খেলাধুলা

রানে ফিরতে পুরোনো গুরুর কাছে সৌম্য

ব্যাটে রান নেই। মনোবল নড়বড়ে। আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি। সব মিলিয়ে স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটছেন সৌম্য সরকার। বারবার বিভিন্ন পর্যায়ে দিতে হচ্ছে পরীক্ষা। তাতে ওলটপালট নিজের পরিকল্পনাও। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাঁচ বছর কেটে গেলেও নিজের অবস্থান পাকাপাকি করতে পারেননি। পারেননি নামের প্রতি সুবিচার করতে। সামর্থ্যের জানান দিতে।

জাতীয় দলের আসা-যাওয়ার মধ্যেই থাকেন তিনি। পায়ের নিচের মাটি সরে যাওয়ার আগে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার তাগিদ অনুভব করছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এজন্য বয়সভিত্তিক কোচের দ্বারস্থ হলেন সৌম্য। যেন সব কিছু নতুন করে শুরু করতে চান।

মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) বিসিবির কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের সঙ্গে ব্যাটিং নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। একাডেমি মাঠে ঘণ্টাখানেক কাজ করেছেন শরীরের ভারসাম্য নিয়ে। শট খেলতে গিয়ে ভারসাম্য হারাচ্ছিলেন এ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। তাতে টাইমিংয়ে গড়বড় হচ্ছিলো। উইকেট ছুড়ে আসছিলেন।

শিষ্যর সমস্যা ধরতে পেরে সেগুলো শুধরানোর কাজ করে যাচ্ছেন মিজানুর রহমান। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘সৌম্যদের যে ব্যাচটা... অনূর্ধ্ব-১৭ থেকে আমি ওদের কোচ ছিলাম। ওরা মনে করে যে পুরোনো স্যারদের কাছে ফিরে যাই। স্যাররা তো শুরু থেকে আমাদের দেখেছে, এখন কী অবস্থায় আছি...। সে আস্থা থেকে হয়তো বলছে স্যার একটু দেখেন।’

মিজানুর আরও যোগ করেছেন, ‘গতকাল কিছুক্ষণ ছিলাম, আজও কাজ করেছি। সৌম্য অনেকদিন রান করতে পারছে না। কিছুটা তো হতাশ। যেহেতু আমাদের দিয়ে হাতেখড়ি, কিছু দায়িত্ব থাকে তাদের ওপর। আমরা যদি কিছুটা হলেও তাদের ফর্মে ফিরিয়ে আনতে পারি, সেটা আমাদের জন্যও ভালো লাগবে, ওদের জন্যও।’

শিষ্যর কোথায় সমস্যা হচ্ছে তা জানাতে গিয়ে বিসিবির এ কোচ বলেন, ‘অল্প কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা তো হয়েছেই, নয়তো রান করতে পারতো। সৌম্য বুঝতে পেরেছে যে ওর ব্যাটিংয়ে ভারসাম্যে কিছুটা সমস্যা ছিল। ওটা নিয়েই কাজ করা হচ্ছে, অন্য সব ঠিকঠাক আছে।’

নিউ জিল্যান্ড সফরে তিন ওয়ানডেতে মাত্র ৩৩ রান ও তিন টি-টোয়েন্টি করেছিলেন ৬৬ রান। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে তিন ইনিংসে রান মাত্র ২০। টেস্ট বা ওয়ানডে দুই ফরম্যাটের ক্যারিয়ারে ছোট বড় অর্জন থাকলেও ধারাবাহিক নন সৌম্য। ১৬ টেস্টে ২৭.৭০ গড়ে এক সেঞ্চুরি ও চার হাফ সেঞ্চুরিতে তার রান ৮৩১। ৬১ ওয়ানডেতে ৩২.১৪ গড়ে দুই সেঞ্চুরি ও ১১ হাফ সেঞ্চুরিতে রান ১৭৬৮।  

শিষ্যদের অফফর্ম ভাবায় গুরুদেরও। তাইতো তাদের নিয়ে কাজ করার বাড়তি তাগিদ অনুভব করেন মিজানুরের মতো কোচরা, ‘যারা আমাদের হাত দিয়ে উঠে এসেছে, তাদের আমরা ফলো করার চেষ্টা করি। যাদের গড়ে ওঠার পেছনে আমাদের সামান্যতম অবদানও আছে, এখন জাতীয় দলে খেলে তবুও আমরা তাদের ফলো করি যে কী রকম খেলছে। ভালো খেললে ভালো লাগে, অফ ফর্মে থাকলে কিছুটা তো খারাপ লাগেই।’