খেলাধুলা

শুভ জন্মদিন ‘জার্সি নম্বর ৯৬’

জন্মেছিলে এই দিনে। ১৯৮৪ সালের ৪ মে আজকের এই দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন ক্রিকেটার মানজারুল ইসলাম রানা।

অথচ দেশকে নিজের পাওনা সবটা না বুঝিয়ে চলে গেছেন ওপারে। ২০০৪ সালে দারুণ সম্ভাবনাময় এ ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার শুরু হয়। মাত্র তিন বছরেই নিজের প্রতিভাকে ভালোভাবে চিনিয়েছিলেন খুলনার মুজগুন্নি পাড়ার ছেলেটি। কিন্তু ২০০৭ সালে থেমে যায় জার্সি নম্বর ১৬। বাংলাদেশের ক্রিকেটেও থেমে যায় জার্সি নম্বর ১৬। মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় সতীর্থ আরেক ক্রিকেটার সাজ্জাদুল হাসান সেতুর সাথে জীবন হারান রানা। দেশকে আরও অনেক কিছু দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও মাত্র ২৩ বছর বয়সেই বিদায় নিতে হয় তাকে।

বেঁচে থাকলে হয়ত এই দিনটি অনেকের মতো ঘটা করে পালন করতেন রানা। হয়তো তাঁর রত্মগর্ভা মায়ের থাকত বিশেষ আয়োজন। কিংবা সতীর্থ ক্রিকেটাররা উপহার দিতেন সারপ্রাইজ পার্টি। হয়তো রানাও আমন্ত্রণ করতেন সেই বিখ্যাত ‘চুই ঝাল’ (বিশেষ ধরনের গরুর ভুনা)  খেতে! কিন্তু সেসবের কিছুই হবার নয়। জীবনের ইনিংসে অনেক আগেই পরেছে ফুলস্পট।

রানার জন্মদিন পালনে আজ কোথাও কেউ অপেক্ষাতে নেই। কোন ক্রিকেট রেকর্ডেরও অপেক্ষা নেই রানাকে ধরা দেওয়ার। কিন্তু রানা যাবার বেলায় রেকর্ড গড়েই বিদায় নিয়েছেন তিনি। সবথেকে কম বয়সে মারা যাওয়া টেস্ট ক্রিকেটার তিনিই।

মানজারুল ইসলাম রানার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তাঁর ছোটবেলার কোচ এজেডএম ওহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আমার ছাত্রদের মধ্যে রানা ছিলো সবথেকে চঞ্চল। একটু দুষ্টু প্রকৃতির হলেও কখনও কোন অন্যায় করতো না। ছোটবেলা থেকেই সব সময় মাঠ মাতিয়ে রাখাই ছিলো তার কাজ। জাতীয় দলে থাকার সময়ও কখনও তার মধ্যে বিনয়ীর এতটুকু অভাব দেখা দেয়নি। দূরে থাকলেও ফোন করে সব সময় আমার কাছ থেকে টিপস নিতো বিভিন্ন বিষয়ে।’

খুলনা বিভাগের হয়ে ২০০০-২০০১ মৌসুমে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট দিয়ে পেশাদার ক্রিকেটে পথচলা শুরু রানার। ওই বছরই প্রথমবারের মতো ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও খেলেন রানা। তার আগে অবশ্য বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটও ভালোভাবে পার করেছেন খুলনা জিলা স্কুলের ছাত্র রানা। ছোট্ট ক্যারিয়ারে ৬টি টেস্ট ও ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন বাঁহাতি স্পিন অলরাউন্ডার।

২০০৪ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় খুলনার সন্তানের। সাদা পোশাকে অভিষেকের আগেই অবশ্য রঙিণ পোশাকে তাঁর যাত্রা শুরু হয়। ছোট্ট ক্যারিয়ারে ব্যাট-বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন। ৬ টেস্টে ৫টি আর ২৫ ওয়ানডেতে ২৩টি উইকেট পেয়েছেন। দুই ফরমেটেই রয়েছে একটি করে অর্ধশতক। সমৃদ্ধ ছিলো তার প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ক্যারিয়ারও। ৪৬টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ২৪৬৬ রান করেছেন। পাশাপাশি উইকেট আছে ১২৭টি। 

 

ঢাকা/রুবেল/ইয়াসিন