল্যান্ডের পক্ষে নেই। স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং আগের ছয়বারে কখনও নকআউটে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়নি। অন্যদিকে হোয়াইট ফার্নরা ২০১৮ সালে গ্রুপ পর্বেই ছিটকে যাওয়ার ব্যর্থতা ঠেকাতে মরিয়া।

তবে সোমবারের ফলাফল যাই হোক না কেন, উদযাপনের উপলক্ষ জানাই আছে নিউজিল্যান্ডের। অধিনায়ক সোফি ডিভাইন বলেছেন, ‘আমাদের দলের মধ্যে একটা অন্যরকম আবহ তৈরি হয়েছে, আমাদের দুই সতীর্থের সন্তান। লি ও অ্যামির আনন্দঘন জীবন কাটছে এখন এবং সেগুলো দলের সঙ্গে ভাগাভাগিও করে। ছোট্ট গ্রেসের এখন ১৫ জন আন্টি, যে কোনও সময় বেবিসিটার প্রয়োজন হলে অনেককে পাবে। মাঠে যাই ঘটুক না কেন, লি মাঠ ছাড়ার পর সে তার সুন্দর মেয়েকে দেখতে পারবে। তার ভালোবাসায় আচ্ছন্ন থাকবে। এটা পুরো দলের জন্য বিশেষ কিছু। আমরা ক্রিকেট ভালোবাসি। এটা আমাদের কাছে অনেক অর্থবহ। কিন্তু বাউন্ডারির সীমানার বাইরেও জীবন আছে।’

 

ঢাকা/ফাহিম/আমিনুল