খেলাধুলা

মায়ার্সের সেঞ্চুরিতে শতাধিক রানের লিড, পিছিয়ে বাংলাদেশ

প্রথম সেশনের শেষ দিকে বাংলাদেশের দারুণ বোলিংয়ে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে উইন্ডিজ। আশা জেগেছিল তাদের দ্রুত অলআউটের। কিন্তু তাতে ছাই ঢেলে দিলেন মায়ার্স। ব্ল্যাকউডের সঙ্গে জুটি গড়ে কার্যত ম্যাচের নাটাই নিজেদের হাতে নিয়ে নেন। ব্ল্যাকউড ফিরলেও মায়ার্স তুলে নেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। দিন শেষে মায়ার্স ১২৬ ও জশুয়া ২৬ রানে অপরাজিত আছেন। উইন্ডিজের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩৪০ রান। লিড দাঁড়িয়েছ ১০৬ রান। আজ সারাদিনে ৫ উইকেট নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে চার উইকেটের পর তৃতীয় সেশনে ১ উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেটের দেখা পায়নি সাকিবের দল। এখানেই পিছিয়ে যায় রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা। দুটি করে উইকেট নেন মিরাজ-খালেদ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২৩৪/১০ (৬৪.১ ওভার)।  ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৪০/৫ (১০৬ ওভার)।

মায়ার্সের সেঞ্চুরিতে উইন্ডিজের শতরানের লিড

কাইল মায়ার্সের সেঞ্চুরির পরেই শতরানের লিড পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০৫তম ওভারে বাংলাদেশের ২৩৪ রান পেরিয়ে যায় স্বাগতিকরা। মায়ার্স ১২৫ ও ডা সিলভা ২৭ রানে অপরাজিত আছেন। 

শরিফুলকে টানা চার-ছয় মেরে মায়ার্সের সেঞ্চুরি

শরিফুলের করা ৯৪তম ওভারের তৃতীয় বল। কাভারে দারুণ চারে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩ রান দূরে যান মায়ার্স। পরের বলেই পুল করে স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে পাঠালেন বাউন্ডারির বাইরে। দেড়শ বলে পেয়ে গেলেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। দুটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। গেলেন দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। দুটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। মায়ার্সের ব্যাটিং ছিল দাপুটে। পাল্লা দিয়ে বলের সঙ্গে রান বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন। বাউন্ডারি কিংবা ওভার বাউন্ডারি মেরেছেন সুযোগ পেলেই। এখন পর্যন্ত দুই ইনিংসে ৬ দুটি তারই। তার এমন সাহসী ব্যাটিং বাংলাদেশকে আরও অসহায় করে তুলে। ধস সামলে উলটো সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ম্যাচে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন। 

চা বিরতির পরেই শতরানের জুটি ভাঙলেন মিরাজ

চা বিরতির পর ফিরে দ্বিতীয় ওভারেই ব্ল্যাকউডকে সাজঘরে ফেরান। ভেঙে যায় শতরানের জুটি। দুজনে পঞ্চম উইকেটে ১১৬ রান যোগ করেন।  মিরাজের কুইকার পিচড হয়েই হালকা মুভ করে। আড়াআড়িভাবে খেলতে চেয়েছিলেন ব্ল্যাকউড। কিন্তু বল ব্যাট মিস করে লাগে পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন ব্ল্যাকউড। কিন্তু সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন আম্পায়ার। আউটন হন ব্ল্যাকউড, রিভিউ হারায় উইন্ডিজ। ১২১ বলে ৪১ রান করেন ব্ল্যাকউড। তার মাটি কামড়ানো ব্যাটিংয়ে ধস সামলে উলটো ছড়ি ঘোরায় উইন্ডিজ। সঙ্গে ছিলেন মায়ার্স। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান দা সিলভা।

দ্বিতীয় সেশনে ছন্দহারা বাংলাদেশ, উইন্ডিজের লিড

প্রথম সেশনের শেষ আধঘণ্টায় বাংলাদেশ দারুণ বোলিংয়ে উইন্ডিজের লাগাম টেনে ধরেছিল। কিন্তু মায়ার্স-ব্ল্যাকউড প্রতিরোধ গড়ে নাটাই নিজেদের দিকে নিয়ে নেন। দুজনের জুটিকে দ্বিতীয় সেশনে টলাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। এই সেশনে ৩০ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে উইন্ডিজ ১১১ রান করে। দ্বিতীয় সেশন শেষে উইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৪৮ রান। বাংলাদেশের ২৩৪ রান টপকে লিড দেয় ১৪ রানের। মায়ার্স ৬০ ও ব্ল্যাকউড ৪০ রানে অপরাজিত আছেন। ব্ল্যাকউড খেলেছেন শান্তশশিষ্ট ভাবে টেস্ট মেজাজে। আর মায়ার্স ছিলেন ওয়ানডে মেজাজে। ফিফটিও করেছেন এই অলরাউন্ডার। এই সেশনে ওভারপ্রতি প্রায় চারের কাছাকাছি রান তুলে স্বাগতিকরা। 

