খেলাধুলা

বাংলাদেশকে উড়িয়ে ধবলধোলাই এড়ালো আয়ারল্যান্ড

বাংলাদেশ: ১২৪/১০ (১৯.২) 

আয়ারল্যান্ড: ১২৬/৩ (১৪ ওভার) 

ফল: আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী। 

সিরিজের শেষ ম্যাচে এসে বড় ব্যবধানে জিতলো আয়ারল্যান্ড। ৩৬ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করে মাত্র ১২৫ রানের লক্ষ্য দেয়। রান তাড়া কর‍তে নেমে স্টার্লিংয়ের ঝড়ো ফিফটিতে সহজেই জয় নিশ্চিত করে। ৪১ বলে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন তিনি। এ ছাড়া ক্যাম্পার ১৬ ও টেক্টর ১৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন তাসকিন-শরিফুল-রিশাদ। বাংলাদেশ সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। 

রিশাদের প্রথম শিকার স্টার্লিং

ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেছে। ১৩তম ওভারে রিশাদের করা অফের বল স্টার্লিং চেয়েছিলেন উড়িয়ে মারতে। ব্যাটে-বলে এক হলো না। লং অনে দৌড়ে গিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন শান্ত। ১০টি চার ও ৪টি ছয়ের মারে আইরিশ অধিনায়ক ৭৭ রান করে আউট হন। তার ব্যাটে জয়ের ভিত পায় সফরকারীরা।

স্টার্লিংয়ের ফিফটি, চোখ রাঙাচ্ছে আয়ারল্যান্ড

রিশাদকে সিঙ্গেল নিয়ে ৩২ বলে ফিফটির দেখা পান স্টার্লিং। শুরু থেকেই আইরিশ অধিনায়ক খেলছেন আগ্রাসী। এক প্রান্তে থেকে রান তুলছেন সমানতালে। ফিফটির পর শরিফুলের এক ওভারে টানা ১ ছয় তিন চারে নেনে ১৯ রান। টেক্টরের সঙ্গে জুটির ফিফটি হয় ৩২ বলে। জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ৫৪ বলে ২৮ রান। 

প্রথম বলেই শরিফুলের উইকেট, লিটনের দারুণ ক্যাচ

বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই শরিফুলের উইকেট। শরিফুলের বেরিয়ে যাওয়া বলে কাভারে খেলতে চেয়েছিলেন টকার। ব্যাটে-বলে ঠিকমতো সংযোগ হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বলে চলে যায় উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে। ৭ বলে ৪ রান করেন টকার। 

শুরুতেই তাসকিনের আঘাত

আয়ারল্যান্ড শুরুটা আগ্রাসীভাবে করে। দ্বিতীয় ওভারে সাকিবকে দুই চারে তুলে নেয় ১০ রান। তৃতীয় ওভারে তাসকিন ভেঙে দেন জুটি। প্রথম ৩ বল ডট দিয়ে চতুর্থ বলে বোল্ড রস অ্যাডেয়ার। তাসকিনের ইয়র্কায়ে ব্যাট চালিয়েছিলেন, কিন্তু লাভ হয়নি। ৭ রান করেন অ্যাডেয়ার। তবে আরেক প্রান্তে মেরে খেলছেন স্টার্লিং। তার সঙ্গী টকার। 

শামীমের ফিফটিতে ভর করে ১২৫ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

৬২ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর একশ হওয়া নিয়ে শংকা জাগে। সেখান থেকে শামীম একা লড়ে গিয়ে ১২৪ রানের পুঁজি এনে দেন। ১৯.২ ওভারে শামীমের আউটে বাংলাদেশ অলআউট হয়। সর্বোচ্চ ৫১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষে দারুণ সঙ্গ দেন নাসুম। দুজনের ৩৩ রানের জুটি বাংলাদেশকে রক্ষা করে। নাসুম ১৩ রান করেন। এ ছাড়া রনি ১৪ ও তাওহীদ ১২ রান করেন। আর কেউ দুই অঙ্কের ঘরের মুখ দেখেননি। আয়ারল্যান্ডের হয়ে ৭ বোলার বল করে প্রত্যেকেই উইকেট নিয়েছেন। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন অ্যাডেয়ার। ২ উইকেট নেন অভিষিক্ত ম্যাথু হ্যামপ্রেজ।

ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে শামীমের প্রথম ফিফটি

অ্যাডেয়ারকে ডিপ মিডউইকেটে ছয়ের পর ফাইন লেগে দারুণ চার। শামীম দেখা পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির। ৪টি চার অ ২টি ছক্কায় ফিফটি করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তাকে এক প্রান্তে আগলে রেখে খেলতে হয়েছে বুঝেশুনে। ব্যাটিং বিপর্যয়ের সময় নেমে হাল ধরেন দলের। তার ব্যাটে ভর করেই বাংলাদেশ একশ পার করতে পারে। 

ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে লড়ছেন শামীম

ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে লড়ছেন শামীম। নাসুমকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েছিলেন। ৬২ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর দুজনের জুটির পথচলা শুরু হয়। এগোচ্ছিলেন সাবলীল ভাবে। ডিলানির লো ফুল টস বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে বিপদে পড়েন নাসুম। এক্সট্রা কাভারে বল চলে যায় স্টার্লিংয়ের হাতে। ১৭ বলে ১৩ রান করেন নাসুম। ভেঙে যায় ৩৩ রানের জুটি। ক্রিজে শামীমের সঙ্গী শরিফুল। একই ওভারের শেষ বল ডিলানি ওয়াইড দিলে বাংলাদেশ দলীয় ১০০ পূর্ণ করে। ১৫.৫ ওভারে ১০০ পূর্ণ হয়। 

ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ, ৬২ রানে নেই ৭ উইকেট

অভিষিক্ত হ্যামপ্রেজের ঘূর্ণিতে বোল্ড হলেন আরেক অভিষিক্ত রিশাদ হোসেন। তাও হ্যামপ্রেজের প্রথম বলে। উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন রিশাদ। কিন্তু ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল চলে যায় উইকেটে। নিজের তৃতীয় বলে ৬ দিয়ে শুরু করা রিশদ থামলেন ৮ রানে। রিশাদের আউটের পর তাসকিন এসে ২ বলও টিকতে পারলেন না। অফের লেন্থ বল টেনে স্লগ সুইপ করেছেন তাসকিন। ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। আসা-যাওয়ার মিছিলে আছেন লাল সবুজের ব্যাটসম্যানরা। ৬২ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ। 

১২ রানে আউট তাওহীদ 

ব্যাটিং ধসের মুখে হাল ধরতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়ও। প্রথম বলে খোঁচা দিয়ে বেঁচে দিয়েছিলেন। এরপর একটি করে চার-ছয়ে বার্তা দেন সাবলীল খেলার। কিন্তু পারলেন না টিকে থাকতে। হোয়াইটের হালকা টার্ন করা বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় করেন। মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ ধরেন টেক্টর। ১০ বলে ১২ রান করেন তাওহীদ। ৪৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে বাংলাদেশ। ক্রিজে শামীম পাটোয়ারি ও অভিষিক্ত রিশাদ। 

উইকেটের মিছিলে সাকিব, পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং ধস

উইকেটের মিছিলে এবার যোগ দিলেন সাকিব আল হাসান। অ্যাডেয়ারকে পয়েন্টে কাট করে দারুণ এক চারের পরই ফিরলেন সাজঘরে। পুল করতে গিয়ে ধরা পড়লেন মিড উইকেটে। ১ চারে ৬ বলে ৬ রান করে ফেরেন সাজঘরে। পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং ধসের কবলে বাংলাদেশ। মাত্র ৪১ রানে হারালো ৪ উইকেট। অথচ প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লেতে রেকর্ড রান করেছিল লাল সবুজের দল। দুই ওপেনার ব্যর্থ হওয়ায় ধসের মুখে পড়ে স্বাগতিকরা।  

লিটন-শান্তর পর রনি!

