খেলাধুলা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোভিড নিয়ে সচরাচর জিজ্ঞাসা ও উত্তর

করোনায় বিপর্যস্ত ভারত থেকে সরিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নেওয়া হয়েছে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। যেখানে প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ তৈরি হয়েছে টিকাগ্রহণ কর্মসূচির মাধ্যমে। অধিকাংশ জনগণের টিকা নেওয়া নিশ্চিত করা দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষসারিতে তারা। সুপার টুয়েলভের সবগুলো ম্যাচ আয়োজন করতে যাওয়া আমিরাতের ৯৪ শতাংশ জনগণ অন্তত এক ডোজ টিকা নিয়েছেন।

করোনা নিয়ে তাই খুব বেশি দুশ্চিন্তা না করলেও চলে। কিন্তু আইসিসির ইন্টেগ্রিটি অ্যান্ড বায়োসেফটি প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল জানালেন, টুর্নামেন্ট করোনামুক্ত রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। দুই দেশের চারটি ভেন্যুতে বহুজাতিক এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে শক্ত হাতে কাজ করছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা।

করোনা মোকাবিলায় আইসিসির পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার মিডিয়া ব্রিফিংয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন মার্শাল।

বায়ো-বাবলের মধ্যে কেউ পজিটিভ হলে কিংবা উপসর্গ দেখা দিলে কী হবে?

যদি কেউ করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ হন, এমনকি যদি কারো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে তাকে ১০ দিন আইসোলেশনে রাখা হবে।

ক্লোজ ও ক্যাজুয়াল কন্টাক্টের ক্ষেত্রে কী হবে?

কোনো ব্যক্তি যদি মাস্ক না পরে আক্রান্ত ব্যক্তির দুই মিটারের কাছাকাছি থেকে ১৫ মিনিট সময় কাটান এবং সেটা যদি আক্রান্তের টেস্ট বা উপসর্গ ধরার পড়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে হয়, তাহলে সেটাকে বোঝানো হয় ক্লোজ কন্টাক্ট। মার্শাল বলেছেন, এই ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে ছয় দিনের আইসোলেশনে যেতে হবে।

আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে থাকলেও মাস্ক পরে থাকলে তা হচ্ছে ক্যাজুয়াল কন্টাক্ট। সেক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার করোনা পরীক্ষা হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যাম্পে কেউ পজিটিভ হলে কেউ যদি দল মাঠে নামতে না চায় কিংবা উদ্বিগ্ন থাকে তখন?

মার্শালের বক্তব্য অনুযায়ী, এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে তা দেখভাল করবে বায়োসেফটি সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ (বিএসএজি), যার নেতৃত্বে আছেন ড. গুরজিত বি। আরও তিনজন বিশেষজ্ঞ আছেন এই দলে।

তারাই অংশগ্রহণকারী দলের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করার দায়িত্ব নিবে। তারাই বোঝাবে যে কতটা ঝুঁকি আছে।

‘আমরা অন্য খেলাধুলা থেকে দেখেছি, টোকিও অলিম্পিকের দৃষ্টান্ত দেওয়া যেতে পারে। সেখানে আউটডোরে প্রতিযোগীদের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাই ক্রিকেট মাঠের আউটডোরে আরেকটি দলের বিপক্ষে খেলা অন্যদের জন্য খুবই কম ঝুঁকির।’

স্ক্যান বা চিকিৎসার জন্য কোনো খেলোয়াড়ের বায়ো-বাবল ছাড়ার প্রয়োজন পড়লে?

খেলোয়াড়দের ‍সুরক্ষায় ডেডিকেটেড বায়োসিকিউর হাসপাতাল ও বিশেষ প্রটোকলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বায়ো-বাবল লংঘন হলে কোনো শাস্তি?

এখন পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট গাইডলাইন তৈরি হয়নি। কিন্তু মার্শাল জানান, টিম ম্যানেজমেন্টকে বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো বিধি লংঘন দেখতে চাই না। আমরা মনেও করি না তেমনটা হবে। আমরা মনে করি তারা জানে এটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও আমরা প্রত্যাশা করব যেন টিম ম্যানেজমেন্ট ও স্কোয়াড কঠোরভাবে বিধি মেনে চলে। যদি তারা বিধি বোঝে এবং শৃঙ্খল মেনে চলে তাহলেই কোনো সমস্যা হবে না।’

টুর্নামেন্টে বাবলে পরিবারকে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে?

‘ছোট্ট পরিবার, মানে অল্প কয়েকজন’, বললেন মার্শাল। কিন্তু তাদেরও বাবলের মধ্যে একই প্রটোকল মেনে চলতে হবে। তিনি বলেন, ‘পরিবারের ঘনিষ্ঠ কেউ সঙ্গে থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে চাপ কম হয় এবং সময়টা উপভোগ্য হয়ে ওঠে। আমরা এটা অন্য ইভেন্টেও দেখেছি, আইপিএলের কথাই ধরুন।’

মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলায় কাউন্সেলর থাকবে?

টুর্নামেন্ট জুড়ে আইসিসির একজন মনোবিদ থাকবেন সবসময়।

দর্শক-সমর্থকদের কি টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে?

মার্শাল জানান, ক্রিকেট ম্যাচের মতো গণইভেন্টে স্থানীয় সরকারের নিয়ম মানতে হবে ভক্তদের। ওমান ও আবুধাবিতে ভক্তদের দুটি ডোজ টিকা নিয়ে স্টেডিয়ামে আসতে হবে, দুবাই ও শারজায় তা প্রয়োজন নেই।

ভক্তদের কি মাস্ক পরতে হবে?

মার্শাল জানান, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী ভক্তদের পরে থাকতে হবে মাস্ক।

ভক্তরা কি খেলোয়াড়দের সঙ্গে মিশতে পারবেন?

মার্শাল বলেছেন, খেলোয়াড়দের আলাদা রাখা হবে। ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি, শারীরিকভাবে মিশতে পারবেন না তারা।