খেলাধুলা

একশ উইকেট নিয়ে রুবেলের বার্তা, ‘আড়ালে যাইনি’

খুলনা টাইগার্সের ব্যাটসম্যান মার্ক ডেয়াল পেসার রুবেল হোসেনের লেন্থ বল উইকেটে টেনে বোল্ড হলেন। নিজের তৃতীয় উইকেট নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত সিলেট স্ট্রাইকার্সের পেসার। নিজেদের ডাগআউটে আঙুল দিয়ে ইশারা করলেন, ‘একশ’। 

৯৭ উইকেট নিয়ে গতকাল বিপিএলে নিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিলেন রুবেল। নিজের প্রথম ওভারে বালবিরনি ও তামিমের উইকেট পেয়ে যান এ পেসার। হাতছানি ছিল একশ উইকেটের। বিপিএলে এর আগে কেবল সাকিবই যে মাইলফলকে নাম লেখান। ডেয়ালের উইকেট নিয়ে রুবেল তার সঙ্গে এলিট ক্লাবে। নিজের কীর্তিতে দারুণ খুশি ৩৩ বছর বয়সী পেসার, ‘আমি জানতাম আমার তিনটা উইকেট লাগে। উইকেট পাচ্ছিলাম। যখন শেষ উইকেট (একশতম) পেলাম তখন আসলেই খুব ভালো লেগেছে। মনে হচ্ছে আমি দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এমন কিছু করেছি, খুবই ভালো লাগছে।’ 

ডেয়ালের পর রুবেল আউট করেন সাইফউদ্দিনকেও। মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচে রুবেলের সুযোগ ছিল ৫ উইকেট নেওয়ার। তার শর্ট বলে পুল করেছিলেন নাসুম। কিন্তু ফাইন লেগে ক্যাচ ছেড়ে চার বানিয়ে দেন ইমাদ ওয়াসিম। ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন রুবেল। ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট না পাওয়ায় কিছুটা আফসোস রয়েছে বোঝা গেলো তার কথায়, ‘অবশ্যই (৫ উইকেট পেলে ভালো লাগতো কি না)। ৫ উইকেট পাওয়া তো প্রত্যেক বোলারের স্বপ্ন। ব্যাটসম্যানদের যেমন একশ রান স্বপ্ন থাকে, আমাদের বোলাদের জন্য ৫ উইকেটও তেমন। আমি চেষ্টা করেছিলাম। হয়নি, দুর্ভাগ্য আসলে। কিছু করার নেই।’ এজন্য অবশ্য ইমাদের ওপর রাগ নেই তার, ‘ওকে কিছু বলিনি। ও তো চেষ্টা করেছে। কপালে ছিল না আসলে। ভাগ্যের সাথে তো কিছু করার নেই।’  এক সময় দেশের অন্যতম সেরা পেসার ছিলেন  রুবেল। দ্রুততমও ছিলেন। মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বোলিং করতেন। আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট দুই মঞ্চেই পারফর্ম করে টিকে ছিলেন দীর্ঘদিন। এখন বয়স বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কমেছে গতি। সঙ্গে বোলিংয়ের ধার কমেছে। তবে একেবারেই হারিয়ে যাননি। প্রায় দুই বছর আগে জাতীয় দলে শেষ খেলেছিলেন। ২০২১ সালের মার্চে নিউ জিল্যান্ড সফর করেছিলেন। এখনও তার স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলার। ৪ উইকেট নিয়ে এ পেসার তার আকাঙ্ক্ষার কথা বলেছেন, ‘জাতীয় দলে আমি দীর্ঘদিন খেলেছি। স্বপ্ন দেখতে তো দোষের কিছু নেই। স্বপ্ন তো সবাই দেখে। আমিও দেখছি। চেষ্টা করি বা করছি। সামনে আরো খেলা আছে। আমি অসাধারণ কিছু করতে পারলে নির্বাচকরা অবশ্যই মাথায় নেবেন।’ 

‘আমি আড়ালে যাইনি। আমি তো খেলেছি। আমি ওয়ানডেটা খুব উপভোগ করি। এটা আমার হাতে নেই। আমার কাজ পারফর্ম করা। এখানে নির্বাচকরা আছেন। অধিনায়ক আছে। আরো অনেকেই আছে। স্বপ্ন তাদের ওপরেই। আমাদের কাজ ভালো খেলা।’– যোগ করেন রুবেল। 

লাল বলের ক্রিকেট ছেড়ে দিয়েছেন রুবেল। সাদা বলেই এখন তার মনোযোগ। কতদিন ক্যারিয়ার দীর্ঘ করবেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘আমি যতদিন সুস্থ থাকবো, খেলবো। একটা সময় যখন আমি বুঝবো, হচ্ছে না… তখন আমি নিজেই ছেড়ে দেব। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি এখনও সম্পূর্ণ ঠিক আছি।’ 

তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল বোলারদের আগমনে তার জায়গা স্বাভাবিকভাবেই নড়বড়ে। তাদের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার কাজটা কঠিন। তবে ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় সেসব নিয়ে তার আগ্রহ নেই বললেই চলে। এখন খেলাটা যতটা উপভোগ করা যায় সেদিকেই মনোযোগ, ‘এদের সঙ্গে আমার কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। নিজের সঙ্গেই আমার চ্যালেঞ্জ, আমি জানি আল্লাহ আমাকে কতটুকু সক্ষমতা দিয়েছেন। আমি যদি ফিট থাকি, তাহলে আমি মনে করি যেকোনো পর্যায়ে খেলতে পারবো।’