খেলাধুলা

ক্রিকেটই ওয়াসিমের ধ্যানজ্ঞান, ক্রিকেটেই পড়াশোনা

যতটা জোরে বল করতে পারেন, মন খুলে ততটা কথা বলতে পারেন না মোহাম্মদ ওয়াসিম। প্রশ্ন করা হয় বিশাল, উত্তর এক কথায়! স্লটে পেলে বল উড়াতেও পারেন লোয়ার অর্ডার ব‌্যাটসম‌্যান। কিন্তু পছন্দের প্রশ্নতেও যেন মুখ ফোটে না! তাই জমে ওঠে না সাক্ষাৎকার। তবুও জোর করে ফরচুন বরিশালের এ বিদেশি ক্রিকেটারের কাছ থেকে নিজের ক্রিকেটীয় ভাবনা জানার চেষ্টা করেছেন রাইজিংবিডির ক্রীড়া প্রতিবেদক ইয়াসিন হাসান, 

রাইজিংবিডি: প্রথমবার বিপিএল খেলছেন। কতটা উপভোগ করছেন?

মোহাম্মদ ওয়াসিম:  খুব ভালো অভিজ্ঞতা আমার জন্য। দলের আবহটাও ভালো। আমরা খেলছিও ভালো। সব মিলিয়ে সময়টা ভালোই কাটছে।

দলের সঙ্গে আপনার বোলিংও তো ভালো হচ্ছে? 

মোহাম্মদ ওয়াসিম: এখন পর্যন্ত যা হয়েছে, তাতে সন্তুষ্ট। দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে। আমার কাছে একটা প্রত্যাশা ছিল দলের। সেটা মেটাতে পারছি। 

আপনার ক্রিকেট ক‌্যারিয়ারের গল্প জানতে চাইবো। 

মোহাম্মদ ওয়াসিম: হার্ড বল ক্রিকেট শুরু করি ২০১৬-১৭ এর দিকে। এর আগে আমি টেপ বল ক্রিকেট খেলতাম। আমার সঙ্গে ওয়াসিম আকরামের তুলনা হতো। আমার মধ্যে অনেক প্রতিভা ছিল। তখন অনেকে আমাকে হার্ড বল ক্রিকেট খেলা শুরু করতে বলেছিল। হয়তো সুযোগ হয়েও যেতে পারে। আমি যখন প্রথম হার্ড বলে খেলা শুরু করি, তখন পরিবারের সবাই খেলার ব্যাপারে খুব কঠোর ছিল। তারা পড়াশোনা করতে বলতো। আমি পছন্দ করতাম খেলাধুলা। 

অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে খুব দ্রুত জাতীয় দলে ঢুকে গিয়েছিলেন..

মোহাম্মদ ওয়াসিম: খুব দ্রুত খেলার সুযোগ পেয়েছি, এটা ঠিক। আমি চিন্তাও করিনি যে এত দ্রুত জাতীয় দলে খেলা হবে। অনূর্ধ্ব-১৯ খেলার সময় মনে হতো, জাতীয় দলে অনেক প্রতিযোগিতা। এখানে আমি এত দ্রুত সুযোগ পাবো না। কিন্তু ভাগ্য ভালো দ্রুত সুযোগ পেয়েছি। সেটি কাজে লাগাতে পেরেছি।

পড়াশোনার কথা বললেন। যতটুকু জানি, পেশোয়ারে এসেছিলেন পড়াশোনার জন‌্য। কিন্তু সেখানে ট্রায়াল দিয়ে টিকে যাওয়ার পরই ক্রিকেটে পথ চলা শুরু…

মোহাম্মদ ওয়াসিম: আমি পড়াশোনাও ক্রিকেটে করেছিলাম। এপিসি করেছি, সেটাও ক্রিকেটে। তবে আমার পড়াশোনা নিয়ে একদমই আগ্রহ ছিল না। আমার সব মনোযোগ ছিল খেলায়। আমি এফইসি করেছিলাম মেডিকেলে। এখন বিএসএ ভর্তি হয়েছি। সামনেও পড়াশোনা চালিয়ে যাবো। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত আমার নিজেরই। 

ওয়াজিরিস্তান সম্পর্কে জানতে চাইবো…

মোহাম্মদ ওয়াসিম: আমি ওয়াজিরিস্তান থেকে এসেছি। সেখানে খেলার কোনো অবকাঠামো নেই। সেখান থেকে আমি পেশোয়ার আসি। একা থাকা, ক্রিকেট খেলা, এটা আমার জন্য সহজ ছিল না। আমি বলে বুঝাতে পারবো না সফরটা কতটা কঠিন ছিল।

পাকিস্তান দলে মোহাম্মদ আমির-ওয়াহাব রিয়াজদের মতো বোলারদের আপনারা রিপ্লেস করেছেন। কাজটা কতটা কঠিন ছিল?  

মোহাম্মদ ওয়াসিম: চাপ তো ছিলই। কিন্তু আমাদের সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমরাও সেটা কাজে লাগিয়েছি পারফরম্যান্স দিয়ে। এমন না যে পারফরম্যান্স না করেই পাকিস্তানের হয়ে খেলছি। সে জন্যই আমরা দলে আছি।

আপনার বোলিংয়ে সবচেয়ে শক্তির দিক কী? 

মোহাম্মদ ওয়াসিম: আমার যে অ্যাকশন, সেটা রিভার্স সুইংয়ের জন্য কার্যকরী। আমাকে কিছুটা পুরোনো বল দিয়ে দেখুন, আমি রিভার্স করে দেখাবো। বল যদি একটু বানানো যায়, তাহলে রিভার্স হবে। আমার রিলিজ বল রিভার্সের ক্ষেত্রে কার্যকরী। কিছুদিন আগে ওয়াহাব ভাই আমাকে বলছিল, ‘তোমার রিলিজ ও বোলিং অ্যাকশন খুবই ভালো। এটাকে কখনোই পরিবর্তন করো না।’ রিভার্স সুইং আমার জন্য খুবই কার্যকরী ডেলিভারি। ডেথ ওভারে রিভার্স ও ইয়র্কার আমি সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়ে থাকি।

শেষ দিকে লোয়ার অর্ডার ব‌্যাটসম‌্যানরা টুকটাক রান করলে দলের উপকার হয়। নিজেকে পেস অলরাউন্ডার হিসেবে গড়ে তোলার ইচ্ছা আছে?

মোহাম্মদ ওয়াসিম: আমি বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংও করে থাকি। পাকিস্তানের হয়ে অলরাউন্ডারের ভূমিকা পালন করার স্বপ্ন দেখি।