কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর থেকে বর্ণবাদ ইস্যুতে বেশ সরব ক্রিকেটাঙ্গন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ড্যারেন স্যামি থেকে শুরু করে ক্রিস গেইলরা মুখ খুলেছেন এই বিষয়ে। করোনা সঙ্কট কাটিয়ে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ প্রতিবাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন সকলে। এমন অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে হওয়া বর্ণবৈষম্যমূলক আচরণের ব্যাপারে মুখ খুলেছেন দেশটির সাবেক পেসার ইথি ভালাতি।
কখনো জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়া ভালাতি ঘরোয়া লিগে ছিলেন নিয়মিত মুখ। ১৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নর্দার্নস, টাইটানস, দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’, দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং দলের হয়ে ২২১টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ঝুলিতে পুরেছেন ৫৯৪ উইকেট। ৩৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার ২০১৬ সালে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন রাখার দায়ে দশ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হ্ন। এরপরই নেন অবসর।
ক্যারিয়ারে লম্বা সময় ধরে খেলেছন সেঞ্চুরিয়নের নর্দার্ন ক্রিকেট ইউনিয়নের (এনসিইউ) হয়ে। এই ক্লাবের বিরুদ্ধে বেশি অভিযোগ তার। এই ক্রিকেটার জানিয়েছেন, এখানে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন তিনি। কালো হওয়ার কারণে তাকে বানর বলেও ডাকা হতো। এমনকি পারশ্রমিকের বেলায়ও বৈষম্যের শিকার ছিল কালোরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার সংবাদমাধ্যম টাইমস লাইভকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভালাতি এমন সব তথ্য জানান। যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাব ক্রিকেটকে নিকৃষ্ট বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার ক্লাব ক্রিকেট সবচেয়ে নিকৃষ্ট। কারণ সেখানে প্রায়ই আমাদের বানর বলে ডাকা হতো। শুধু বানর নয়, আরও অনেক অপমানজনক নামেই ডাকা হতো। আমি দেখেছি, সদ্য স্কুল পেরুনো শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়দের জন্য বার্ষিক ৪ লাখ র্যান্ডের চুক্তি প্রস্তুত থাকত। অথচ আমরা কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়রা পেতাম বছরে ২ লাখ র্যান্ড।’
ড্রেসিংরুমেও বিভিন্ন রকম অপমান সইতে হতো জানিয়ে ভালাতি আরও যোগ করেন, ‘এমনও অনেকবার হয়েছে যে, ড্রেসিংরুম থেকে কিছু চুরি গেলে সবার আগে সন্দেহ করা হতো কালো খেলোয়াড়দের। কিন্তু পরে যখন অন্য কোথাও পাওয়া যেত জিনিসটা, তখন আর কেউ কালো খেলোয়াড়দের কাছে ক্ষমা চাইতে আসতো না।’
শ্বেতাঙ্গরা বরাবরই বেশি সুযোগ পেতেন জানিয়ে ভালাতি আরও বলেন, ‘কখনও কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড় জোরে কথা বললে বা হাসলে সেটাকে বড় ইস্যু বানিয়ে ফেলতো শ্বেতাঙ্গ খেলোয়াড়রা। কিন্তু তারা যখন মদ্যপ হয়ে হৈহুল্লোড় করতো, নগ্ন শরীরে মাঠে নেমে যেত, সেটাকে কোন বিষয়ই মনে করা হতো না। উল্টো তারা আশা করতো, আমরা যেন এই ঘটনায় হাসি।’
ঢাকা/কামরুল