খেলাধুলা

স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং সাকিবের, ডমিঙ্গো ‘ইমপ্রেস’

ঘড়ির কাটায় তখন ১০টা ১০ মিনিট। ড্রেসিংরুম থেকে ব্যাট-প্যাড নিয়ে নেমে আসছেন সাকিব আল হাসান। ড্রেমিংরুমের পাশের নেটেই ঢুঁ মারলেন। নেটে তখন মাহমুদুল হাসান জয় ও মুশফিকুর রহিম ব্যাটিংয়ে। সাকিবকে অপেক্ষায় থাকতে হলো। কোভিড থেকে মাত্রই সেরে উঠে সময় নষ্ট না করে দেশের হয়ে খেলতে চট্টগ্রামে হাজির সাকিব।

কিন্তু তাকে ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। ব্যাটিং-বোলিংয়ে থাকতে হবে সেরা অবস্থানে। সেই পরীক্ষায় শুরুতেই নেটের ২২ গজে বাঁহাতি অলরাউন্ডার। ১০টা ২২ মিনিটে সাকিব নেটে ঢুকেন। শুরুতে খেলেন থ্রো বল। তিন টিম বয় রমজান, বুলবুল ও নাসিরের সঙ্গে তাকে বল থ্রো করেন রাসেল ডমিঙ্গো। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জোরে বল থ্রো করেন রমজান। ১৪০ এর কাছাকাছি তার গতি উঠানামা করে। বাকিদের ১২৫-১৩০ এর আশেপাশে।

বোঝা যাচ্ছিল শুরুতেই পেস আক্রমণ সালমাতে মনোযোগী ছিলেন সাকিব। তার ব্যাটিংয়ের শুরুটা ছিল আঁটসাঁট। লেন্থ বলগুলো ঠিকঠাক মতো সামলাতে পারছিলেন। অফস্টাম্পের বাইরের কিছু বল ছেড়ে দিচ্ছিলেন। আবার অনেক সময় ড্রাইভও করছিলেন। শর্ট বল পুল ও কাট করেছেন অহরহ।

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল রাউন্ডের ১৫ দিন পর আজই আবার নেটে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কোভিড থেকে সেরে উঠায় তার শরীরে তেমন জড়তা দেখা যায়নি। পেস বোলিংয়ে তিনি বরারবই টাইমিং মিলিয়ে ব্যাটিং করেন। জোর খাটান না। আজও তেমনই ছিল।

এরপর খেলেন স্পিন আক্রমণ। চট্টগ্রামের বিভাগীয় বোলার অফস্পিনার ইফতেখার সাজ্জাদ রনির সঙ্গে মোট তিনজন স্পিনার তার নেটে হাত ঘুরান। এদের জন্য দুজন অফস্পিনার, একজন বাঁহাতি স্পিনার।

স্পিনার আসতেই সাকিব যেন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। আগ্রাসী মনোভাবে ব্যাট চালিয়ে যান। ইফতেখারকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে ইনসাইড আউট শট খেলেন। আরেক অফস্পিনারকে এগিয়ে এসে লং অন দিয়ে উড়ান। বাঁহাতি স্পিনারের লেগ স্টাম্পের উপরের বল স্লগ করে দৃষ্টি সীমানার বাইরে পাঠান। অনুশীলনে তার ব্যাটিং ছিল বেশ সাবলীল। বোঝার উপায় ছিল না ছোটখাটো বিরতির পর মাঠে নেমেছেন।

স্পিনে তার ব্যাটিং উইকেটের পেছন থেকে দেখেছেন ডমিঙ্গো। এর আগে শুরুতে তাকে পাখির চোখে পরখ করেন সিডন্স। ডমিঙ্গোর সঙ্গে সাকিবের কথোপকথন কিছুটা শোনা গিয়েছিল পাশ থেকে। যেখানে ডমিঙ্গো তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেমন অনুভব করছ? সাকিবের উত্তর ছিল এক শব্দে, ‘গুড।’

এরপর কয়েকটি বল খেলার পর নিজ থেকেই বলেছেন, ‘ব্যাটিং ইজ ফাইন।’ খানিকবাদে এই প্রতিবেদক ডমিঙ্গোকে দূর থেকে জিজ্ঞেস করেন, সাকিব লুকস ইম্প্রেসিভ…।‘ 

মুখ ভর্তি হাসিতে ডমিঙ্গো ইতিবাচক সাড়াই দিয়েছেন। প্রথম সেশনে ২৫ মিনিট ব্যাটিং করে দশ মিনিটের মতো বিশ্রাম নেন সাকিব। ফিরে এসে পাশের নেটে পেস বোলার সাইফ উদ্দিনকে খেলেন এ ব্যাটসম্যান। কয়েক মিনিট পরই একপাশলা বৃষ্টি পণ্ড করে তার অনুশীলন। উপায় না থাকায় অনুশীলন অসম্পূর্ণ রেখেই সাকিব ফেরেন ড্রেসিংরুমে। এরপর আর চার দেয়ালের রুম থেকে বের হননি সাকিব।

ফলে বোলিং ও ফিল্ডিং অনুশীলন করা হয়নি তার। ব্যাটিংয়ে তার ত্রিশ মিনিটের সেশন যথেষ্ট ছিল কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। কিন্তু যতক্ষণ উইকেটে কাটিয়েছেন ততক্ষণ তাকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। মনের আনন্দে ফুরফুরে হয়ে ব্যাটিং করেছেন। তবে বোলিংয়ে ঝালিয়ে নেওয়া দরকার ছিল। ডমিঙ্গো গতকাল বলেছিলেন, দিনে ১৫-২০ ওভার বোলিং করতে হতে পারে এবং পাঁচদিনই একই কাজ করতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে তার ম্যাচ ফিটনেস এখনও পেয়েছেন কিনা বলা মুশকিল।