১৯৮৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপেক্ষে কপিল দেবের নায়োকোচিত ইনিংসের কথা অনেকেরই মনে আছে। নবাগত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে ১৭ রানে ভারত ৫ উইকেট হারানোর পর তিনি যে ব্যাটিংটা করেছেন সেটা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে থাকবেও অনেক দিন।
সেদিন তিনি শুধু যে একাই দলের স্কোরকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন তা নয়, সেই বিশ্বকাপে ভারতকে টিকিয়েও রেখেছিলেন। ওই ম্যাচের পরের ইতিহাস তো সকলেরই জানা। সেদিন ছিল ১৮ জুন। আজ (১৮ জুন, ২০২২) কপিলের সেই অনন্য কীর্তি গড়ার ৩৯ বছর পেরিয়ে গেল।
সেদিন কপিলের অমন ইনিংস না হলে ম্যাচ জেতাই হতো না ভারতের। মাত্র ৯ রানে ভারতের ৪ ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর দলের হাল ধরনের কপিল। শেষ পর্যন্ত তার বিশ্বরেকর্ড গড়া ১৭৫ রানের ইনিংসে ভর করে ভারত ইনিংস শেষ করে আসে ২৬৬ রানে। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩১ রানে জয় পায় ভারত। ব্যাটিংয়ে অনবদ্য ইনিংস খেলার পাশাপাশি বল হাতে ১টি উইকেটও নিয়েছিলেন কপিল। অবধারিতভাবে ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন।
সেদিন ৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মাঠে নামেন কপিল। তিনি মাঠে নামার কিছুক্ষণ পরেই যশপাল আউট হয়ে যান। এরপর রজার বিনি মাঠে নেমে কপিলের সঙ্গে জুটি গড়েন। অবশেষে শুরু হয় তাদের দুজনের ইনিংস মেরামতের কাজ। ষষ্ঠ উইকেটে তারা দুজন ৬০ রান যোগ করেন।
এরপর ৭৭ রানের মাথায় বিনি ও ৭৮ রানে রবী শাস্ত্রী আউট হন। সেখান থেকে মদন লালের সঙ্গে কপিল ৬২ রানের জুটি গড়েন। ১৪০ রানের মাথায় অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মদন লাল। এরপর ৯ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন উইকেটরক্ষক সৈয়দ কিরমানি। তাকে অবশ্য আউট করা যায়নি। আউট করা যায়নি কপিলকেও। তারা দুজন নবম উইকেটে তারা দুজন ১২৬ রান তোলেন অবিচ্ছিন্ন থেকে। তাতে ৮ উইকেট হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৬ রান।
ইনিংসের শেষভাগে ক্ষ্যাপাটে ব্যাটিং করেন কপিল। তাতে করে ৮০ শতাংশ রান আসে তার ব্যাট থেকে। অন্যদিকে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন কিরমানি। তিনি ৫৬ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ২৪ রানে। অন্যদিকে কপিলের অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংসে ছিল ১৬টি চার ও ৬টি ছক্কার মার।
ওই বিশ্বকাপে এরপর ফাইনালে ওঠে ভারত। ফাইনালে ভিভ রিচার্ডসের ক্যাচ নিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন কপিল। সবশেষ লর্ডসের ব্যালকনিতে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন ভারতের এই জীবন্ত কিংবদন্তি। প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ দেন ভারতকে।