খেলাধুলা

দ্বিতীয় দিন তিন সেশনেই বাবরদের রাজত্ব 

দিনের শুরুটা এলোমেলো করে দিয়েছেন পেসার হাসান আলী। পেতে পেতেও সেঞ্চুরি পাননি মুশফিক। দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ৭৭ রান করতে হারায় ৬ উইকেট। কমপক্ষে আরও এক সেশন ব্যাটিং করতে পারলে দিনটি হতে পারতো বাংলাদেশের। এরপর শুরু হয় পাকিস্তানি দুই ওপেনার আবিদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিকের রাজত্ব। কোনো বিপদ ছাড়াই দ্বিতীয় সেশন পার করে এখন তৃতীয় সেশনও পার করার পথে।

হাফসেঞ্চুরির পর এখন সেঞ্চুরির পথে আবিদ, আর হাফসেঞ্চুরি করে এখনো ক্রিজে আছেন অভিষিক্ত শফিক। ৩৩০ রানের বিপরীতে খেলতে নেমে পাকিস্তান কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৪৫ রান তোলে। স্বাগতিকদের থেকে এখনো তারা ১৮৫ রান পিছিয়ে আছে। ১৮০ বলে ৯৩ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন আবিদ আলী। তার সঙ্গে ১৬২ বলে  ৫২ রান নিয়ে আছেন শফিক। আবু জায়েদ রাহী-কিংবা তাইজুল ইসলাম; বাংলাদেশের কোনো বোলারই উইকেটের দেখা পাননি। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনও আলোক স্বল্পতার কারণে খেলা হয়েছে কম। 

বাংলাদেশ: প্রথম ইনিংসে ৩৩০/১০ (লিটন ১১৪, মুশফিক ৯১, মেহেদি ৩৮*)

দ্বিতীয় দিন শেষে পাকিস্তান: প্রথম ইনিংসে ১৪৫/০ (আবিদ ৯৩*, শফিক ৫২*)

ছক্কা মেরে অভিষিক্ত শফিকের ফিফটি  

পাকিস্তানি দুই ওপেনারের ব্যাটে চিড় ধরাতে পারছেন না বাংলাদেশের নিয়মিত বোলাররা। অগত্য বোলিংয়ে এলেন মুমিনুল হক। তাকে ছয় মেরে ফিফটি করলেন অভিষিক্ত আব্দুল্লাহ শফিক। ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে মুমিনুলের মাথার ওপর দিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে বাউন্ডারিরের বাইরে পাঠিয়ে অর্ধশতকের দেখা পান শফিক। ১৫৩ বলে ২টি করে চার-ছয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দেখা পান হাফসেঞ্চুরির। 

 

দুই ওপেনারকেই ফেরাতে পারছে না বাংলাদেশ  

প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে দারুণ শুরু করে পাকিস্তান। দলটির দুই ওপেনার আবিদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিককেই ফেরাতে পারছে না বাংলাদেশের বোলাররা। অভিজ্ঞ আবিদ হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন, এখন সেঞ্চুরির পথে। সঙ্গে থাকা অভিষিক্ত শফিকও খেলছেন দারুণ। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলে এই ব্যাটসম্যান এখন হাফসেঞ্চুরির পথে। দ্বিতীয় সেশন পুরোটা ব্যাটিং করার পর এখন তৃতীয় ও শেষ সেশনও সাবলীলভাবে ব্যাটিং করে যাচ্ছেন দুই ওপেনার।

আবিদের তৃতীয় ফিফটি, অভিষেকেও দারুণ শফিক  

প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে দারুণ ব্যাটিং করছেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার। ইতিমধ্যে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আবিদ আলী। ৮৪ বলে ৬টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটির দেখা পান এই ব্যাটসম্যান। অন্যদিকে তার সঙ্গী আবদুল্লাহ শফিক খেলতে নেমেছেন অভিষেক টেস্ট। দেখে শুনে খেলছেন দুর্দান্ত। সঙ্গ দিচ্ছেন আবিদকে। দুজনে ৭৯ রানের জুটিতে দিনের দ্বিতীয় সেশন কাটিয়ে দিয়েছেন কোনো ধরণের বিপদ ছাড়াই।   

