খেলাধুলা

দলের ১১ জনই যদি একশ করে, তাহলে তো রান ১১০০ হবে: মুমিনুল

নিজের অফফর্ম নিয়ে মুমিনুল আরো একবার বললেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন নই।’ তবে দলের ব্যাটিং ধস? শেষ কয়েক সিরিজেই বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে হঠাৎ ধস নামে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লাগাতার উইকেট হারায়। তাতে বড় হয় না দলের স্কোর।

চট্টগ্রামেও হয়েছে এমন কিছু। শান্ত ও মুমিনুল দ্রুত আউট হয়েছেন। এরপর লিটন, তামিম ও সাকিব পথ ভুলে যান। ব্যাটিংয়ের এই ধস নিয়ে অধিনায়ককে প্রশ্ন করা হলে অদ্ভুতুড়ে ব্যাখ্যা দিয়ে জানালেন, দলের ১১ জন সেঞ্চুরি করলে দলের রান হবে ১১০০!

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ড্র করে বাংলাদেশের অধিনায়ককে পাওয়া গেল সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। চার ম্যাচ পর দেশের মাটিতে হার এড়াতে সক্ষম হওয়ায় হাসি ফুটেছে মুমিনুলের মুখে। সেখানে তার কথা শুনেছে রাইজিংবিডি-  

ম্যাচে ফল বের করা কি সম্ভব ছিল?

মুমিনুল হক: আমার কাছে মনে হয় আরেকটু যদি মাঝের সময়ে একটা উইকেট নেওয়া যেত তাহলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারতো।

ম্যাচ ড্র হয়েছে। অধিনায়ক হিসেবে পারফরম্যান্সে কি সন্তুষ্ট?

মুমিনুল হক: একটা টেস্টে ড্র হওয়ার পর সবাই যেহেতু রানে আছে, সবাই যেহেতু দল হিসেবে খেলতে পেরেছে… ব্যাটসম্যান হোক বা বোলার, দলগতভাবে আমরা যখন ভালো খেলি তখন কিন্তু ভালো ফল পাই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যখন ভালো করি, তখন দল ভালো পজিশনে থাকে। অবশ্যই এটা ঢাকায় কাজে দেবে।

উইকেট কি আপনার প্রত্যাশা মতো হয়েছে?

মুমিনুল হক: চট্টগ্রামের উইকেট প্রায় একই রকম থাকে। এর আগে তো এমন উইকেটে এই সময়ে স্পিনাররা সাহায্য পায়নি। এবার কিছুটা সাহায্য পেয়েছে। চট্টগ্রামের উইকেট সব সময় এরকমই থাকে।

আপনি রান পাননি? নিজের পারফরম্যান্সে উদ্বিগ্ন?

মুমিনুল হক: আমার ব্যাটিং নিয়ে যেটা… আমি ওতো উদ্বিগ্ন না। চিন্তিতও না। সত্যি কথা বেশি ওতো বেশি চিন্তিত না।

মাঝে বাংলাদেশের ব্যাটিং অনেকটাই থমকে গিয়েছিল। রানই পায়নি। শ্রীলঙ্কাও ধীর গতিতে রান তুলেছে। বাংলাদেশ যদি আরেকটু আক্রমণাত্মক খেলতো তাহলে কি ফল বের করতে পারতো?

মুমিনুল হক: যদি পাঁচদিন খেলা দেখে থাকেন… ওদের ব্যাটিংও দেখেন, আমাদের ব্যাটিংও দেখেন, এই উইকেটে আপনি টিকে থাকতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনি বেশি এক্সাইটেড হয়ে যান তাহলে উইকেট পড়ার সুযোগ বেশি থাকবে। লিটন আউট না হলে হয়তো আমরা ওই সুযোগটা (আক্রমণাত্মক) নিতে পারতাম। যেই সুযোগটা নিতে গিয়ে ওই সময়ে ২-৩ উইকেট পড়ে যায়। তামিম, সাকিব ভাই আউট হলো। লিটনও আউট হলো। লিটন যদি এক ঘণ্টা মুশফিক ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে পারতো তাহলে হয়তো অন্যরকম হতে পারতো। চট্টগ্রামের এই উইকেটে সিঙ্গেল নিতে পারেন। কিন্তু বেশি এক্সেলারেট করতে গেলে আউট হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে।

ম্যাচের প্রাপ্তি?

