খেলাধুলা

অলরাউন্ড নৈপুণ্যে খুলনাকে জয়ে ফেরালেন শুভাগত

তিন ক্যাচ মিস ও রান আউটের সুযোগ হাতছাড়া করার খেসারত দিল বেক্সিমকো ঢাকা। অন্যদিকে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে ম্যাচ জয়ের রসদ পেল জেমকন খুলনা। 

মিরপুর শের-ই-বাংলায় ঢাকাকে ৩৭ রানে হারিয়েছে খুলনা। আগে ব্যাটিং করে খুলনা ৮ উইকেটে ১৪৬ রান জমা করে। জবাবে ঢাকা ১৯.২ ওভারে ১০৯ রানে অলআউট। 

খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ দুইবার জীবন পান, ৮ ও ৩১ রানে। প্রথমটি ছাড়েন নাঈম শেখ। দ্বিতীয়টি আকবর আলী। এরপর তার ব্যাট থেকেই আসে খুলনার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান ৪৫। আবার ১২ রানে থাকতে ইমরুল কায়েসকে সহজতর রান আউট করতে পারেননি রুবেল হোসেন। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান যখন সাজঘরে ফেরেন, তখন তার নামের পাশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান। এভাবেই বাজে ফিল্ডিংয়ে হাতছাড়া হয়েছে আরও কয়েকটি সুযোগ।

প্রথমে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলেও শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। ৩০ রান তুলতেই তাদের তিন ব্যাটসম্যান সাজঘরে। নাসুম আহমেদের লেন্থ বল কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন এনামুল হক বিজয় (৫)। পরের ওভারে রুবেলের দারুণ সুইং ডেলিভারিতে বোল্ড হন সাকিব আল হাসান (১১)। ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন এনে জহুরুল ইসলাম অমিকে ওপরে পাঠিয়েছিল খুলনা। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ৪ রানে বোল্ড হন অভিষিক্ত অভিষিক্ত শফিকুল ইসলামের স্লোয়ারে। 

চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন ইমরুল ও মাহমুদউল্লাহ। অনেকটাই ধীর গতিতে ব্যাটিং করেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। তাতে অবশ্য সচল ছিল দলের স্কোরবোর্ড। ১৪তম ওভারের শেষ বলে তাদের ৫৬ রানের জুটি ভাঙেন স্পিনার নাঈম হাসান। ২৭ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৯ রান তুলে ইমরুল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ হন।

মাহমুদউল্লাহ নিজের প্রথম বাউন্ডারি পেতে খেলেন ৩০ বল। এরপর আরও দুইটি বাউন্ডারি হাঁকান। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ৪৫ রান। রুবেলের অফস্টাম্পের বাইরের বল উইকেটে টেনে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ। 

শেষ দিকে দলকে কাঙ্ক্ষিত রান এনে দেন প্রথমবার সুযোগ পাওয়া শুভাগত হোম। ৫ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান তোলেন ১৫ রান। শেষ ৩ ওভারে ৩১ রান তুলে খুলনা লড়াকু সংগ্রহ পায়। ঢাকার হয়ে বল হাতে ২৮ রানে ৩ উইকেট নেন রুবেল। ৩৪ রানে ২ উইকেট পান শফিকুল।    

ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ঢাকাকে চাপে রাখে খুলনা। প্রথম ওভারে শুভাগত ফেরান তামিমকে (৪) । পরের ওভারে সাকিব কোনও রান না দিয়ে নেন নাঈম শেখের উইকেট। তার দ্বিতীয় ওভারেও কোনও রান নিতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা। বোলিংয়ে এসে শহীদুল নিজের প্রথম বলে পেয়ে যান রবিউল ইসলাম রবির উইকেট। 

১৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে পথ হারায় ঢাকা। সেখান থেকে মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী লড়াই করে ৫৭ রান যোগ করলেও রানের বোঝা চাপতে থাকে তাদের ওপর। দ্রুত রান তোলার তাড়া ছিল। আগ্রাসন দেখাতে গিয়ে উইকেট হারায় তারা। ২১ রানে হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হন ইয়াসির। শুভাগতকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে মুশফিক ক্যাচ দেন ৩৭ রানে। 

পরের ব্যাটসম্যানরা কেউই পারেননি দলের দাবি মেটাতে। পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেননি। 

শুভাগত ৩.২ ওভারে ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। শহীদুল ৩০ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। সাকিবের কিপটে বোলিংও ছিল কার্যকরী। ৪ ওভারে ২ মেডেনে ৮ রানে তার শিকার ১ উইকেট, দুটি গেছে হাসান মাহমুদের ঝুলিতে। 

দুই ম্যাচ পর জেমকন খুলনা জয়ে ফিরলো। চার ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠলো তারা। অন্যদিকে তিন ম্যাচ খেললেও জয়ের খাতা খুলেনি ঢাকা।