খেলাধুলা

নতুন ভূমিকায় রাকিবুলকে দেখা যাবে আরও আগ্রাসী

যুব বিশ্বকাপজয়ী বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান স্বপ্ন বুনছেন আবার বিশ্বজয়ের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দলেও আছেন এই স্পিনার। শুধু তাই নয় তার নেতৃত্বেই খেলবে বাংলাদেশ। তার আগে খেলবেন এশিয়া কাপ। রাকিবুলের সঙ্গে এই দলে আছেন পেসার তানজীম হাসান সাকিবও।

গত বিশ্বকাপে রাকিবুল অসাধারণ হ্যাটট্রিক করেছেন স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। ৬ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় আছেন সপ্তম স্থানে। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয়সূচক রানটি আসে তার ব্যাট থেকেই। সম্প্রতি ভারতের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচ খেলে নিয়েছেন চার উইকেট। এবার তিনি মাঠে নামবেন বিশ্বজয়ের মাধ্যমে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে। তার নেতৃত্বেই খেলবে বাংলাদেশ। মাঠে এমনিতেই আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। তবে অধিনায়ক রাকিবুল জানালেন এবার তিনি আরও আগ্রাসী হবেন।

মুঠোফোনে রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাপনে রাকিবুল শুনিয়েছেন এশিয়া কাপ-বিশ্বকাপ নিয়ে তার ভাবনা, দলের শক্তিমত্তাসহ সবকিছু।

রাইজিংবিডি: সামনেই দুটি বড় টুর্নামেন্ট। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ। আপনার কি পরিকল্পনা?  রাকিবুল: পরিকল্পনাতো অবশ্যই ভালো খেলার। হাতে সময়ও বেশি নেই, কিভাবে কাদের বিপক্ষে খেললে ভালো করতে পারবো এভাবে মানসিকভাবেও প্রস্তুতি নিচ্ছি। নিজের সেরা ক্রিকেট যাতে খেলতে পারি এ জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। খেলার মধ্যেই মনযোগ রাখবো, যাতে করে দল আমার থেকে উপকৃত হয়।

রাইজিংবিডি: আপনি যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। আপনিসহ দুজন আছেন আগামী বিশ্বকাপের দলেও। নিজের অভিজ্ঞতা কতুটক কাজে লাগবে? রাকিবুল: সবচেয়ে বড় কথা আমি আগে যে ভুলগুলো করেছি এবার সেগুলো রিপিট হবে না। নিজের ভুলগুলো শুধরে আরও ভালোভাবে পরিকল্পনামাফিক খেলতে পারবো। আমি নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। খেলার ধরণ অনুযায়ী খেলতে পারবো। এখন মাঠে সবকিছুর প্রয়োগ করতে পারলেই তবে সফল হবো।

রাইজিংবিডি: আপনার অভিজ্ঞতা দলের সঙ্গে শেয়ার করছেন? রাকিবুল: অবশ্যই। আমি সবসময়ই করে থাকি। সামনে যখন টুর্নামেন্ট খেলবো তখন আরও শেয়ার করতে পারবো। আমার অভিজ্ঞতা থেকে যদি দল উপকৃত হয় তাহলে দিন শেষেতো আমিই সবচেয়ে বেশি খুশি থাকবো।

রাইজিংবিডি: বিশ্বকাপ জয়ী দল আর এবারের দলের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে? রাকিবুল: আসলে আমরা যে দলটি বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, সেটি তখনকার পরিস্থিতি ও সময় অনুযায়ী একটি সেরা দল ছিল। আমরা অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছিলাম বাইরে, নিজেদের প্রস্তুত করার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। করোনার কারণে কোনো দলই বেশি ম্যাচ খেলতে পারেনি। আমরাও পারিনি। তো আমি বলবো এখনকার পরিস্থিতিতে এই দলটিও সেরা। যদি পরিস্থিতি ভিন্ন থাকতো তাহলে কথা ছিল। যেহেতু খেলার সুযোগ পাইনি আমরা তাহলে প্রস্তুতি নেব কীভাবে? এটা শুধু আমাদের না। সবগুলো দলের জন্য। তাই আমি বলবো পরিস্থিতির বিবেচনায় দুটি দলই সেরা।

রাইজিংবিডি: শক্তির বিচারে এই দল নিয়ে আপনি কতটুক আশাবাদী? রাকিবুল: আমরা বিদেশের মাটিতে তুলনামূলকভাবে কম খেলেছি। তবে আমাদের বোলিং ইউনিট, ব্যাটিং ইউনিট ধারবাহিকতায় ফিরছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ভালো খেলার জন্য পেস আক্রমণ আমাদের আছে। ব্যাটসম্যানরাও রানে ফিরছে। অন্য দলের তুলনায় আমাদের শক্তিও কম না। সম্প্রতি ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে এসেছি।

রাইজিংবিডি: প্রত্যেক দলেরই দুর্বলতা থাকে। এই দলের কোন জিনিসটা নিয়ে কাজ করতে হবে? রাকিবুল: এটা ঠিক। প্রত্যেক দলেরই দুর্বলতা থাকে। আমাদেরও নেই যে তা না। সত্যি কথা হলো অনুশীলন করে আমরা এসব কিছু কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। আলাদা করে আসলে বলাটা কঠিন যে আমরা কোন দিকটায় দুর্বল। ব্যাটিং-বোলিং দুটোই আমরা আরও কিভাবে উন্নত করা যায় সেটা চেষ্টা করছি।

রাইজিংবিডি: আপনি নিজে বোলিং নিয়ে কোনো কাজ করছেন কিনা? রাকিবুল: আমি যেহেতু বোলার, বোলিং নিয়েইতো সবসময় কাজ করি। আলাদাভাবে ঠিক কোনো কাজ করছি না। নিজের সহজাত বোলিং করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিভাবে জায়গায় রেখে বোলিং করে কম রান দিয়ে উইকেট নেওয়া যায় সেটার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এখন মাঠে প্রয়োগ করতে পারলেই হবে।

রাইজিংবিডি: আপনার নেতৃত্বে খেলবে বাংলাদেশ। অনেক বড় দায়িত্ব। নেতৃত্ব নিয়ে কিছু ভেবেছেন? রাকিবুল: আমি অধিনাকায়ত্ব উপভোগ করবো। মাঠের সবকিছু কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেভাবে খেলবো। মাঠে আমাকে আগের চেয়েও আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যাবে।