আবিদ-শফিকে এগোচ্ছে পাকিস্তান  

অভিজ্ঞ আবিদ আলী ও অভিষিক্ত আবদুল্লাহ শফিকের ব্যাটে এগোচ্ছে পাকিস্তান। দুজনের সাবধানী শুরুতে ইতিমধ্যে ৫০ রান যোগ করেছে স্কোরবোর্ডে। আবিদ রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করলেও শফিক খেলছেন রক্ষণাত্মক। দুই পেসারকে সামলানোর পর এখন স্পিনারদের দুজনেই খেলছেন সাবলীল ভাবে। 

পাকিস্তানের সাবধানী শুরু

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৩০ রানের বিপরীতে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু করেছে পাকিস্তান। অভিজ্ঞ আবিদ আলীর সঙ্গে আছেন অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা আবদুল্লাহ শফিক। দুজনেই আবু জায়েদ রাহী ও এবাদত হোসেনকে খেলছেন দেখেশুনে। 

৩৩০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

দ্বিতীয় দিন হাসান আলীর দারুণ বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪ উইকেটে ২৫৩ রান নিয়ে দিন শুরু করে স্বাগতিকরা অলআউট হয় ৩৩০ রানে। হাসান একাই নেন ৫ উইকেট।  দিনের শুরুতেই সেঞ্চুরিয়ান লিটন ফেরেন হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। অল্পসময়ের ব্যবধানে অভিষিক্ত ইয়াসিরও শিকার এই পেসারের। এরপর মুশফিক ফেরেন ফাহিম আশরাফের বলে। দলের হাল ধরেন তাইজুল-মেহেদি। তাইজুলকে বেশিদূর যেতে দেননি শাহীন আফ্রিদি। এবার রাহীকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে থাকেন মেহেদি। রাহীও সঙ্গ দিচ্ছিলেন ভালোই। কিন্তু হাসানের এক ওভারে সব তছনছ হয়ে যায়। পরপর রাহী ও নতুন ব্যাটসম্যান এবাদতকে ফেরান সাজঘরে। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে দারুণ লড়াই করেন মেহেদি মিরাজ। মুশফিকরা ফেরার পর রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। ৬টি চারের মারে ৬৮ বলে ৩৮ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

প্রথম দিন টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলেন মুশফিক-লিটন। দুজনের ২০৬ রানের জুটি ভাঙে দ্বিতীয় দিন সকালে। গতকালই লিটন অভিষেক শতক তুলে নিয়েছিলেন, কিন্তু মুশফিক পারেননি। শেষ দিকে মেহেদী দারুণ ব্যাটিং করেছেন।  বাংলাদেশ অলআউটের পরেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুই দল। 

চৌদ্দময় প্রথম ইনিংস 

বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান সাদমান ইসলাম, সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত আউট হয়েছেন ১৪ রানে। এই ইনিংসে লেগ বাই থেকে আসে ১৪ রান। বাংলাদেশ ব্যাটিং করে ১১৪.৪ ওভার। প্রথম ইনিংস যেন চৌদ্দময়। 

জোড়া আঘাত হাসানের  ৫ 

মেহেদির সঙ্গে দারুণ খেলতে থাকা রাহী হাসান আলীর ব্যাক অব লেন্থের বলে ক্যাচ তুলে দেন স্লিপে। আবদুল্লাহ শফিক ধরতে ভুল করেননি। ১৯ বলে ৮ রান করেন এই পেসার। পরের বলেই আবারও হাসানের আক্রমণ। ক্রিজে এসেই ফিরলেন এবাদত হোসেন। লেন্থ বলে ভেঙে যায় এবাদতের উইকেট। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের এখানেই সলিল সমাধি হয়। টেস্ট ক্রিকেটে এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ৫ উইকেট নেন এই পেসার।

এবার ফিরলেন তাইজুল

মেহেদির সঙ্গে জুটিতে দারুণ খেলছিলেন তাইজুল ইসলাম। ১১ রানের ইনিংসে আছে একটি দৃষ্টিনন্দন চারের মারও। তবে বেশিদূর যেতে পারলেন না। শাহীন আফ্রিদির বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ১টি চারে ২৮ বলে ১১ রান করেন তিনি।

