খেলাধুলা

ঐক্যের ডাক মুমিনুলের, প্রত্যাশিত জয়ে ঘুচাতে চান অপ্রাপ্তি 

এক মধুর সমস্যায় মুমিনুল হক। মাঠে নামার আগে তার স্কোয়াড থেকে কেউ না কেউ সরে যান! দলপতি হওয়ার পর সেরা স্কোয়াড পাননি তিনি। আবার পেলেও মাঝপথে ছিটকে যাওয়ার ঘটনাও আছে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফল থেকে অনেক দূরে তার ও দলের অবস্থান। পারফরম্যান্স না থাকায় অধিনায়ক হিসেবেও বেশ সমালোচিত তিনি। এনিয়ে অনেক আক্ষেপ তার। 

এবার জিম্বাবুয়ে সফরে দেশসেরা চার তারকা তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে একসঙ্গে পেয়েছিলেন। কিন্তু হারারেতে মাঠে নামার আগে তামিমকে নিয়ে সংশয়। শুধু সংশয়ই নয়, ডানপায়ের হাঁটুর চোটে ভোগা বাঁহাতি ওপেনারকে বিশ্রামে রাখতে পারে দল। সেক্ষেত্রে বুধবার (৭ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া টেস্টে তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হচ্ছে মুমিনুলকে।

মুমিনুল পুরোপুরি স্বস্তিতে যে নেই, তা বোঝা গেলো কথায়, ‘আপনাদের জন্য তামিম ভাই কেমন গুরুত্বপূর্ণ তা জানি না, তবে আমার ও বাংলাদেশ দলের জন্য তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাকে পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।’ গণমাধ্যমকে টেস্টের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা জানালেও প্রস্তুতিতে গিয়েই বুঝে গেছেন তামিমের খেলা হচ্ছে না। গোটা দল অনুশীলন করলেও তামিম ব্যাট ছুঁয়ে দেখেননি!

৮ বছর পর বাংলাদেশ হারারেতে টেস্ট খেলতে নামছে দুই তরুণ সাদমান ও সাইফকে নিয়ে। তামিমকে হারানোর অস্বস্তির দিন মুমিনুলের স্বস্তি, ফুরফুরে সাকিব দলে ফিরেছেন। রয়েছেন দারুণ ফর্মে। প্রস্তুতি ম্যাচে অপরাজিত ৭৪ ও ৩ উইকেট তো বলছে বাঁহাতি স্পিনার পারফরম্যান্সের ক্ষুধায় মগ্ন।

তবে দলকে সাফল্য দেওয়ার কাজটা সাকিবের একার নয়। বাকিদের নিয়ে জিম্বাবুয়েতে বিজয়ের পতাকা ওড়াতে চান। এজন্য ঐক্যর ডাকও দিলেন টেস্ট দলপতি, টিম ওয়ার্কই পারবে একমাত্র দলকে জয়ের স্বাদ দিতে। ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে না, যে কোনও দলের সঙ্গেই যখন অ্যাওয়েতে খেলবো তখন ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন দিকই ভালো করতে হয়, ফোকাস রাখতে হয়। সেই সঙ্গে দলের ঐক্যটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এদিকটায় ভালো করলে আশা করি টেস্ট ম্যাচটা জিততে পারবো।’

জিম্বাবুয়েতে এর আগে সাত টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের রেকর্ড ভালো নয়। একটি করে জয় ও ড্র। বাকি পাঁচটিতেই হার। আফ্রিকার দক্ষিণের দেশটি থেকে কখনও টেস্ট সিরিজ জিততেও পারেনি। এবার এক টেস্ট জিততে পারলেই সিরিজ জিততে পারবে বাংলাদেশ। মুমিনুলের নজর সেদিকেই।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পালে যে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছিল, তার শুরুটা হয়েছিল জিম্বাবুয়েকে দিয়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ তরতর করে এগিয়ে গেছে। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবধানও স্পষ্ট হয়েছে। তবে লজ্জাও দিয়েছে তারা। সিলেটে অভিষেক ম্যাচেই বাংলাদেশকে হারিয়েছিল। সেই ম্যাচের তিক্ততা মুমিনুল ও তার দল ভোলেননি নিশ্চয়ই। এজন্য বাড়তি সতর্কও আছে দল।

দলে সাকিব ফেরায় টিম কম্বিনেশনে কিছুটা পরিবর্তন আসছে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে সবশেষ টেস্টে ৬ ব্যাটসম্যান ও ৫ বোলার নিয়ে খেলেছিল বাংলাদেশ। এবার ৭ ব্যাটসম্যান, ৪ বোলার নিয়ে খেলবে দল। ফলে তামিম না থাকলেও ব্যাটিং অর্ডার আরেকটু লম্বা হচ্ছে। ১৬ মাস পর টেস্ট স্কোয়াডে ফেরা মাহমুদউল্লাহ ফিরছেন একাদশেও। তাকে নিয়েই বাংলাদেশ হারারেতে মাঠে নামবে।

অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর মুমিনুল আট ম্যাচে মাত্র একটিতে জয়ের মুখ দেখেছেন তিনি, সেটা ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এবার তাদের মাটিতে তাদের হারাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদি করতে পারেন তাহলে নিশ্চয়ই অধিনায়ক হিসেবে নাঈমুর রহমান দুর্জয়, হাবিবুল বাশার, সাকিব ও মুশফিককে ছাড়িয়ে যাবেন মুমিনুল। অধিনায়ক হিসেবে তারা তো জিম্বাবুয়ের মাটিতে কখনও সিরিজ জিততে পারেননি!