খেলাধুলা

ফরাসি গর্জনে কুপোকাত দ্য থ্রি লায়ন্স  

হ্যারি কেন কি শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন? মুখে তুলে দেওয়া খাবার যেন খেতে পারেননি, হজমতো পরে। বাঁচা-মরার এমন মঞ্চে পেনাল্টি মিস সারাজীবন পোড়াবে থ্রি লায়ন্স সেনাপতিকে। সুযোগ হাতছাড়ার ম্যাচে ফরাসি গর্জনে আরও চার বছরের জন্য থমকে গেলো ইংলিশদের যাত্রা।

আল বাইয়াত স্টেডিয়ামে কাতার বিশ্বকাপের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। সেমি ফাইনালে বুধবার এমবাপ্পেদের প্রতিপক্ষ চমকে দেওয়া মরক্কো।

আক্রমণ পালটা আক্রমণের খেলায় গোল সংখ্যা কমই। হারলেও ইংল্যান্ড খেলেছে দারুণ। দুই দলেরই গোলরক্ষক ছিলেন দুর্দান্ত। অসাধারণ, নিশ্চিত গোল হজম থেকে বাঁচিয়েছেন। ফ্রান্সের হয়ে ১টি করে গোল করেন চুয়োমেনি ও জিরুদ। ইংল্যান্ডের হয়ে পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি করে কেন।

শুরুটা হয়েছে অবাক করে দেওয়া এক গোলে।  বাঁ দিক থেকে বল পেয়ে এমবাপ্পে কাটব্যাক করেন ডেম্বেলেকে। ডেম্বেলে দেন ডানে থাকা গ্রিজম্যানকে। গ্রিজম্যান পাঠান ডি বক্সের সামনে থাকা চুয়োমেনিকে। বল পেয়েই চুয়োমেনি ২৫ গজ দূর থেকে অসাধারণ শটে নিচ দিয়ে বল জডিয়ে দেন জালে। হতবাক হওয়া ছাড়া কিছুই করার ছিল না ইংলিশদের।

গোল খেলেও ইংলিশদের আক্রমণাত্বক ফুটবলের রেশ কমেনি। বল দখলের লড়াই আর আক্রমণ দুটাতেই এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড। তারা ৩টি অন টার্গেটসহ ৫টি শট নিয়েছে। অন্যদিকে ২টি অনটার্গেটসহ ৩টি শট নিয়েছে ফ্রান্স। যার মধ্যে ১টি গোল।

বিরতি থেকে ফিরেই র্যাবিওট ডি বক্সের মাথা থেকে দারুণ একটি শট নেন। বাঁচিয়ে দেন পিকফোর্ড। ৫৪ মিনিটে ডি বক্সে চুয়োমেনি ফাউল করেন সাকাকে। পেনাল্টি পায় ইংলিশ। গতিময় শটে কেন জালে বল জড়াতে ভুল করেননি।

গোলে সমতা আনার পর ইংলিশদের আক্রমণের হার বেড়ে যায়। তবে দুর্ভাগ্য ৭৭ মিনিটে পিকফোর্ড জিরুডের শট ঠেকিয়ে দিলেও পরের মিনিটে হেড থেকে বাঁচাতে পারেননি দলকে।  শেষ দিকে এসে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।

৬ মিনিট পরেই সুযোগ আসে ইংল্যান্ডের সামনে। সূবর্ণ সুযোগ যাকে বলে। কিন্তু যৌথভাবে ইংলিশদের সর্বোচ্চ গোলদাতা হতাশ করে মেরে দেন বারের উপরে। ৫৪ গোল দিয়ে রুনিকে টপকে যাওয়ার সুযোগ হলো না।

যোগ করা সময়ে বাঁশি বাজার আগেও সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। ডি বক্সের সামনে ফ্রান্স ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় তারা। এই বিশ্বকাপেই ফি কিক থেকে অসাধারণ গোল করা রাশফোর্ড এবার আর পারেননি। অল্পের জন্য মিস হয় তার শট। বল চলে যায় ডান কোনা বরাবর বারের উপর দিয়ে।

এই নিয়ে ৭ বার ইংল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যায়। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই রেকর্ড আর কারো নেই। অন্যদিকে ৭বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়নরা। ১৯৮২-১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম টানা দুবার সেমিফাইনালে ওঠে ফ্রান্স।

প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্বক খেলে ইংল্যান্ড। মোট ১৪টি আক্রমণ করে তারা। ৬টি ছিল অন টার্গেট। কিন্তু লরিসকে টলাতে পারেননি সাকা-কেনরা। অন্যদিকে ফরাসিরা আক্রমণ করে ৮টি। ৫টি ছিল অন টার্গেট।

৩২ দল থেকে বিশ্বকাপ নেমে এসেছে ৪ দলে। এবার এমবাপ্পেদের মিশন মরক্কোর জয়রথ থামিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটা। পারবেনতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা?