খেলাধুলা

ক্রিকেটারদের গৃহবন্দি ঈদ

গত বছর ঈদুল ফিতরে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা প্রত্যেকে ছিলেন একসঙ্গে। বিশ্বকাপ চলাকালীন লন্ডনে সাদামাটা ঈদ পালন করেছিলেন মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকরা।

এবারও ঈদ যাচ্ছে বিরুদ্ধ সময়ে।  এবার প্রত্যেকে যার যার ঘরে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ঈদের খুশিতে পড়েছে ভাটা। পরিস্থিতির কারণে প্রত্যেকেই এখন সতর্ক। তবুও ঈদ বলে কথা। চার দেয়ালে পরিবার নিয়েই ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন ক্রিকেটাররা।  

মুশফিকুর রহিম দেশে থাকলে ঈদ করেন বগুড়াতে। কিন্তু এবার ঢাকাতেই ঈদ পালন করছেন। করোনাভাইরাসের কারণে ঢাকার ঈদ অভিজ্ঞতা হয়ে গেল বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের। খানিকটা আক্ষেপই ঝরল মুশফিকের কণ্ঠে,‘প্রতি বছর বগুড়ায় ঈদ করা হয়। সেটা রমজানের ঈদ হোক আর কুরবানির ঈদ হোক। এবার করোনার কারণে যাওয়া হয়নি। একটু তো খারাপ লাগবে। বগুড়া সব সময়ই আমার খুব কাছের। তবুও করোনার পরিস্থিতিতে ভালো আছি এতোটুকুতেই স্বস্তি।আমরা সবাই বাড়িতে আছি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য এটি একটি দুর্দান্ত সুযোগ।’  

সাকিব আল হাসান পরিবার নিয়ে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সকালে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছেন সাকিব। সাকিবের বার্তা, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ঈদ মোবারক। নিরাপদে থাকুন।’ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে এ ক্রিকেটার জানান, পরিবারের সবাই সুস্থ আছে। ঈদ কাটছে ভালোই।’ সাকিবের ঈদ পালনের বেশ কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসীদের সঙ্গে ভালো সময় কাটছে এ ক্রিকেটারের।  

জাতীয় দলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এর আগে ঢাকায় ঈদ পালন করেছেন কিনা মনে নেই। কিন্তু করোনার পরিস্থিতিতে ঢাকাতেই থাকতে হচ্ছে তাকে। ছেলে, ভাইকে নিয়ে ঈদের নামাজ পড়েছেন সকালেই।

জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন রয়েছেন বাগেরহাটে। ঘরের কাছের মসজিদে নামাজ পড়েছেন। আর ছেলেকে নিয়ে প্রথম ঈদ বলে খুব খুশি রুবেল,‘ছেলে রাফসাদ হোসেন আইয়ানের সাথে আবার প্রথম ঈদ। এজন্য তো বেশি ভালো লাগছে। তবে সবার কথা চিন্তা করলে খারাপ লাগে। ঘরে বসে থাকা ছাড়া কিছু তো করার নেই। এবারের ঈদ এসেছে ভিন্নরূপে করোনার করুন সুরে। তাই এবারের ঈদ আমাদের পালন করতে হবে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি জেনে এবং সঠিকভাবে তা মেনে।’  

রুবেলের মতো সন্তানসহ প্রথম ঈদ এনামুল হক বিজয়ের। সারাদিন ঘরে থাকার পর বিকেলে একটু বেড়িয়েছিলেন। মেয়েকে নিয়ে ছবি তুলেছেন। এনামুল হক বিজয় বলেছেন,‘আমাদের তোহফা মামুনির জীবনের প্রথম ঈদ। আমাদেরও প্রথম ঈদ বাবা-মা হিসেবে। আজ মনটা শুধু বারবার বলছে, পৃথিবীর প্রতিটি পরিবারকে যেন আল্লাহ তা'আলা সুস্থ, নিরাপদ এবং সুখে রাখেন।’

তামিম ইকবাল নিজের ফেসবুকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন,‘আপনাকে ও আপনার পরিবারকে ঈদ মোবারক। সবাই ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন।’ জাতীয় দলের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক ঈদ পালন করেন কক্সবাজারে। এবার লকডাউনে ঢাকা ত্যাগ করা হয়নি তাঁর। স্ত্রী কে নিয়ে ফেসবুকে ছবি আপলোড করে লিখেছেন,‘ঈদ মোবারক। পরিবার নিয়ে সুস্থ থাকুন। নিরাপদ থাকুন।’  

কিছুদিন আগে তাজিমের লাইভে এসে মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছিলেন, মিষ্টি জাতীয় খাবার তাঁর খুব পছন্দ। আজ নিজের পছন্দের সব খাবার খাচ্ছেন বলে জানালেন জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক,‘ঈদের নামাজ পড়া হয়েছে অ্যাপার্টমেন্টের মসজিদে। এরপর ঘরের ভেতরেই। পছন্দের সব খাবার আজ খাচ্ছি। কোনও ডায়েট নেই। ঈদের একটি দিনই তো আনন্দের। তাই মন খুলে খাচ্ছি।’ মাস খানেক হলও মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হয়েছেন। চারজনের পরিবারে এখন সুখের বন্যা। দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন,‘আমরা নিজেরা পারি আমাদের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঈদ পালন করতে পারলেই আমরা আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারব। সামনের ঈদে হই হুল্লোড় করতে পারব। এজন্য আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। সেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’

জাতীয় দলের অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন রয়েছেন ফেনিতে। লকডাউনের পরপরই এ পেস অলরাউন্ডার নিজ বাড়িতে। ঈদের নামাজ মসজিদে আদায় করে বড় ভাই ও ছোট ভাইকে নিয়ে ছবি তুলেছেন। সেই ছবি পোস্ট করে ফেসবুকে লিখেছেন,‘সবাইকে ঈদ মোবারক। আশা করছি আমার ভক্ত ও বন্ধুরা সবাই নিরাপদ ও খুশি সাথে ঈদ পালন করবেন।’ ঢাকা/ইয়াসিন