খেলাধুলা

পথ না ভোলার পথ খুঁজছে বাংলাদেশ

৫ দিনের টেস্ট ক্রিকেটে সর্বমোট ১৫ সেশনের খেলা। সাদা পোশাকের লড়াইয়ে জিততে হলে ১৫ সেশনই অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি সেশনে লড়াই করেই মেলে কাঙ্খিত ফল। একবার পা পিছলে গেলেই সর্বনাশ!

দেশে বা বাইরে বাংলাদেশ সম্প্রতি যতগুলো টেস্ট হেরেছে প্রতিটিতেই কোনো না সেশনে করেছে সর্বনাশ। পথ ভুলে হেরেছে প্রতিটি ম্যাচ। কোভিডের পর বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে স্বাগত জানায়। চট্টগ্রামে কাইল মায়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে ৩৯৫ রানের পুঁজি নিয়েও পথ হারায় বাংলাদেশ। শেষ দুই সেশনে তাকে আটকানোর উপায় জানা ছিল না কারো! ঢাকা টেস্টে ফের একই পুনরাবৃত্তি। রাকিম কর্ণওয়ালের স্পিন বিষে এক সেশনেই মুমিনুল রাজ্যের পতন।

সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দুই টেস্টের দুঃস্মৃতি তো এখনও তরতাজা। তালগোল পাকানো ব্যাটিংয়ে এক সেশনে ৫৩ ও ৮০ রানে অলআউট বাংলাদেশ। যেখানে এক ইনিংসে ব্যাটিং করে মাত্র ১৯ ওভার। আরেক ইনিংসে ২৩.৩। বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজ একাই গুড়িয়ে দেন অতিথিদের।

বোলাররা লড়াই করলেও ব্যাটসম্যানদের পথ ভোলায় আক্ষেপ ঝরলো বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কণ্ঠে, ‘যখন আমাদের খারাপ সেশন যায় তখন আমরা সত্যিই খুব বাজে খেলি। আমাদের খারাপ সেশন কাটানো মানেই ৬-৭ উইকেট হারানো। কিন্তু ১-২ উইকেট হারালেই আমরা ৪-৫ উইকেট হারাতে পারি না। এটা আমাদের অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদেরকে অবশ্যই উইকেট জোয়ার আটকাতে হবে।’

টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্য পেতে পাঁচদিন ১৫ সেশন মনোযোগ ধরে রাখা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ ডমিঙ্গো তা বুঝিয়েছেন এই মন্তব্যে, ‘আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০ রানে এগিয়ে থাকার পরও উইকেট হারিয়েছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমরা জয়ের কাছাকাছি থেকেও ম্যাচ হেরেছি। ওরা ৩৯৫ রান তাড়া করে জিতেছে।’

‘আমরা নিউ জিল্যান্ডে ম্যাচ জিতেছি। কিভাবে? পাঁচদিন আমরা মনোযোগ দিয়ে ম্যাচ খেলেছি। কোনো সেশনে আমরা পিছিয়ে থাকিনি। ডারবানে আমরা চারদিন ভালো খেলেছি। কিন্তু একটা সেশনেই সবশেষ। দ্বিতীয় টেস্টেও একই ফল। আমরা নিশ্চিতভাবেই যেকোনো দলকে পাঁচদিন খেলে হারাতে পারি। চারদিনে সেটা সম্ভব নয়।’

পথ হারিয়ে ম্যাচ হারার আধাঁর কাটিয়ে আলোর অপেক্ষায় ডমিঙ্গো। ছেলেদের প্রাণবন্ত রাখতে ড্রেসিংরুম চাঙ্গা রাখছেন, ‘এটা নিয়ে আমরা রোজ কথা বলছি এবং সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজছি। ড্রেসিংরুমে নিজেদের শান্ত রাখার কাজ করছি। ব্যাটসম্যানদের ফুরফুরে রাখার চেষ্টা করছি। খারাপ কিছু হলেও সেই আলোচনা বন্ধ রেখে ভালো কিছু চিন্তা করাচ্ছি। এটা ক্রিকেটের অংশ। নিজেদের পরিকল্পনায় স্থির থাকতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে আপনি চাপ অনুভব করলে এক রান নিয়ে স্ট্রাইক পরিবর্তন করবেন। এইতো…।’

ব্যাটসম্যানরা পা পিছলে পথ হারালেও বোলাররা ঠিকই দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন। আগ্রাসী বোলিংয়ে প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হয়ে উঠছেন। তাসকিন, শরিফুল, ইবাদতদের পেস আক্রমণ এখন বড় ভরসা। তাইজুল, মিরাজের ঘূর্ণি বরাবরই বাংলাদেশের শক্তি। বোলারদের ধারাবাহিক সাফল্যে বেশ উচ্ছ্বসিত মনে হলো বাংলাদেশের কোচকে, ‘আজ সকালেই বোলারদের মনে করিয়ে দিয়েছি, দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা ৩৬ উইকেট পেয়েছি। আমি মনে করি এর আগে এমনটা হয়েছে। আমরা এবারও ২০ উইকেট পেতে আত্মবিশ্বাসী।’