এবার রনি! আগের দুই ম্যাচের মতো দুর্দান্ত শুরু হলো না বাংলাদেশের। ২৪ রানে হারালো ৩ উইকেট। লিটন-শান্তর বিদায়ের পরও রনিকে দেখা যাচ্ছিল সাবলীল। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ক্যাম্পারের কুইকারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে দাঁড়ানো অ্যাডেয়ারের হাতে তুলে দেন রনি। ৩ চারে ১০ বলে ১৪ রান করেন তিনি। 

হাল ধরতে পারেননি শান্ত 

লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন শান্ত। কিন্তু এক ওভারও যেন কাটাতে পারলেন না। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে স্লগ সুইপে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন ক্যাম্পারের হাতে। ৮ বলে ৪ রান করেন শান্ত। 

বাজে বলে আউট লিটন 

দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে সাজঘরে ফিরলেন লিটন দাস। বাজে বলে আউট হলেন লিটন। অ্যাডেয়ারের আউটসাইড অফের বল ডিপ পয়েন্টে খেলেন লিটন। টাইমিং ঠিক মতো হয়নি, বল যায় ডকরেলের হাতে। প্রথম বলেই চার দিয়ে শুরু করা লিটন থামলেন ৫ রানে। 

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ 

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৩১ মার্চ) দুপুর ২টায় খেলাটি শুরু হয়। ২-০ ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সিরিজ নিশ্চিত করেছে। আজ জিতলেই ধবলধোলাই হবে আইরিশরা। 

বাংলাদেশ একাদশ 

এই ম্যাচে অভিষেক হচ্ছে লেগ স্পিনার রিশাদ হাসানের। একাদশে ফিরেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বিশ্রামে আছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমান। 

একাদশে যারা সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাশ, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, তৌহিদ হৃদয়, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম।

৮০তম ক্রিকেটার রিশাদ 

লেগ স্পিনার সংকট বাংলাদেশের। দীর্ঘদিন ধরে আক্ষেপ ছিল। রিশাদ হোসেনকে দিয়ে সেই জায়গা পুরণের আশায় বাংলাদেশ। ৮০তম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হচ্ছে ২০ বছর বয়সী রিশাদের। এ ছাড়া তিনি তৃতীয় লেগ স্পিনার হিসেবে লাল সবুজের জার্সি গায়ে জড়াতে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালে সবশেষ অভিষেক হয়েছিল আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের। রিশাদকে ক্যাপ পরিয়ে দেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। 

আয়ারল্যান্ড একাদশ

একাদশে এক পরিবর্তন এনেছে আইরিশরা। পেসার গ্রাহাম হুমের জায়গায় অভিষেক হচ্ছে ম্যাথু হামপ্রেজের। 

একাদশে যারা মার্ক অ্যাডায়ার, রস অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্পার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, ম্যাথু হামফ্রেজ, পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট, ফিওন হ্যান্ড।

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো খেলতে চায় বাংলাদেশ 

অস্ট্রেলিয়া, ইংল‌্যান্ডের মতো বড় দল যা করে সাকিব আল হাসান সেদিকেই তাকিয়ে। সিরিজ ২-০ ব‌্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। শুক্রবার শেষ টি-টোয়েন্টি জিতে আইরিশদের কোফিনে শেষ পেরেকটিও ঠুকে দিতে চান। টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন ইংল‌্যান্ড এবং সাবেক বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ টেনে সাকিব বলেছেন, ‘ইংল‌্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দল ২-০ হওয়ার পর চেষ্টা করে প্রতিপক্ষকে ৩-০ ব‌্যবধানে হারাতে। আমরাও সেটা চেষ্টা করবো।’