খেলাধুলা

ভালো করার জেদ থেকেই মুশফিকের ব্যাটে রানের ফোয়ারা

চট্টগ্রামের পর ঢাকাতেও মুশফিকের সেঞ্চুরি। অথচ এক সিরিজ আগেই বাংলাদেশের এই ব্যাটিং স্তম্ভকে নিয়ে কত আলোচনা। দক্ষিণ আফ্রিকায় তার ব্যাট হাসেনি। আউটের ধরনে হয়েছিলেন সমালোচিত। সব কিছুকে পেছনে ফেলে মুশফিক এখন দারুণ ছন্দে। ভালো করার জেদ থেকেই তার ব্যাটে এমন রান ফোয়ারা। 

মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন মাঠে নামার আগে সেই গল্প শোনালেন মুশফিক, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর আমি এখানে ভালো করতে চেয়েছিলাম। কাজটা কিন্তু সহজ নয় যখন আপনি বাজে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ আপনার থেকে অনেক বেশি রান প্রত্যাশা করছে সবাই। আমি মনে করি আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু সিরিজে তেমন রান করতে পারিনি। আমি নিশ্চিত ছিলাম, যদি আমার প্রক্রিয়ায় স্থির থাকি, আমার বেসিক নিয়ে কাজ করি তাহলে আমি দ্রুতই রানে ফিরতে পারব। সেটাই এই সিরিজে হয়েছে।’

দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে মুশফিক ছিলেন না চেনা ছন্দে। দুই টেস্টে চার ইনিংসে পেয়েছেন মাত্র এক ফিফটি। তিনটিতে দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতেও পারেননি। ফিফটি ছোঁয়া একমাত্র ইনিংসটিতেই মুশফিক নিজের উইকেট রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ‘আত্মাহুতি’ দিয়েছেন। এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে দুই ইনিংসে তার রান ছিল ৯ ও ১১। প্রোটিয়াদের মাটিতে রান না পাওয়া মুশফিকের ব্যাট হাসেনি ঢাকা লিগেও। চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে চার ম্যাচে করেছেন মাত্র ৮৭ রান। 

রানে ফিরতে মুশফিক শরনাপন্ন হয়েছিলেন ‘শৈশবের গুরু ফাহিম স্যার’ খ্যাত নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কাছে। ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগে তাকে নিয়ে মিরপুরে অনুশীলন করেন। তাতে মিলেছে সুফল। সঙ্গে কোচ জেমি সিডন্স ও রাসেল ডমিঙ্গো অনুপ্রেরণায় আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন মুশফিক, ‘খুব ছোট ও সূক্ষ্ণ বিষয় নিয়ে আমি আমার শৈশব গুরু ফাহিম স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি। সেটা আমাকে প্রচণ্ড সাহায্য করেছে। এছাড়া জেমি সিডন্স ও রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গেও কাজ করা হয়েছে। কিছু জায়গায় কাজ করেছি যেগুলো আমাকে সাহায্য করেছে।’

স্কিলে ছোটখাটো কাজ করলেও মাঠের বাইরের কোচদের অনুপ্রেরণা মুশফিককে এগিয়ে নিয়েছে বহুদূর। তিনি বলেছেন, ‘দিন শেষে তারা প্রত্যেকে আমাকে সমর্থন করে প্রেরণা জুগিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘‘তুমি এই দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়।’’ এটাও আমার আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আপনি যদি রান নাও করেন তবুও কোচরা যখন বলবে আপনি অতি গুরুত্বপূর্ণ তখন ভালো কিছু চিন্তা করার সুযোগ পাবেন।’ 

চট্টগ্রামে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ৫ হাজার রান পেরিয়ে গেছেন মুশফিক। তার বিশ্বাস এই পথে হাঁটবে আরো অনেকেই, ‘প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রান করা সত্যিই বিশাল পাওয়া। আমি মনে করি না শুধু আমিই এখানে থাকবো। আরো অনেকেই যোগ দেবে। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে আমি টেস্ট ক্রিকেটকেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটে এই কীর্তি করায় আমি সেই সময়টা উপভোগ করেছি। ম্যাচটা জিততে পারলে আমার অর্জনটা আরো স্পেশাল হতো।’