খেলাধুলা

শ্রীলঙ্কা সফরে ধোঁয়াশা কাটেনি, লিগ নিয়েও শঙ্কা

ক্রিকেটারদের পদচারণায় মুখর মিরপুর হোম অব ক্রিকেট। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন করছেন জাতীয় দলের ১৬ ক্রিকেটার। আইসোলেশনে থাকা ১১ ক্রিকেটারের ঠিকানা অ্যাকাডেমি মাঠ। শ্রীলঙ্কা সফরকে সামনে রেখে এই ২৭ ক্রিকেটারকে স্কিল ট্রেনিংয়ের জন্য ডেকেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। যদিও দ্বীপরাষ্ট্রে সফর নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা কাটেনি। তবুও বিসিবি এগিয়ে যাচ্ছে পরিকল্পনামতো।

গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার দেওয়া কঠোর কোয়ারেন্টাইন শর্তে সফরে যেতে অনীহা প্রকাশ করে বাংলাদেশ। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সেদিন মিরপুরে বলেছিলেন, ‘শ্রীলঙ্কার প্রস্তাবের অপেক্ষায় থাকার কিছু নেই। আমরা ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করে দেব এখনই।’

দেশের মাটিতে ক্রিকেট ফেরানোর ঘোষণা দিলেও বিসিবি সভাপতি সিদ্ধান্তটা হুট করে নিয়েছেন তা বোঝা গিয়েছিল। কোন ধরনের টুর্নামেন্ট দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট ফেরানো হবে, তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি, ‘কী করবো সেটা এখন বলছি না। কিছু তো একটা করবোই। ক্রিকেট মাঠে ফেরাবো। এখন কোচিং স্টাফরা আছে। ছেলেরা এতদিন খেলার বাইরে, ওদেরকে আবার খেলার মাঠে নিয়ে আসবো।’

শ্রীলঙ্কার কড়া শর্ত ফিরিয়ে দেওয়ার দশ দিন পরও সংশোধিত প্রস্তাব আসেনি। বিসিবির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মৌখিক আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিক চিঠি আসেনি। বিসিবি আর কতদিন অপেক্ষা করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে এক শীর্ষ পরিচালক বলেন, ‘আমাদের শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করার এখন কোনও সুযোগ দেখছি না।’ 

জাতীয় ক্রিকেট লিগ দিয়ে প্রতি বছর শুরু হয় ঘরোয়া ক্রিকেটের মৌসুম। শেষ দুই ক্রিকেট মৌসুমে বিসিবি বর্ষপঞ্জিকা মেনে চলেছে ভালোভাবে। দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ও জৌলুসপূর্ণ আসর গত বছর শুরু হয়েছে ১০ অক্টোবর। ২০১৮ সালে শুরু হয়েছিল ১ অক্টোবর। ২০২০-২১ মৌসুমের পঞ্জিকায় জাতীয় লিগ শুরুর কথা অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। কিন্তু এবার যথাসময়ে লিগ শুরুর সম্ভাবনা নেই। 

বিসিবি সভাপতি ঘরোয়া ক্রিকেট চালু করার ঘোষণা দিলেও টুর্নামেন্ট আয়োজকরা এখনও কোনও নির্দেশনা পায়নি। টুর্নামেন্ট কমিটির ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরু করার প্রক্রিয়া নিয়ে এখনও নির্দেশনা পাইনি। আমাদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে লিগ শুরুর কথা। ’

দুই স্তরে আট দলের টুর্নামেন্ট অক্টোবরে শুরু হচ্ছে না তা মোটামুটি নিশ্চিত। এর মূল কারণ দুইটি। প্রথমত, বিসিবি শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য অপেক্ষা করতে রাজি। দ্বিতীয়ত, করোনাকালে আট দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে রাজি নয় বিসিবি। এজন্য সহসাই ঘরোয়া ক্রিকেট আলোর মুখ দেখছে না। তাইতো প্রশ্ন উঠছে, শ্রীলঙ্কা সফর ও ঘরোয়া লিগ না হলে তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহরা কী করবেন? জৈব সুরক্ষা বলয় মেনে ক্রিকেটাররা যেভাবে অনুশীলন করে যাচ্ছেন সেভাবেই কী চলতে থাকবে? তামিমদের জন্য আপাতত কোনও সুখবর নেই। 

তবে শোনা যাচ্ছে, করপোরেট চার দল নিয়ে একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট শুরুর চিন্তা করছেন নীতি নির্ধারকরা। অনেকটাই বিসিএল টুর্নামেন্টের মতো। যদিও এ আলোচনা এখন পর্যন্ত মৌখিক পর্যায়েই রয়েছে। যে কোনও সময়ে চাইলে ঘরোয়া টুর্নামেন্ট চালু করা সম্ভব এমন ধারণা দিয়ে রাখলেন আরিফুল ইসলাম। 

টুর্নামেন্ট কমিটির ম্যানেজার বললেন, ‘বোর্ড যেদিন সিদ্ধান্ত নেবে, তার ১৫ দিনের মধ্যে টুর্নামেন্ট চালু করতে পারবো। ক্রিকেটাররা আগের থেকে এখন সচেতন। সারা বছর খেলার জন্য প্রস্তুত থাকে। শেষবার বিপ টেস্ট নিয়ে আমরা খেলা শুরু করেছিলাম। তখনই তাদের বলে দেওয়া হয়েছিল যে কোনও সময়ে বিপ টেস্ট হবে এবং খেলা শুরু হতে পারে। করোনাকালে আমরা মাঠগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করেছি। মাঠগুলো এখন সুন্দর হয়েছে। ভালোমানের উইকেটও আছে।’