খেলাধুলা

টেস্টের আগেই ‘টেস্ট’

রীতিমতো ম্যাচের আবহে অনুশীলন। সেন্টার উইকেটে খুব সিরিয়াস ব্যাটসম্যানরা। বোলারদের উইকেট দেওয়াই যাবে না। অনুশীলনে প্রায়ই খেলোয়াড়রা এটা-ওটা চেষ্টা করেন। নতুন কিছু করার প্রয়াস চালান। কোচিং স্টাফরাও তাদের দেন সঙ্গ। কিন্তু বৃহস্পতিবার জহুর আহমেদের ২২ গজে তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, অধিনায়ক মুমিনুল হক, লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমদের ব্যাটিং দেখে মনে হলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মহারণের আগে কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে তাদের। এ যেন টেস্টের আগে ‘টেস্ট।’ 

অনুশীলন ছিল সকাল ১০টায়। কিন্তু টেস্টের কথা মাথায় রেখে সকাল সাড়ে নয়টায় মাঠে হাজির বাংলাদেশ দল। সাত সকালে তামিম ও জয়কে সেন্টার উইকেটে ব্যাটিংয়ে পাঠালেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তাদের বল করবেন তিন পেসার খালেদ আহমেদ, ইবাদত হোসেন ও শরিফুল ইসলাম। আম্পায়ারের ভূমিকায় বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড।

বাকি দুই পেসার রেজাউর রহমান রাজা ও শহীদুল ইসলাম তখন ড্রেসিংরুমের সামনের নেটে ঘাম ঝরিয়েছেন। অনিশ্চয়তা না থাকলেও তামিম ও জয়ের প্রস্তুতিতে স্পষ্ট শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৫ মে থেকে শুরু হওয়া টেস্টে তারাই ইনিংস শুরু করবেন। আর পেস বোলিংয়ে খালেদ, ইবাদত ও শরিফুলের মধ্যে যে কোনো দুজন। সাকিব আল হাসান না থাকায় দল বাড়তি একজন বোলার নিয়ে খেলবে। তাতে সাত ব্যাটসম্যানকে বেছে নিতে হচ্ছে। সঙ্গে দুজন পেসার, দুজন স্পিনার।

তাইজুল ইসলাম ও নাঈম দিনের শুরু করেছেন পুরোনো বলে। তারা দুজন মুশফিক ও মুমিনুলকে বোলিং করেছেন। তামিম ও জয়ের পর সেন্টার উইকেটে পালাক্রমে গেছেন শান্ত-মুমিনুল এবং মুশফিক-লিটন। সবশেষে মোসাদ্দেক ও ইয়াসির আলী ব্যাট ঘুরিয়েছেন।

শেষ দুজনের যেকোনো একজন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবেন। একজনকে কম্বিনেশনের কারণেই বাইরে থাকতে হবে। বোলিং বিবেচনায় আপাতত এগিয়ে আছেন মোসাদ্দেক। মেহেদী হাসান মিরাজের ইনজুরিতে তাকে শেষ মুহূর্তে দলে ঢোকানো হয়েছিল। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের শেষ টেস্ট খেলেছিলেন মোসাদ্দেক। ২৬ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের প্রত্যাবর্তনটা হয়ে যেতে পারে এখানেই।

নতুন বলে শুরুতে পেসারদের আক্রমণে জোর দিয়েছিলেন ডোনাল্ড। শুরুর ঘণ্টায় তার চাওয়া ৩ উইকেট। খালেদ, ইবাদত, শরিফুলরা সেভাবেই বল করার চেষ্টা করেছেন। কোচের মন জয় করতে পেরেছেন, তা বোঝা গেল ডোনাল্ডের কথায়। সঙ্গে জোর দিয়েছেন তিনটি বিশেষ দিকে, বোলারদের থেকে শৃঙ্খলা, দৃঢ় মানসিকতা ও সৃজনশীলতা প্রত্যাশা করছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ।  

ডোনাল্ড বলেছেন, ‘নতুন বলে ফুলার লেন্থে বল করতে হবে। প্রথম ৩০ ওভারে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে, যাতে ৪০ রানের মধ্যে শ্রীলঙ্কার ৩ উইকেট ফেলা যায়। বলের অবস্থা কাজে লাগানোও গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনেক গরম, আর্দ্রতা বেশি। উপমহাদেশের কন্ডিশন যেমন হয় আর কী। ৩০ ওভার পর ধৈর্য আর শৃঙ্খলা দেখাতে হবে, এটা দিয়েই চাপ তৈরি করতে হবে। বল পুরোনো হলে রিভার্স সুইং আসতে পারে। তাই প্রক্রিয়া মেনে খেলতে হবে। শৃঙ্খলা, মানসিকতা আর সৃজনশীলতা বড় ভূমিকা রাখবে।’

বলা হয়, অনুশীলনে নিজেকে এমনভাবে ঝালিয়ে নাও ম্যাচটাকে যেন পরীক্ষার মঞ্চ না মনে হয়। ডমিঙ্গো, সিডন্স, ডোনাল্ডরা আজ ‘প্রি-টেস্ট’ নিয়ে তামিম, মুশফিকদের কাজটা সহজই করে দিলেন।