খেলাধুলা

সাকিবের ফেরার ম্যাচ রাঙালেন ইয়াসির, তারেক

তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব আল হাসান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ১১তম রাউন্ডে নেমেছিলেন। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে মোহামেডানের তারকা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও নিজের প্রথম ওভারে উইকেট তুলে নেন। তাতে অবশ্য কোনও ধরনের সমস্যার মুখে পড়েননি মাহমুদউল্লাহরা। সাকিবের ফেরার ম্যাচ রাঙালেন গাজী গ্রুপের ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলী ও বোলার মহিউদ্দিন তারেক।

গাজীকে ১৫০ রানের টার্গেট দিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে সাকিব বোল্ড করেন ওপেনার মাহেদী হাসানকে (১৫)। ওই ওভার শেষে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল ঘণ্টাখানেক। যখন ম্যাচ শুরু হয়, তখন গাজীর লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪ ওভারে ১১৫ রান। ইয়াসিরের ব্যাটিং ঝড়ে সেই লক্ষ্য ১১.১ ওভারে ৩ উইকেটে ছুঁয়ে ফেলে তারা। ৭ উইকেটে ম্যাচটি জিতেছেন মাহমুদউল্লাহরা।

বৃষ্টিতে খেলা বন্ধের আগে গাজী গ্রুপের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ২৬ রান। ম্যাচ ফের শুরু হতেই সৌম্য সরকার (১৪) মাহমুদুল হাসানের কাছে বোল্ড হন। তারপর মুমিনুল হককে সঙ্গে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে থাকেন ইয়াসির। লক্ষ্য থেকে ১২ রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি হাফ সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে। ২৫ বলে চারটি চার ও দুটি ছয়ে ৪৫ রান করেন ইয়াসির।

জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা মুমিনুল সারেন মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে। দুজনের ১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লক্ষ্য ছোঁয় গাজী গ্রুপ। মুমিনুল ২২ বলে ২৮ ও মাহমুদউল্লাহ ৪ বলে ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ২০ ওভারে মোহামেডানের রান ৯ উইকেটে ১৪৯। শুভাগত হোমের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ দিকে এলোমেলো হয়ে যায় গাজী গ্রুপের বোলিং। ১৪তম ওভারে এ ব্যাটসম্যান যখন ব্যাটিংয়ে আসেন, তখন মোহামেডানের রান ৫ উইকেটে ৯১। এরপর ২০ বলে ৪২ রানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শুভাগত হিসাবনিকাশ পাল্টে দেন। তার ঝড়ো ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ২ ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ২২১.০৫। 

মাহমুদুল হাসান লিমন (২) দ্বিতীয় ওভারে পেসার তারেকের বলে ফিরলে তিনে ব্যাটিংয়ে আসেন সাকিব। নিজের খেলা দ্বিতীয় বল অন সাইডে আলতো টোকা দিয়ে রানের খাতা খোলেন সাকিব। শুরুতে ২ ছক্কা ও ১ চারে ভালো শুরু করা আব্দুল মজিদ ইনিংস বড় করতে পারেননি। চতুর্থ ওভারে মাহমুদউল্লাহকে ছক্কা উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ২০ রানে।

হাসেনি সাকিবের ব্যাট। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফিরে ১৬ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন। তরুণ পেসার তারেকের বল জায়গা করে খেলতে গিয়ে মিড অফে নাসুমের হাতে ক্যাচ দেন।

ইরফান শুক্কুর শুরুটা ভালো করেছিলেন। ডিপ পয়েন্ট দিয়ে মুগ্ধকে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলে লং লেগ দিয়ে আরেকটি চার হাঁকান। মোহামেডানের হয়ে লিগে সর্বোচ্চ রান করা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের থেকে বড় প্রত্যাশায় ছিল দল। কিন্তু তাকে থামানোর উত্তর জানা ছিল মাহমুদউল্লাহর। ডানহাতি অফস্পিনারের প্রায় ইয়র্কার বল মিস করে এলবিডব্লিউ হন ২০ রানে।

ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা শামসুর রহমান আজ ১৯ রানের বেশি করতে পারেননি। নাসুমের বলে ডানহাতি ব্যাটসম্যান ক্যাচ দেন আরিফুলের হাতে। এগিয়ে এসে মিড অনে ক্যাচ দেন তিনি।

সাতে নামা শুভাগত ক্রিজে এসে পাল্টে দেন মোহামেডানের ব্যাটিং চিত্র। প্রতি আক্রমণে গিয়ে রানের গতি বাড়ান এ ব্যাটসম্যান। নাসুমকে পয়েন্ট ও গালির মাঝ গিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে রানের খাতা খুলেন তিনি। পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহকেও একই শটে পয়েন্ট দিয়ে চার হাঁকান। আরেকটি ডিপ কভার দিয়ে।

১৬তম ওভারে এসে তার ব্যাট থেকে আসে দুই ছক্কা। বাঁহাতি স্পিনার মুমিনুল লিগে প্রথমবার বল করতে এসে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা হজম করেন। ওই ওভারের পঞ্চম বলে এগিয়ে এসে আবার হাওয়ায় ভাসিয়ে বল সীমানার বাইরে। আরেকটি ছক্কা। পেসার তারেককেও থিতু হতে দেননি। তার লেন্থ বল কভারের দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান। এরপর ফুলটস বলের ঠিকানাও একই জায়গায়।

১৯তম ওভারে তাকে সাজঘরের পথ দেখান তারেক। এগিয়ে এসে তারেকের হাফ ভলি বল খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন। সেখানেই থামে তার ব্যাটিং ঝড়। এরপর লেজের ব্যাটসম্যানদের অবদানে মোহামেডানের রান ১৪৯। ইনিংসের শেষ বলে অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ডের জন্য আউট হয়েছেন ইয়াসিন আরাফাত মিশু।

বল হাতে গাজী গ্রুপের হয়ে তারেক ২৯ রানে ৪ উইকেট পেয়েছেন।