মেহেদি-তাইজুলে বাংলাদেশের ৩০০    

মুশফিক ফেরার পর মেহেদি-তাইজুল হাল ধরেছেন দলের। সাজিদ খানকে এগিয়ে এসে  মিড অফে মেহেদির মারা দারণ চারে বাংলাদেশ ৩০০ রান স্পর্শ করে। দুজনের জুটি থেকে এখন পর্যন্ত ৪৬ বলে ২৮ রান আসে। 

৯ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে মুশফিক  

বিশ্বকাপে তার ব্যাট হাসেনি, হাসেনি বাংলাদেশও। এরপরেই বাদ পড়েন পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। এই নিয়ে দানা বাঁধে নানা বিতর্ক। মুখ খোলায় সতর্ক করা হয় মুশফিকুর রহিমকে। সবকিছু মিলিয়ে বাজে সময় পার করছিলেন এই ব্যাটসম্যান। যখন তার মুখ বন্ধ ব্যাট হাতে জবাব দেওয়াই একমাত্র অবলম্বন। তাই করলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। প্রথম দিন সতীর্থ লিটনকে সঙ্গে নিয়ে বিপদে হাল ধরেন, দ্বিতীয় দিন যখন সতীর্থরা আসা যাওয়া করছেন তখনো দারূণ খেলছিলেন, কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি। শতক থেকে ১৮ রান দূরে থেকে দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিলেন। ৯ রান যোগ করে ফাহিম আশরাফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। আম্পায়ার আউট দিলে মুশফিক রিভিউ নেন, কিন্তু লাভ হয়নি। ২২৫ বলে ১১টি চারে ৯১ রান করেন তিনি। চতুর্থবারের মতো টেস্টে ও সপ্তমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নার্ভাস নাইন্টিজে আউট হলেন মুশফিক। যা বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। 

অভিষেক রাঙাতে পারলেন না ইয়াসির

আবারও আক্রমণে হাসান আলী। ৯১তম ওভারের শেষ বলে পায়ে লাগে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা ইয়াসিরের। আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেন বাবর আজম। তবে বল স্ট্যাম্প  মিস করায় বেঁচে যান ইয়াসির। পরের ওভারেই চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের রানের খাতা খোলেন। শাহিন আফ্রিদিকে দারুণ কাভার ড্রাইভে সাদাপোশাকে নব যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রামের এই ক্রিকেটারের। কিন্তু বেশিদূর এগোতে পারলেন না, হাসানের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে। তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ৪ রান। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ এই ব্যাটসম্যান।

শুরুতেই ফিরলেন লিটন

হাসান আলীর বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ফিরলেন লিটন দাস। প্রথমে আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেন বাবর আজম। এরপর আর এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের রক্ষা হয়নি। মাত্র ১ রান যোগ করেন দ্বিতীয় দিন। ২৩৩ বলে ১১টি চার ও ১টি ছয়ে ১১৪ রান করে ফেরেন সাজঘরে।  লিটনের আউটে ভেঙে যায় পঞ্চম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে গড়া ৪২৫ বলে ২০৬ রানের জুটি। 

মুশফিক-লিটনে আরও একটি সুন্দর দিনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ 

আলোক স্বল্পতার কারণে বাংলাদেশ-পাকিস্তান প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ৫ ওভার খেলা কম হয়। এ জন্য শনিবার (২৭ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিন খেলা শুরু হবে ১১ মিনিট আগে। অর্থ্যাৎ ৯টা ৪৯ মিনিটে।  ৮৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ।  মুশফিকুর রহিম ৮২ ও লিটন কুমাস দাস ১১৩ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করছেন।  

প্রথম দিন 

শুরুটা ভালো হয়নি। স্কোরবোর্ডে ৪৯ রান না যোগ হতেই নেই চার উইকেট। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম-লিটন দাস। শুধু হালই ধরেননি, দুজনে জুটিতে প্রথম দিনে আর কোনো বিপদই ঘটেনি বাংলাদেশ শিবিরে। পঞ্চম উইকেটে তারা দুজন ৪১৩ বল মোকাবিলা করে ২০৪ রান তোলেন। লিটন তুলনে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। আর মুশফিক আছেন অষ্টম সেঞ্চুরির অপেক্ষায়।