২০১১ সালের ২ এপ্রিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ২৮ বছর পর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় দিয়েছিল ভারত। ওই সাফল্যের ১০ বছর পূর্তিতে দিনটিতে ফিরে যাচ্ছেন বিশ্বকাপ জয়ী দলটির অনেকেই। শিরোপার লড়াইয়ের ওই মঞ্চে সেদিন ৯৭ রানের সেরা ইনিংস খেলেন গৌতম গম্ভীর। বিশ্বজয়ের পথে তার ওই পারফরম্যান্স কিংবা গোটা টুর্নামেন্টে যুবরাজ সিংয়ের কৃতিত্বের চেয়ে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ফাইনাল জয়ী ছক্কাকে মূল্যায়ন করা হয় বেশি। কিন্তু গম্ভীর দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের এক দশক পূর্তিতে আবারও বললেন, কেবল একটা ছক্কা নয়, ওই আসরে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করতে কৃতিত্ব অনেকের।
ধোনির সঙ্গে গম্ভীরের সম্পর্ক কতটা শীতল তা জানা অনেকেরই। খেলার মাঠেই দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা দেখা গেছে একাধিকবার। গত বছর এপ্রিলেই জনপ্রিয় এক ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট স্বাগতিক ভারতের বিশ্বকাপ জয়ে ধোনিকে একক কৃতিত্ব দিয়েছিল। বিশেষ করে ৪৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অধিনায়কের হাঁকানো ছক্কাকে। অসন্তোষ প্রকাশ করে গম্ভীর লিখেছিলেন, ‘২০১১ বিশ্বকাপ জেতার পেছনে গোটা দেশ, ভারতীয় দল ও সাপোর্ট স্টাফের ভূমিকা ছিল। একটা ছক্কাই শুধুমাত্র তোমাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছে।’
এক বছর পর গম্ভীর জানালেন, কেন ওই বিশ্বকাপ জয়ে অনেকের কৃতিত্ব রয়েছে মনে করেন। গত বছরের ওই টুইট নিয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সাবেক ওপেনার বললেন, ‘আমিও আপনাকে একই প্রশ্ন করছি, আপনিও কি মনে করেন যে শুধু একজন আমাদেরকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছে? যদি একজনই বিশ্বকাপ জেতাতে পারতো, তাহলে তো এখন পর্যন্ত ভারত সব বিশ্বকাপই জিততো। দুর্ভাগ্যবশত, ভারতে শুধু আলাদা কয়েকজনকে পুজা করা হয়। আমি এতে বিশ্বাসী নই। দলগত খেলায় শুধু একজনের কোনও জায়গা নেই।’
গম্ভীর আরও বলেছেন, ‘এটা সবার অবদান সম্পর্কিত। জহির খানের অবদান আপনি ভুলে গেছেন, ফাইনালের প্রথম স্পেলে সে যা করেছিল, যেখানে টানা তিন ওভার মেডেন দিয়েছিল? অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যুবরাজ সিং যা করেছিল, সেটা ভুলে গেছেন? দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শচীন টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরির কথা? আমরা কেন শুধু একটি ছক্কার কথা মনে রাখি? যদি একটি ছয় বিশ্বকাপ জিতিয়ে দিতে পারতো, তাহলে আমি মনে করি যুবরাজ সিং ভারতের হয়ে ছয়টি বিশ্বকাপ জিতেছে, কারণ এক ওভারে সে ছয়টা ছয় মেরেছিল (২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে)।’
আক্ষেপ নিয়ে গম্ভীর আরও বললেন, ‘কেউ যুবরাজের কথা বলে না। ২০০৭ ও ২০১১ সালের বিশ্বকাপ- দুটিতেই সে টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় হয়েছিল। কিন্তু আমরা কেবল একটি ছয়ের কথাই বলে যাচ্ছি।’
নিজের ওই ৯৭ রানের ইনিংসের ব্যাপারেও কথা বলেছেন সাবেক এই ব্যাটসম্যান। ৯ ম্যাচ খেলে চারটি হাফ সেঞ্চুরি ছিল তার। ফাইনালের ওই ইনিংসকেই সবচেয়ে বিশেষ মানতে নারাজ গম্ভীর, ‘আমার কাছে এটা সবচেয়ে স্মরণীয় ইনিংস ছিল না, আমার যে ইনিংস ভারতকে জেতাতে অবদান রাখতো তার সবগুলোই স্মরণীয়। দলের সহায়তায় প্রত্যেকটি রান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যখন বলেন যে আমার ৯৭ রান নিয়ে কথা হয় না, বলবো মিডিয়াই চায় না আলোচনা করতে।’