খেলাধুলা

‘এখন মনে হচ্ছে এমন করা ঠিক হয়নি’

৩ আগস্টের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো জয় ছিল না। অথচ এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই দলটির বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় চারটি। ৫ ম্যাচের সিরিজে অজিদের উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ ব্যবধানে।

অজিবধের নেপথ্যে ছিল বাংলাদেশের দুর্দান্ত বোলিং। শের-ই বাংলার স্লো পিচে স্পিনারদের পাশাপাশি বড় ভূমিকা রেখেছেন পেসাররাও। বিশেষ করে মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। দুজন মিলে অস্ট্রেলিয়ার ১৪টি উইকেট নিয়েছেন। অভিজ্ঞ মোস্তাফিজের সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন যুব বিশ্বকাপ জয়ী পেসার শরিফুল। ৪ ম্যাচে ওভারপ্রতি ৬.৩৮ রান দিয়ে এই পেসারের শিকার ৭ উইকেট।

জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করে অস্ট্রেলিয়ার বায়োবাবলে ঢুকেছিলেন ক্রিকেটাররা। দীর্ঘদিন ছিলেন পরিবারের বাইরে। ৯ আগস্ট সিরিজ শেষে হোটেলে রাত কাটিয়ে পরিবারের কাছে ছুটতে অপেক্ষা করেননি শরিফুল। ফ্লাইট ধরে চলে গেছেন মায়ের কাছে। বাড়িতে গিয়ে দেখেন লঙ্ককাণ্ড! আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশি ছুটে এসেছেন তাকে দেখতে। ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে এ পেসারের সঙ্গে রাইজিংবিডির কথা হয়,

 

খুব ব্যস্ত সময় যাচ্ছে মনে হচ্ছে?

শরিফুল: এখনো আমার বাসায় মেহমান আছে। আমি আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্য বাইরে এসেছি। সকালের ফ্লাইটে বাড়িতে এসেছি। এরপর আত্মীয়রা আসছেন, আমাকে দেখার জন্য, কথা বলার জন্য। উনাদেরকে সময় দিচ্ছি। সবকিছু মিলিয়ে অনেক দিন বায়োবাবলে ছিলাম, ঈদ করতে পারিনি। এখন সবাইকে দেখে স্বস্তি লাগছে। আর কিছুটা ব্যস্ত সময়তো যাবেই। একের পর এক ফোন আসছে, না ধরার চেষ্টা করছি। এখন পরিবার নিয়ে থাকার সময়।

জাতীয় দলের ছোট্ট ক্যারিয়ারে আপনার সবচেয়ে বড় সিরিজ ছিল। কেমন উপভোগ করেছেন?

শরিফুল: আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো উপভোগ করছি। কারণ ওদের (অস্ট্রেলিয়া) সাথে আমাদের কখনো সিরিজ হয়নি। আর ওদের সাথে আমরা কখনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচও জিতিনি। ভালো ব্যবধানে জিতেছি বলে ভালো লাগছে। যতটুক পেয়েছি খুশি। পরে যতগুলো সিরিজ আছে নিজের ভুল শুধরানোর চেষ্টা করবো। সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে।

মোস্তাফিজের সঙ্গে জুটি, কেমন ছিল?

শরিফুল:  উনি অনুশীলনেও আমাকে অনেক সময় দেন। বিভিন্ন বিষয় বলে দেন। কখন কীভাবে বল করতে হবে সেটা বুঝিয়ে দেন। উনি আমাকে খুব স্নেহের সঙ্গে সব বুঝিয়ে দেন। খুব ভালো উপভোগ করছি উনার সঙ্গ। নেটে যখন বোলিং করি সব সময় মোস্তাফিজ ভাইকে বলি, বল কীভাবে ধরে, কিভাবে ছাড়ে, কতটুক পেসার দিতে হয়, সব শিখছি। আশা করি ভালো হবে, ভবিষ্যতে কাজে দেবে।

বোলিং কোচ গিবসনের সঙ্গে সেদিন খুব খুনসুটিতে মেতে ছিলেন। তার সঙ্গে কেমন কাজ হচ্ছে?

শরিফুল: এখন পর্যন্ত গিবসনের কাজে আমি সন্তষ্ট। উনার অধীনে আমার অনেক উন্নতি হয়েছে। ওনার সাথে কাজ করে ভালো লাগছে। আমি শুরু থেকে পেয়েছি তাকে। দিনকে দিন উন্নতি হচ্ছে। নতুন বিষয় শিখছি। মোস্তাফিজ ভাই আর আমি ওনার থেকে লাইন লেন্থ গতি বাড়ানোর কাজ করছি। কোনো কিছু ভুল হলে ডেকে নিয়ে দেখিয়ে দেন, বুঝিয়ে দেন। এগুলা আমার ভালো লাগে। সবকিছু মিলিয়ে আমি উনার ওপর পুরোপুরি আস্থা পাচ্ছি।

তৃতীয় ম্যাচে মার্শের উইকেট নিয়ে আপনার উদযাপন ছিল দেখার মতো। আইসিসির চোখে অবশ্য আপনি অক্রিকেটীয় আচরণ করেছেন। এজন্য শাস্তিও পেয়েছেন…

শরিফুল: আসলে ওই সময় উইকেট প্রয়োজন ছিল। আর মার্শ গুরুত্বপূর্ণ উইকেট ছিল। এমন উইকেট পেলে মনে আনন্দ জাগে, তখন টার্নিং পয়েন্টও ছিল। উইকেট পাওয়ার পর আবেগ তৈরি হয়েছে। এটা ধরে রাখতে পারি। আমি নিজেকে শান্ত রাখতে পারিনি। মার্শের উইকেট নেওয়ার পর তাই এমন নেচেছি, উদযাপন করেছি। পরবর্তীতে মনে হয়েছে এমন করা ঠিক হয়নি। এ জন্য একটা ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছি (হাসি) ।