খেলাধুলা

ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়া কতটা কঠিন?

স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারি জেঁকে বসেছে ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে। প্রতিদিন ভারতজুড়ে মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ, শনাক্ত হচ্ছেন লাখ লাখ। করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভেঙে পড়েছে জীবনযাত্রা। এই ভয়াবহতা কতদিন থাকবে তা কারও জানা নেই। এমন পরিস্থিতিতে ঝুলে আছে অক্টোবর-নভেম্বরে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত।

মহামারির তাণ্ডবের মধ্যে আইপিএল আয়োজন করে বিসিসিআই প্রমাণ করতে চেয়েছিল, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজন করবে। সবচেয়ে সুরক্ষিত বলয় তৈরি করে তারা ৯ এপ্রিল থেকে টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছিল, যে মাস থেকে শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় ঢেউ। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, ছয় ভেন্যুর চারটিতে ২৯টি ম্যাচও খেলা হয়ে গিয়েছিল। আহমেদাবাদ ও দিল্লিতে বিসিসিআইর নিশ্ছিদ্র সুরক্ষা বলয় ভেঙে দলের মধ্যে ঢুকে পড়ে প্রাণঘাতী ভাইরাস। ৪ মে বাধ্য হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত করা হয় আইপিএল।

বাকি ৩১ ম্যাচ কবে হবে, কোথায় হবে- সেই প্রশ্নের উত্তর অজানা। কিন্তু আইপিএল সুরক্ষিত রাখার ব্যর্থতা যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে বড় একটা ধাক্কা দিয়ে গেলো তা অস্বীকার করার উপায় নেই। আইপিএল স্থগিত হওয়ার দুই-একদিন আগেই বিসিসিআই নিযুক্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর ধীরাজ মালহোত্রা জানান, একেবারেই না পেরে উঠলে তারা বিকল্প ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বিবেচনায় রেখেছে।

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান মাইক হাসির মতে গত বছরের স্থগিত বিশ্বকাপটি এই বছর ভারতে হওয়া খুবই কঠিন। আইপিএল স্থগিতের পরপর করোনায় আক্রান্ত হওয়া চেন্নাই সুপার কিংসের এই ব্যাটিং কোচ দেশে ফিরে এমন আভাস দিলেন। সিডনিতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা হাসি বলেছেন, ‘আমার দৃষ্টিতে ভারতে এই টুর্নামেন্ট খেলা হতে যাচ্ছে খুবই কঠিন।’

হাসির মতে, আইপিএল হয়েছিল আটটি দল নিয়ে। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে এর দ্বিগুণ দলের অংশগ্রহণে, ১৬টি। ম্যাচ হবে ৯টি শহরজুড়ে। করোনার এই পরিস্থিতিতে বিদেশি দলের ক্রিকেট বোর্ডগুলো স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এছাড়া বিদেশি ধারাভাষ্যকার, টিভি ক্রুদের কপালেও পড়ছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, করোনা প্রটোকল মানার বিষয় তো আছেই। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ঘিরে অনিশ্চয়তার দোলাচলে আয়োজক ভারত ও অংশ নিতে যাওয়া দেশগুলো।

অবশ্য বিসিসিআই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে জুনের শুরুতেই। ২৯ মে আয়োজক ভেন্যুর রাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বোর্ড একটি বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছে। সবশেষ পরিস্থিতি জেনেশুনে তারা ১ জুন আইসিসির সঙ্গে বৈঠক করতে চায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্মকর্তা বলেছেন, ‘বাস্তবিকভাবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, আমরা সেটা জানি। কিন্তু বিশ্বকাপের জন্য এখনও সময় আছে। টুর্নামেন্ট ভারতে রাখার ব্যাপারটি আমরা এখনই বন্ধ করে দিচ্ছি না।’

ভারত টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে না পারলেও আয়োজকের ভূমিকায় থাকতে চায় তারাই। মানে যেভাবে গত বছরের আইপিএল তারা সফলভাবে শেষ করেছিল আমিরাতে। তবে এখন তাদের একটাই চাওয়া- দূর হোক করোনা, মুছে যাক সব অনিশ্চয়তা।