খেলাধুলা

১৯৯৪: ম্যারাডোনা নিষিদ্ধ, হাসলো ব্রাজিল

আয়োজক: যুক্তরাষ্ট্র, দল: ২৪, ফাইনাল: ব্রাজিল ও ইতালি, জয়ী: ব্রাজিল (৩-২), ইতিহাস: প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল নিষ্পত্তি হয় পেনাল্টি শুটআউটে। ম্যারাডোনাকে নিষিদ্ধ করা হয়। 

ফুটবল বিশ্বকাপের ১৫তম আসর বসেছিল যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি শহরে ১৭ জুন থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত চলে বিশ্বকাপ। ১৯৮৮ সালের ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ব্রাজিল ও মরক্কোও চেয়েছিল  বিশ্বকাপ আয়োজন করতে।  কিন্তু  জুরিখে অনুষ্ঠিত ভোট প্রক্রিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্ধেকেরও বেশি ভোট পেয়ে স্বাগতিক দেশ নির্বাচিত হয়।

ফুটবলে যুক্তরাষ্ট্রের বড় কোনো সুনাম নাম থাকলেও ওই আসর অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে সফল হয়েছিল। এর প্রধান কারণ ছিল মাঠে দর্শক উপস্থিতি। একটি জরিপে আয়োজকরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচে গড়ে ৬৯ হাজার দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রে শেষ পর্যন্ত উড়েছিল ব্রাজিলের পতাকা। ইতালিকে ৩-২ গোলে (পেনাল্টি শুটআউট) হারিয়ে শিরোপা জয় করে সেলেকাওরা। সেবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল নিষ্পত্তি হয়েছিল পেনাল্টি শুটআউটে। ৯০ মিনিটের খেলা অমীমাংসিত থাকে গোলশূন্য ড্রয়ে। অতিরিক্ত সময়েও গোল পায়নি কোনো দল। পেনাল্টি শুটআউটে দুই দল নিজেদের প্রথম শট মিস করে। ব্রাজিল পরের তিনটি জালে পাঠালেও ইতালি পরের চারটি শটে মাত্র দুটি শট জালে পাঠায়। তাতেই স্বপ্নভঙ্গ তাদের। ব্রাজিল চতুর্থবারের মতো জেতে বিশ্বকাপের শিরোপা। গ্রিস, নাইজেরিয়া এবং সৌদি আরব প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেয়।

বিশ্বকাপে ৫২ ম্যাচে মোট গোল হয়েছিল ১৪১টি। ম্যাচপ্রতি গোল হয়েছে ২.৭১টি। বুলগেরিয়ার হিস্ট্রো স্টোয়েচকভ ও রাশিয়ার ওলেগ সালেনকো ছয় গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। এ ছাড়া টুর্নামেন্টে গোল করেছিলেন মোট ৮১ খেলোয়াড়। ব্রাজিলের রোমারিও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। এছাড়া রাশিয়ার মার্ক ওভারমার্স সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের মুকুট অর্জন করেন।

২৪ দলকে ৬ গ্রুপে বিভক্ত করে প্রতি গ্রুপে চার দল রাখা হয়। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল ও তৃতীয় স্থানের সেরা চার দল নিয়ে ১৬ দলের নক-আউট প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়।

একটি কারণে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ বেশ নজর কেড়েছিল। চতুর্থবার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী আর্জেন্টাইন সুপারস্টার দিয়াগো মারাডোনা ওজন হ্রাসজনিত নিষিদ্ধ মাদক এফিড্রিনের রক্তে উপস্থিতি ও মাদক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কৃত হন। কোনোভাবেই এ সিদ্ধান্ত মানতে পারেনি আর্জেন্টিনার সমর্থকরা।  ম্যারাডোনার নিষিদ্ধের সেই কথা আজও মানুষের মুখে মুখে। বুলগেরিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে তার নিষেধাজ্ঞার খবর দেয় ফিফা। ম্যারাডোনাকে হারিয়ে হারিয়ে যায় আর্জেন্টিনাও। শেষ ১৬ থেকে বিদায় নিতে হয় তাদের। অন্যদিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল নিজেদের ঘরে তুলে চতুর্থ শিরোপা।