খেলাধুলা

পাকিস্তানি দর্শকদের মিছিলে দুই ‘হতভাগা’

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছে পাকিস্তানি দর্শকদের মিছিল। কারো গায়ে পতাকা, কারো গায়ে জার্সি আর কারো হাতে-মুখে ট্যাটু। কিন্তু এক পাশে দুজন দর্শককে দেখা যায় বিরস মুখে দাঁড়িয়ে থাকতে। গায়ে পাকিস্তানের জার্সি, কাঁধে জড়ানো পতাকা আর মাথায় সবুজ রঙা পরচুলা। 

কাছে যেতেই ইংরেজিতে একজন বললেন ‘ওয়ান মিনিট প্লিজ।’ কাকে যেন আবার ফোনও দিলেন। মুঠফোনের আলাপচারিতায় যা বুঝলাম টিকিট সংক্রান্ত কোনো ঝামেলায় পড়ছেন তারা। ফোন রাখার পরেই বললেন, ‘দুঃখিত’। এরপর আমি যা শুনলাম, তাতে উনাদের প্রতি সমেবদনা জানাও ছাড়া কোনো উপায় নেই।

দুজনের একজনের নাম সাজিদ খান। বাংলাদেশি গণমাধ্যমকর্মী বলার পরই সাজিদের বিরস মুখ থেকে কথা বের হয়। তারা দুজন থাকেন আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে। পাকিস্তানি হলেও ওখানেই ঘাঁটি গেড়েছেন তারা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের ম্যাচ দেখার জন্য মাত্র ৩ ঘণ্টা আগে ছুটে আসেন দুবাইয়ে। স্টেডিয়ামে এসে পড়েন ঝামেলায়। টিকিট পাওটার কথা থাকলেও এখন মিলছে না।

‘আমরা মাত্র তিন ঘণ্টা আগে এখানে এসেছি। হোটেলে ব্যাগটা রেখে স্টেডিয়ামে এসে পড়ি। এসেও কোনো লাভ হচ্ছে না। সবাই ঢুকছে, আমরা পাচ্ছি না। যেখান থেকে টিকিট পাওয়ার কথা, সেটাও কেন যেন হচ্ছে না। এখন আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। টিকিট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে,’ এভাবেই সাজিদ একনাগাড়ে কথাগুলো বলে গেছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দুবাই স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জমজমাট এ ম্যাচ শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা আগে থেকেই দুবাই স্পোর্টস সিটিতে যানজট লেগে যায়। বাধ্য হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্টেডিয়ামমুখি একটি রাস্ত বন্ধ করে দেয় দুই কিলোমিটার আগেই। পাকিস্তানি দর্শকরা নেমে হাঁটা ধরেন স্টেডিয়ামের দিকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় পুরো স্টেডিয়াম এলাকা।

এরপর মাঠে ঢুকেও দেখা যায় একই কাণ্ড। যেদিকে চোখ যায়, শুধু পাকিস্তানি দর্শক। অস্ট্রেলিয়া দর্শকদের দূরবীন দিয়ে পাওয়া যাবে না খুঁজে, এমন একটা অবস্থা। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকা পাকিস্তানের এই ম্যাচের শুরুটাও হয়েছে দারুণ। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ১০ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে তোলে ৭১ রান।