বাংলাদেশের রান টপকে উইন্ডিজের লিড

ইবাদত হোসেনের করা ৬৯তম ওভারের পঞ্চম বল। কাভারে দারুণ শটে বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন কাইল মায়ার্স। এই বাউন্ডারিতে বাংলাদেশের রান টপকে উইন্ডিজ লিডে দেয়। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রান করেছিল। উইন্ডিজ এই রান টপকে যায় ৪ উইকেটে। মায়ার্স-ব্ল্যাকউডের জুটি ইতিমধ্যে শতরান পেরিয়েছে।  

মায়ার্সের ফিফটির পর শতরানের জুটি 

৬৯তম ওভারের প্রথম বলে ইবাদতকে চার মেরে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন কাইল মায়ার্স। তার ফিফটির ইংস সাজানো ছিল ৭টি চার ও ১টি ছয়ে। এরপরেই উইন্ডিজ পঞ্চম ওভারে শতরানের জুটির দেখা পায়। ১৭৭ বলে শতরান যোগ করেন মায়ার্স-ব্ল্যাকউড।

ফিফটির জুটিতে মায়ার্স-ব্ল্যাকউডের প্রতিরোধ

৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর উইন্ডিজকে নতুন পথ দেখান কাইল মায়ার্স-জার্মেইন ব্ল্যাকউড। বিরতির পর ফিরে দুজনে খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ৮৫ বলে তারা যোগ করেন ৫০ রান। ব্ল্যাকউড সাবধানী খেললেও মায়ার্স কিছুটা খেলছেন হাত খুলে। দুজনের দৃঢ়তায় উইন্ডিজ বাংলাদেশের দেওয়া লিড টপকানোর পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৩৮ রান দূরে আছে স্বাগতিকরা।

৩২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম সেশন বাংলাদেশের 

শরিফুল ইসলাম জন ক্যাম্পবেলকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন। ফিফটির পরেই আরেক ওপেনার ব্র্যাথওয়েটকে ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। এরপর একই ওভারে রেইফার-বোনারকে বোল্ড করে ফেরান খালেদ আহমেদ। ৩২ রানে উইন্ডিজের ৪ উইকেট নিয়ে প্রথম সেশন নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। প্রথম সেশনের শেষ আধঘণ্টায় উইন্ডিজের ৩টি উইকেট তুলে নেয় সফরকারীরা। বল পাল্টানোর পর উইকেটগুলোর দেখা পায় সাকিব আল হাসানের দল। সমস্যা থাকায় ৩৬.৩ ওভারের পর পরিবর্তন হয় বল। পরের ওভারেই মিরাজ ফেরান উইন্ডিজ অধিনায়ককে। এরপর খালেদ এসে তুলে নিলেন ২ উইকেট। সব মিলিয়ে দারুণ এক সেশন পার করলো বাংলাদেশ। ৬৭ নিয়ে উইন্ডিজ দিন শুরু করে। এই সেশনে উইন্ডিজ করে ৭০ রান। প্রথম সেশন শেষে তাদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৩৭। ওপেনিং জুটি থাকে শতরান পর্যন্ত। এরপরের ৩২ রানে ৪ উইকেট হারায় দলটি। বাংলাদেশ থেকে এখনো পিছিয়ে আছে ৯৭ রানে। 

এক ওভারেই খালেদের দুই শিকার

একই ওভারে রেমন রেইফারের পর নতুন ব্যাটসম্যান এনক্রুমা বোনারকে ফেরালেন খালেদ। ৩৯তম ওভারের প্রথম বল। আউটসাইড অফের ডেলিভারি রেইফারের ব্যাট ছুঁয়ে বল যায় স্ট্যাম্পে। ৪১ বলে ২২ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ব্র্যাথওয়েটের আউটের পর  ক্রিজে আসা বোনার বোল্ড হয়ে ফেরেন একই ওভারের শেষ বলে। বোনারও ইনসাইড এজ হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ব্যাক অফ লেন্থের ডেলিভারি হালকা বাউন্স করেছিল। ব্যাকফুটে খেলতে চেয়েছিলেন বোনার। কিন্তু বল ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। বোনার ফেরেন ০ রানে।

বল পাল্টানোর পরেই মিরাজের উইকেট 

সমস্যা থাকায় ৩৬.৩ ওভার পর পরিবর্তিত বল পায় বাংলাদেশ। এরপরের ওভারের প্রথম বলেই ফিফটি করা উইন্ডিজ অধিনায়ককে সাজঘরে পাঠান মিরাজ। তার আর্মবল বুঝতেই পারেননি ব্র্যাথওয়েট। ফ্রন্টফুটে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বলের লাইন ধরতে পারেননি। ভেঙে দেয় উইকেট। ৭ চারে ১০৭ বলে ৫১ রান করেন ব্র্যাথওয়েট। 

 

বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্র্যাথওয়েটের পঞ্চম ফিফটি 

বাংলাদেশকে পেলেই যেন জ্বলে ওঠেন উইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম ইনিংসে তুলে নিলেন ফিফটি। ১০৩ বলে ক্যারিয়ারের ২৭তম ফিফটির দেখা পেয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম ফিফটি। এ ছাড়া আছে তিনটি সেঞ্চুরি। ১২ টেস্টে এই সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরিগুলো হাঁকান ব্র্যাথওয়েট। এ ছাড়া ৫টি ফিফটি আছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। যা করেন ১২ টেস্টে। ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি গড় রান (৪৮.১০) বাংলাদেশের বিপক্ষেই।

শতরানের জুটি ভেঙে স্বস্তি এনে দিলেন শরিফুল

উইন্ডিজের দলীয় শতরান পূর্ণের পর জন ক্যাম্পবেলকে ফেরালেন শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফাইন লেগে ক্লিপ করে ২ রান নিয়ে দলীয় শতরানের সঙ্গে ওপেনিং জুটিরও শতরান পূর্ণ করেন ক্যাম্পবেল। পরের তিন বল ডট দিয়ে শেষ বলে ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। শরিফুলের শট পিচে করা এক্সট্রা বাউন্সে পরাস্ত হন ক্যাম্পবেল। পুল করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বল ব্যাটে লেগে যায় উইকেটের পেছনে। তালুবন্দি করতে ভুল করেননি সোহান। ৭৯ বলে ৬ চারে ৪৫ রান করেন ক্যাম্পবেল। শতরানের জুটি ভেঙে স্বস্তি এনে দিলেন শরিফুল।

উইন্ডিজকে দ্রুত অলআউটের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনের লড়াইয়ে বাংলাদেশ 

সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৫ জুন) মাঠে নেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৩৪ রানের জবাবে ব্যাট করছে উইন্ডিজ। ৬৭ রানে তারা দিন শুরু করে। ১৬৭ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। ক্রিজে আছেন ক্যাম্পবেল (৩২) ও ব্র্যাথওয়েট (৩০)। সাকিব আল হাসানের দলের লক্ষ্য উইন্ডিজের রান আটকে দ্রুত উইকেট নেওয়া।

ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

প্রথম দিন আড়াইশর নিচে (২৩৪) রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। ফিল্ডিংয়ে নেমে আঁটসাঁট বোলিংয়ই করতে পারেনি, উইকেটতো দূরের কথা। ১৬৭ রান পিছিয়ে থেকে দিন শুরু করলেও কোনো উইকেট না হারানোয় এগিয়ে আছে স্বাগতিকরা। ব্যাকফুটে বাংলাদেশ।

তামিম ইকবালের মতে, ‘যেহেতু ওদের উইকেট পড়েনি প্রথম দিনটা তাদেরই। যদি আমরা ১-২টা উইকেট নিতে পারতাম তাহলে বলতে পারতাম ভাগাভাগি করছি। এই মুহূর্তে তারা এগিয়ে আছে। কাল আমরা কিভাবে শুরু করি সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

তামিমের আক্ষেপ

প্রথম দিন শেষে দলীয় স্কোর কম হওয়াতে আক্ষেপ করছেন তামিম ইকবাল। এ ছাড়াও আছে ফিল্ডিংয়ে নেমে বেশি রান দেওয়ার আক্ষেপ, ‘আমাদের আরও ভালো ব্যাটিং করা উচিত ছিল। আমরা যদি তিনশর কাছাকাছি বা তিনশ বিশ করতাম তাহলে খুব ভালো স্কোর হতো। কারণ, উইকেট কিছুটা আপ অ্যান্ড ডাউন হচ্ছে। বোলিং আমার কাছে মনে হচ্ছে, ২৫-৩০ রান কম দিতাম তাহলে ভালো হতো।’

প্রথম দিনের চিত্র

টেল এন্ডারদের দারুণ ব্যাটিংয়ে আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দিনের শেষভাগে বাংলাদেশি বোলাররা নির্বিষ ছিলেন। দিনশেষে কোনো উইকেট না হারিয়ে উইন্ডিজের রান ৬৭। বাংলাদেশ এখনো এগিয়ে আছে ১৬৭ রানে।  টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ২৩৪ রান করে। টেল এন্ডারদের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ দুইশ পার করে। শরিফুল ২৬ রান করেন আর এবাদত ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। সর্বোচ্চ ৫৩ করেন লিটন দাস।

কেমার রোচকে এই ইনিংসে উইকেট দেয়নি বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন সিলস-জোসেফ। ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে উইন্ডিজের দুই ওপেনার। খালেদের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বল ছাড়া উইকেটের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। ক্যাম্পবেল ৩২ ও ব্র্যাথওয়েট ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। সাকিব-মিরাজ ও খালেদরা ছিলেন খরুচে। অন্যদিকে ইবাদত-শরিফুল কৃপণ হলেও উইকেটের দেখা পাননি।