করোনাভাইরাস মহামারি পরবর্তী সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরে বাংলাদেশ। তারপর থেকে টানা হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ, পরে নিউ জিল্যান্ডে গিয়েও সেই ব্যর্থতার গল্প। সেখানে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টিতে তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে খেলতে হয়েছে। সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের অভাব ভালোই টের পাওয়া গেছে এই সিরিজে। কিন্তু একসময় তো তাদের অবসর নিতেই হবে, তখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবেন কারা? এনিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু দেখছেন না জাতীয় দলের সাবেক তারকা খালেদ মাহমুদ সুজন।
নিউ জিল্যান্ডের পর শ্রীলঙ্কা সফরেও সাকিবকে পাওয়া যাবে না। আইপিএল খেলতে আসন্ন সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। তাকে না পাওয়া দলের জন্য সমস্যা স্বীকার করলেন সুজন। শ্রীলঙ্কা সফরের টিম লিডার নির্বাচিত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘সাকিব নেই, তাই এটা একটা বড় ইস্যু আমাদের জন্য। কারণ সাকিব থাকলে টিমের ব্যালেন্সে সুবিধা হয়। সাকিব থাকা মানে একজন ব্যাটসম্যান ও বাড়তি বোলার পাওয়া এবং সঙ্গে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান ও বোলারকে আমরা খেলাতে পারি। তো সেখানে একটা সমস্যা তো হতেই পারে।’
সাকিবের পরিবর্তে যে দলে সুযোগ পাবে তার ওপর আস্থা রাখা যায় বললেন সাবেক এই অলরাউন্ডার, ‘সাকিব থাকলে অবশ্যই তা আমাদের জন্য বড় পাওয়া যে সে দলে খেলছে। তবে যেহেতু সাকিব খেলছে না তার বিকল্প যেই আছে আমাদের তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং যারাই আছে তারা যে সামর্থ্যবান না তা নয়। তারাও ম্যাচ উইনার, অনেক ম্যাচ তারা ভালো খেলেছে, জিতিয়েছে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটের পঞ্চপাণ্ডব মাশরাফি মুর্তজা, সাকিব, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ। তাদের হাত ধরে গত ১৫ বছরে এসেছে বলার মতো সাফল্য। কিন্তু তাদের তো অবসর নিতেই হবে। তখন কারা হাল ধরবেন? এক সময়ের সেরা ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক, হাবিবুল বাশার সুমন ও নাঈমুর রহমান দুর্জয়দের উদাহরণ টেনে সুজন বলেছেন, ‘তবে আপনি সারাজীবন মাশরাফি, সাকিব, তামিম, রিয়াদ বা মুশফিককে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলবে না। এক সময় মোহাম্মদ রফিক খেলতো, হাবিবুল বাশার সুমন ছিল, নাঈমুর রহমান দুর্জয় খেলেছে, এখন খেলছে না। এক সময় এরাও ছেড়ে যাবে। তাই বলে বাংলাদেশ দল আটকে থাকবে না। চলতে তো হবেই।’
দলে শুধু সিনিয়ররাই দায়িত্ব পালন করবে তা নয়। জুনিয়রদেরও সমান দায়িত্ব আছে মনে করেন সুজন। তিনি বলেছেন, ‘যারা সিনিয়র আছে বা জুনিয়র আছে সবারই দায়িত্ব আছে। এটা সিনিয়র-জুনিয়রের খেলা না। যেহেতু সবাই জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করছে, আমি মনে করি সবারই তাই সমান দায়িত্ব আছে। এটা এমন নয় যে, তামিমের দায়িত্ব ১০০ ভাগ এবং আরেকটা জুনিয়র ক্রিকেটার লিটনের ১০ ভাগ। আমি মনে করি দুজনেরই দায়িত্ব শতভাগ। তাই আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না যে আপনি নতুন না পুরনো। সুতরাং সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। একটা দল ভালো করতে গেলে একজন খেলোয়াড় ম্যাচ জেতাবে এমনটা চিন্তা করা যাবেনা। আমাদের এগারো জনকেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে।’