খেলাধুলা

ঢাকার মধুর প্রতিশোধ

বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়ে প্রতি আক্রমণে ঢাকাকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন ইয়াসির আলী রাব্বী ও আকবর আলী। বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেটের ফোয়ারা ছোটালেন মুক্তার আলী। প্রতিপক্ষ রাজশাহী চেষ্টা করলেও শেষ হাসি হাসতে পারল না। রাজশাহীকে ২৫ রানে হারিয়ে জয়ের ছন্দ ধরে রাখল ঢাকা। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের পর টানা তিন ম্যাচ হারল রাজশাহী।

প্রথম মুখোমুখিতে হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ রাজশাহীকে উপহার দিয়েছিল ঢাকা। এবার আর ভুল করলো না শিরোপা প্রত্যাশিরা। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে রাজশাহীকে তারা হারিয়েছে হেসেখেলে। মিরপুরে আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। জবাবে রাজশাহী ১৫০ রানের বেশি করতে পারেনি। 

টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা বাজে হয়েছিল ঢাকার। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান নাঈমকে শুরুতে পাঠিয়েছিল ফ্রি স্ট্রোক খেলতে। কিন্তু ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১ রানের বেশি করতে পারেননি। এলবিডব্লিউ হন মেহেদী হাসানের বলে। নাঈমের ব্যাটে ছিল না রান। ১৯ বলে ৯ রানে সাজঘরে ফেরেন আরাফাত সানীর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। মুশফিক এক প্রান্ত আগলে ব্যাটিং করে গিয়েছিলেন। ৩ চার ও ১ ছক্কায় বড় কিছুর আশা দেখাচ্ছিলেন ঢাকার অধিনায়ক। কিন্তু তার ইনিংসটি কাটা পড়ে মুগ্ধর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। ২৯ বলে ৩৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। ওপেনিং থেকে চারে নামা তানজিদ তামিমকেও (২) ফেরান ডানহাতি পেসার।

মুশফিক যখন আউট হন তখন ঢাকার রান ১০.১ ওভারে ৬৪। হাতে বল বাকি ৫৯টি। উইকেটে ইয়াসির আলী রাব্বি ও আকবর আলী। তারা বাদে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান কেউ নেই। কিন্তু দুই ডানহাতি অসাধারণ নৈপুণ্যে দেখালেন। উইকেটের চার পাশে দারুণ সব শটের পাশাপাশি সিঙ্গেল ও ডাবলসে নিজের ইনিংস বড় করেন। দলের দাবি মিটিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করেন আকবর আলী। অন্যদিকে ইয়াসির ছিলেন মূল ভূমিকায়। ৩৯ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৭ রান করেন ইয়াসির। ১৯৫.৬৫ স্ট্রাইক রেটে আকবরের ইনিংসটি ছিল ২৩ বলে ৪৫ রানের। ৩ চার ও ২ ছক্কায় মাঠ মাতান যুব বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। দুইজনের জুটিতে আসে ৫৪ বলে ৬৪ রান।  ৩০ বলে তারা পেয়েছিলেন জুটির পঞ্চাশ রান। পরের পঞ্চাশ পান মাত্র ২৪ বলে। বল হাতে রাজশাহীর হয়ে বল হাতে ৩৮ রানে ৩ উইকেট পান মুকিদুল ইসলাম।

লক্ষ্য তাড়ায় রাজশাহীর দুই ওপেনার ফেরেন দ্রুত। নাজমুল ইসলাম শান্ত (৫) ও আনিসুল ইসলাম ইমন (৬) সাজঘরে ফেরেন। রান খরায় থাকা মোহাম্মদ আশরাফুল ৮ বলে ১ রান করে ফেরেন। চতুর্থ উইকেটে রনি তালুকদার ও ফজলে মাহমুদ ৪৬ বলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন। তাদের জুটিতে রাজশাহী লক্ষ্যে পথে এগিয়ে যাচ্ছিল ভালোভাবেই। কিন্তু মুক্তার আলী বোলিংয়ে এসে সব ওলটপালট করে দেন। ১১তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নেন রনি তালুকদারের উইকেট। ডানহাতি পেসারের স্লোয়ার উইকেটে টেনে আনেন রনি। ২৪ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান। এক ওভার পর তার শিকার মেহেদী। আবার সেই একই স্লোয়ার। টাইমিংয়ে গড়বড় করে মেহেদী (১) শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। নিজের তৃতীয় ওভারে ফজলে মাহমুদের উইকেট নেন মুক্তার আলী। ডানহাতি পেসারকে মিড উইকেট দিয়ে উড়াতে গিয়ে ৫৮ রানে আউট হন ফজলে মাহমুদ। ৪০ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৮ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। নিজের বোলিংয়ে শেষ ওভারে তার শিকার ফরহাদ রেজা। ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মুক্তার মধ্য ওভারে গুড়িয়ে দেয় রাজশাহীর জয়ের স্বপ্ন।বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলাম ৩১ রানে নেন ৩ উইকেট।  ব্যাট হাতে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার পান ইয়াসির আলী রাব্বী।