ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চলছে এবার দুই ঘোড়ার দৌড়- ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল। শীর্ষ দুটি দলের মধ্যে পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র এক। তাতে শেষ দিনে নির্ধারিত হচ্ছে দুই দলের শিরোপা ভাগ্য।
আগামী রোববার রাত ৯টায় ম্যানসিটি স্বাগত জানাবে অ্যাস্টন ভিলাকে, একই সময়ে উলভসকে ঘরের মাঠে খেলবে লিভারপুল। সিটিজেনরা জিতলেই চ্যাম্পিয়ন, আর হেরে গেলে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লিভারপুল জিতে হতে পারে এবারের সেরা।
১৯৯২-৯৩ এ শুরু প্রিমিয়ার লিগ যুগ, এরপর থেকে শেষ দিনে শিরোপার নির্ধারণ গড়িয়েছে মাত্র আটবার। এনিয়ে নবমবার শেষ দিনে চূড়ান্ত হবে ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ ফুটবল দল।
ইংলিশ শীর্ষ বিভাগীয় লিগে সবচেয়ে সফল দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, শেষ দিনেও তারা যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি তিনবার শিরোপা জিতেছে, যেখানে তাদের পাশে ম্যানসিটি। এর মধ্যে সবচেয়ে স্মরণীয় ২০১১-১২ মৌসুম, যখন সার্জিও আগুয়েরোর শেষ মিনিটের গোলে ম্যানসিটি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানইউকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
১৯৯৪-৯৫ (ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স)
ব্ল্যাকবার্ন রোভার্স তাদের তৃতীয় ইংলিশ প্রথম বিভাগ এবং প্রথম প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতেছিল মৌসুমের শেষ ম্যাচে। কেনি ডালগ্লিশের দল ৮৯ পয়েন্ট নিয়ে শেষ দিন মাঠে নেমেছিল, তখনকার চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়ে দুটি পয়েন্ট এগিয়ে ছিল।
ওই ম্যাচে লিভারপুলের কাছে ২-১ গোলে হেরেও ব্ল্যাকবার্ন চ্যাম্পিয়ন হয়, কারণ রেড ডেভিলরা ওয়েস্ট হ্যামের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে মাত্র এক পয়েন্ট পেয়েছিল।
১৯৯৫-৯৬ (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাদের তৃতীয় প্রিমিয়ার লিগ ও দশম শীর্ষ বিভাগীয় ট্রফি জিতেছিল শেষ দিন। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের দলের পয়েন্ট ছিল ৭৯, তাদের চেয়ে দুই পয়েন্ট থেকে দুইয়ে ছিল নিউ ক্যাসেল ইউনাইটেড (৭৭)।
ম্যানইউ ৩-০ গোলে হারায় মিডলসবোরোকে, আর নিউ ক্যাসেল ১-১ গোলে ড্র করে টটেনহ্যাম হটস্পারের সঙ্গে।
১৯৯৮-৯৯ (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)
৭৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষ দিন মাঠে নেমেছিল ম্যানইউ। আর্সেনালের চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট বেশি। পিছিয়ে পড়েও তারা ২-১ গোলে টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারিয়ে নাটকীয়ভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। আর্সেনাল ১-০ গোলে জিতেছিল অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে।
২০০৭-০৮ (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)
সমান ৮৪ পয়েন্ট ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসির। শেষ দিন টানটান উত্তেজনা নিয়ে মাঠে নেমেছিল তারা। রেড ডেভিলরা ২-০ গোলে উইগান অ্যাথলেটিককে হারিয়ে শিরোপা জেতে, চেলসি ১-১ গোলে ড্র করে বোল্টন ওয়ান্ডারার্সের সঙ্গে।
২০০৯-১০ (চেলসি)
শেষ দিনে শিরোপার লড়াই ছিল চেলসি ও ম্যানইউর মধ্যে। চেলসি (৮৩) এক পয়েন্ট এগিয়ে ছিল নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে। উইগান অ্যাথলেটিককে শেষ ম্যাচে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় চেলসি। স্টোক সিটিকে ৪-০ গোলে হারিয়েও হতাশা নিয়ে মৌসুম শেষ করে ম্যানইউ।
২০১১-১২ (ম্যানচেস্টার সিটি)
৮৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই ম্যানচেস্টার প্রতিদ্বন্দ্বী শেষ দিনে উত্তেজনা ছড়ায়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ১-০ গোলে জিতেছিল সান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু কুইন্সপার্ক রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ম্যানসিটির খেলা সেদিন তৈরি করেছিল অন্যরকম পরিবেশ।
সিটি এগিয়ে গেলেও কুইন্সপার্ক ঘুরে দাঁড়ায় দুই গোল করে। ইনজুরি টাইমে এডিন ডেকো করেন সমতাসূচক গোল। আর শেষ বাঁশি বাজার কয়েক সেকেন্ড আগে সার্জিও আগুয়েরোর গোল ম্যানইউর কাছ থেকে শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিল। গোলপার্থক্যে এগিয়ে থেকে সেদিন চ্যাম্পিয়ন হয় ম্যানসিটি।
২০১৩-১৪ (ম্যানচেস্টার সিটি)
মৌসুমের শেষ ভাগের পুরোটা সময় লিভারপুল ছিল টেবিলের শীর্ষে। কিন্তু শেষ দুই রাউন্ডে তারা হোঁচট খেলে ম্যানসিটি তাদের টপকে যায় এবং শেষ দিন জেতে শিরোপা।
শেষ দিনে অলরেডদের চেয়ে দুই পয়েন্টে এগিয়ে ছিল ম্যানসিটি। ওয়েস্ট হ্যামকে ২-০ গোলে হারায় সিটিজেনরা এবং লিভারপুল ২-১ গোলে জেতে নিউ ক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে।
২০১৮-১৯ (ম্যানচেস্টার সিটি)
এবারের মৌসুমের মতো ওইবারও শেষ দিনের লড়াই ছিল ম্যানসিটি ও লিভারপুলের। পেপ গার্দিওলার দল ওইবারও এক পয়েন্টে এগিয়ে ছিল। সিটি ৪-১ গোলে ব্রাইটন হোভ আলবিওনকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে। রেডরা ১-০ গোলে হারায় উলভসকে।