সুরাঙ্গা লাকমলের বলটা বুঝে উঠতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তিগত ইনিংসের প্রথম বল খেলতে গিয়ে হকচকিয়ে উঠলেন। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে বোলিং করেছিলেন ডানহাতি পেসার। ফিফথ স্টাম্প বরাবর লাইন থেকে ইনসুইং করে বল মিডল অ্যান্ড লেগ স্টাম্পের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় থাই প্যাডে আলতো ছোঁয়া পায়। শুরুতেই এমন আক্রমণ! অফফর্মে থাকা শান্তর মাথা ভাঁজ!
এরপর আরও কয়েকটা বলে নড়বড়ে তিনি। কিন্তু সপ্তম ওভারের প্রথম বলের পর শান্ত খোলস থেকে বেরিয়ে এলেন। লাকমলকে কপি বুক স্টাইলে কভার ড্রাইভে চার মেরে খুললেন রানের খাতা। বাকিটা পথ শান্ত কাটিয়ে দিলেন স্বাচ্ছন্দ্যে। নিজের সামর্থের জানান দিয়ে পৌঁছে গেলেন তিন অঙ্কে। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন শান্ত।
অফস্পিনার ধনঞ্জয়ার বল কভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ৯৮ থেকে ১০২ রানে পৌঁছান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সাইফ হাসান দ্বিতীয় ওভারে সাজঘরে ফেরার পর তিনে ব্যাটিংয়ে আসেন বাঁহাতি পেসার। ২২ গজে শুরুতে ভুগলেও থিতু হওয়ার পর উড়েছেন শান্ত। ১২০ বলে পেয়েছিলেন ফিফটি। সেঞ্চুরি ছুঁতে খেলেছেন আরও ১১৫ বল।
সেশন বাই সেশন ব্যাটিং করেছেন। মনোবল হারাননি। ধৈর্যর পরীক্ষা দিয়েছেন। তামিমের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটের ১৪৪ রানের জুটিতে তার অবদান ৫১ রান। এরপর মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে পূরণ করেছেন সেঞ্চুরি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি।
তামিম ৯০ রানে সাজঘরে ফিরেছেন উইকেট উপহার দিয়ে। শান্ত সেই ভুল করেননি। নার্ভাস নাইন্টিজে ছিলেন বাড়তি সতর্ক। ১৯৭ বলে পৌঁছে গিয়েছিলেন নব্বইয়ের ঘরে। পরের ১০ রান পেতে খেলেছেন ৩৮ বল। বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র একটি।
এর আগে ৭ টেস্টে ১২ ইনিংসে তার রান ছিল ৩৩৫। এবার পাল্লেকেলেতে অভিষেক সেঞ্চুরিতে উদ্ভাসিত হলেন তিনি। স্কুল ক্রিকেটে রেকর্ড গড়ে আলোয় এসেছিলেন শান্ত। পরে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলের ধাপ পেরিয় শান্ত পৌঁছান জাতীয় দলে। ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটারকে সুযোগ দিলেও জায়গা পাকাপাকি করতে পারেননি। তবে তার মধ্যে বরাবরই দারুণ সম্ভাবনা দেখেন নির্বাচকরা। সেই আস্থার প্রতিদান এবার সেঞ্চুরি দিয়ে দিলেন শান্ত।