মুমিনুল হক: দলভাগে আমরা সবাই ভালো খেলতে পেরেছি এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এটাই দরকার। সবাই যখন ভালো খেলি, তখন দলের একটা ফল হয়।

তবে পেস বোলাররা কি খুশি করতে পেরেছে আপনাকে?

মুমিনুল হক: আমার কাছে মনে হয় পেস বোলাররা আরেকটু ভালো বল করতে পারতো। যেহেতু পেস বোলারদের প্রতি সবার প্রত্যাশা একটু বেড়েছে। আমার কাছে মনে হয় প্রথম ইনিংসে আরেকটু ভালো বল করতে পারতো। দ্বিতীয় ইনিংসেও শরিফুল ছিল না। খালেদ আরেকটু লেন্থে বল করতে পারলে আরেকটু খুশি হতে পারতাম। তাহলে ভালো হতো।

আর স্পিন?

মুমিনুল হক: স্পিনারদের এই উইকেটে উইকেট পাওয়া কঠিন। পেস বোলারদেরও তাই। আমার কাছে মনে হয়, স্পিনারদের ভেতরে নাঈম, সাকিব ভাই… তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম ইনিংসে ওদের রান বাড়ছিল। ওই সময়ে সাকিব ভাই ও তাইজুল এসে ওটা আটকে দিয়েছিল। আমি মনে করি প্রথম ইনিংসে সাকিব ভাইয়ের কাজ খুব ভালো ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসেও। ভালো বল করেছে এই উইকেটে।

এখানে অনেকটাই ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে খেলে ঢাকায় স্পিন সহায়ক উইকেটে খেলবেন। মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে কি না?

মুমিনুল হক: আপনি বিশ্বের যেখানেই খেলেন না আপনাকে সব কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। এটা পুরোপুরি মানসিক বিষয়। আমরা তো চট্টগ্রামের উইকেট, ঢাকার উইকেটে সারাবছরই খেলতে থাকি। বিশেষ করে আমরা ঢাকাতেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলি। আমার মনে হয়, আমরা জানি আসলে স্পিন কীভাবে খেলতে হয়। পেস কীভাবে খেলতে হয়। এখানে স্পিন আস্তে আসে। ঢাকায় একটু জোরে। কুইক টার্ন করবে, ভেতরে ঢুকবে। মানসিকভাবে সবাই মানিয়ে নেবে। আমার কাছে মনে হয় সবাই মানিতে নিতে পারবে।

অতিরিক্ত গরমে পারফরম্যান্সে কোথাও ঘাটতি দেখেছেন?

মুমিনুল হক: আমার কাছে মনে হয় না। সবাই তো ভালো পারফর্ম করল দেখলাম। আপনারাও দেখেছেন। বোলাররা ভালো বল করেছে। লং টার্ম বল করেছে। ব্যাটসম্যানরাও ভালো করেছে। ওদের দলেও একশ আছে। আমাদের দলেও। আমার মনে হয় না গরম প্রভাব ফেলেছে। আপনি ক্রিকেট খেলতে নেমে এত কিছু চিন্তা করতে পারবেন না। যদি গরম হয়েই থাকে, মানিয়ে নিয়ে খেলতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব কিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।

আমাদের ব্যাটিং ধস হচ্ছে শেষ কয়েক টেস্টেই। এবারও হলো। শান্তর পর আপনি দ্রুত আউট হলেন। এরপর লিটন, তামিম ও সাকিব দ্রুত আউট হলো…

মুমিনুল হক: একটা দলে তো ১১ জনের পারফর্ম করা কঠিন, তাই না। ১১ জন যদি একশ করে তাহলে তো রান ১১০০ হবে। আমার কাছে মনে হয় ক্রিকেট খেলাটাই তো এরকম। হয় দুজন পারফর্ম করবে বা তিনজন পারফর্ম করবে। যারা করবে, তারা বড় করবে। এটা বড় কোনো বিষয় নয়।