খেলাধুলা

প্রশ্ন কমন পড়লেই বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ভালো খেলে: সালাউদ্দিন

স্থানীয় ক্রিকেটার দুয়েকজন ছাড়া বাকিরা প্রায় সবাই বিপিএলে নিষ্প্রভ। বড় মঞ্চে বড় সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারছেন না। কেউ ব্যাটিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে দল ডুবাচ্ছেন। কেউ বোলিংয়ে রান দিচ্ছেন অনায়েসে। কখনো কখনো ফিল্ডিংও হচ্ছে যাচ্ছেতাই। অথচ বিপিএলে প্রভাব রাখার কথা স্থানীয় ক্রিকেটারদেরই।

না পাওয়ার ভিড়ে প্রাপ্তিও আছে। সাকিব আল হাসান পারফর্ম করছেন নিয়মিত। তৌহিদ হৃদয়, নাজমুল হোসেন শান্তও রান পাচ্ছেন। মোসাদ্দেক হোসেন বোলিংয়ে দলকে ম্যাচ জেতানোর পর আজ ব্যাটিংয়ে ভালো করেছেন। এছাড়া দুয়েকটি মনে রাখার মতো ইনিংস খেলেছেন তামিম, ইয়াসির, আফিফ, সোহান, মুশফিকরা।

তবে সামগ্রিক চিত্রটা নেতিবাচক। এরই মধ্যে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়া খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রামের স্থানীয় ক্রিকেটাররা ভালো না করায় দল ভুগেছে। ব্যক্তিগত ঝলকে দুয়েকটি সাফল্য আসলে লম্বা দৌড়ে অনেকেই পিছিয়ে পড়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের থেকে প্রত্যাশামাফিক পারফরম্যান্স না আসায় বেশ ক্ষিপ্ত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। শুধু নিজের দলের ক্রিকেটারদের কথাই তিনি বলেননি, স্থানীয় সব ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশ তিনি।

মিরপুরে শনিবার তিনি বলেছেন, ‘স্থানীয় খেলোয়াড়দের কাছে আমি একটা সামন্য কমনসেন্স চাই। তাদের যেন একটা কমনসেন্স থাকে। কিন্তু তাদের আসলে কমনসেন্স আছে কি না এটা নিয়ে আমার সন্দেহ। আপনি যদি ১৫ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট মিরপুরে খেলেন, আপনি জানেন যে আপনার আসলে কী করতে হবে। সে কমনসেন্স যদি আপনার না থাকে তাহলে আসলে আমি হতাশ।’

‘বিশেষ করে আমাদের ছেলেরা ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করে কিনা সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ। রিজওয়ানের সঙ্গে আমাদের দেশের অনেক ওপেনার ধরেন বা অলরাউন্ডার ধরেন, তাদের শটসের লিমিটেশন অনেক বেশি বা তারা হয়তো আরও জোরেও মারতে পারে। সব দিকে মারতে পারে, কিন্তু খেলতে গেলে দেখা যায় যে মনে হয় যে উল্টো হচ্ছে।’

‘আমি আরেকটা প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম, আমাদের দেশে অনেকে হয়তো মাথা দিয়ে খেলে, অনেকে খেলে না। বেশিরভাগই মাথা ছাড়া খেলে। আল্লাহ যেদিন মিলাই দেয়, প্রশ্ন কমন পড়ে যায়, সেদিন ভালো খেলে, যেদিন পড়ে না সেদিন ভালো খেলে না। খুবই হতাশাজনক। আপনি যখন ১০-১২ বছর ক্রিকেট খেলছেন তখন সামান্য কমনসেন্স থাকা উচিত কখন কি করতে হবে।’

‘আমার মনে হয় তাদের ক্রিকেট জ্ঞান অনেক কম। সামান্য জিনিস এ উইকেটে আমার কি করতে হবে বা কোন বোলারকে আমি কখন চার্জ করব। যখন সব কিছু আমার নিয়ন্ত্রণে আছে তখন নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কেন! এ বুদ্ধি যদি কারও না হয় তাহলে তারা ক্রিকেট কবে শিখবে উপরওলা জানে।’

ক্রিকেটারদের বড় মানসিকতার ঘাটতির পেছনে কোচদেরও দায় দেখছেন সালাউদ্দিন।

‘আপনার যদি গ্রামার ছোট বেলা থেকে খারাপ থাকে তাহলে তো আপনি ইংলিশ রচনা পড়তে পারবেন না। আমরা আসলে ছোটবেলা থেকে তাদের ওভাবে গড়ে তুলছি। আমরা নিজেরাই সব সময় বেশিরভাগই কোচ নির্ভর খেলোয়াড়, কোচ যেটা বলবে। প্রকৃতপক্ষে ভেতরে গিয়ে তো কোচ খেলবে না, তখনই ব্রেনটা লক হয়ে যায়। সিস্টেমেই গলদ।’

‘কম্পিউটারটায় আসলে সেটআপটা ঠিক মতো হয়নি। ছোটবেলা থেকে সেটআপ ভালো মতো হতো। প্রকৃতপক্ষে তাদের যদি আমরা স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে পারতাম, তাহলে এ সমস্যাটা হতো না। আমরা যারা কোচিং করাই তাদেরই সমস্যাটা বেশি, ছেলেদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। একটা পর্যায়ে এসে ব্রেনটা কাজও করে না। ছোটবেলা থেকে যদি আমাদের কোচিং ম্যাথোড পরিবর্তন করি তাহলে হয়তো কাজে আসবে।’