খেলাধুলা

ব্যাটিং অর্ডার এবং ডিসঅর্ডার

হঠাৎ ওমানের বিরুদ্ধে ব্যাটিং অর্ডার বদলে গেল বাংলাদেশের। কেন এবং কী কারণে? সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে দেখে নেই এই ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারে কী কী বদল আনা হয়েছিল।

সাকিবের জায়গায় তিন নম্বরে নামলেন মেহেদী হাসান। সাকিব ব্যাটিং করতে নামলেন চার নম্বরে। মুশফিকের পাঁচ নম্বরের ব্যাটিং অর্ডারে এলেন নুরুল হাসান সোহান।

ভাবছেন বিস্ময়ের শেষ। নাহ, আরো আছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও তার ছয় নম্বর পজিশনের ব্যাটিং অর্ডারের জায়গাটা ছাড়লেন তরুণ আফিফের কাছে।

ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ উইকেটে এলেন সাত নম্বরে। মুশফিক ব্যাট করতে নামলেন আট নম্বরে।

- দলের ব্যাটিং অর্ডারে কেন এই বিপ্লব?

ওমান কি এতই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ যে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে নিজেদের পরীক্ষিত সব ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং অর্ডার বদলে দিতে হবে? নাকি টিম ম্যানেজমেন্ট অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের চেয়ে তরুণদের কব্জি এবং ব্যাটিং বাহুর ওপরই নির্ভরতা বেশি খুঁজে পেতে চেয়েছে?

ওমান ম্যাচে নামার আগের দিন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারা ম্যাচের কাঁটাছেড়া করতে গিয়ে যে ফর্মুলা দিয়েছিলেন, মূলত ব্যাটিং অর্ডারে বদল তারই ফসল।

স্কটল্যান্ড ম্যাচে সাকিব, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহর ‘টুকটুকি ব্যাটিং’ তার বিরক্তি কুড়িয়েছে সেটা তিনি অস্পষ্ট রাখেননি। যে দলের নয় নম্বরে ব্যাট করার মতো আছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সেই দল কেন শুরু এবং মাঝে এমন ডিফেন্সিভ ব্যাটিং করবে? উইকেট হারানোর ভয় কিসে? তুমি না পারলে পরে তো আরো অনেকে রয়েছে। তাদের সুযোগ দিতে হবে। ব্যাটিং শক্তি জমিয়ে রেখে লাভ কী? কাজে লাগাও।

সেই চিন্তা থেকেই ওমান ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার বদলে ফেলল বাংলাদেশ। তবে সমস্যা হলো বদলে ফেলা সেই ব্যাটিং অর্ডারে যারা নতুন এলেন তারা সেই সুবিধা করতে পারলেন না। আর পুরোনো চিরপরিচিত ব্যাটিং অর্ডার হারানো মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ আরও নিস্প্রভ হয়ে পড়লেন।

অতএব এই ব্যাটিং অর্ডারে বদল এক অর্থে ব্যর্থ বিপ্লব!

তবে ক্রিকেটে ফ্লেক্সিবিলিটি বা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণও যে আবশ্যিক একটা শর্ত সেটাও মানতে হবে। ব্যাটিং অর্ডারকে কোনো ব্যাটসম্যান যদি নিজের জায়গীর মনে রাখেন সেটাও যুক্তিযুক্ত নয়।

পরিস্থিতির দাবি মেটানোর মধ্যেই তো ক্রিকেটে দলীয় সার্থকতা। কিন্তু এক ম্যাচের হারে সেরা এবং পরীক্ষিত খেলোয়াড়ের ওপর থেকে আকস্মিকভাবে আস্থা হারানো ভালো কোনো ফল বয়ে আনতে পারে না।

‘ইউর বেস্ট ব্যাটসম্যান শুড কাম ফার্স্ট’ ব্যাটিং অর্ডার বিষয়ে এটি ক্রিকেটের অনেক পুরানো এবং পরীক্ষিত প্রবাদ। সেরাদের যত বেশি লম্বা সময় খেলার সুযোগ দেবেন তাতে দলেরই মঙ্গল।

মেসি-রোনালদো পুরো নব্বই মিনিটের খেলোয়াড়। বদলি হিসেবে নামা তাদের মানায় না। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহও ‘শুরুর’ খেলোয়াড়, শেষের নয়!