যুব বিশ্বকাপ চলকালীন অধিনায়ক আকবর আলী সর্বপ্রথম কাজটা করেছিলেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশ যেবার যুব বিশ্বকাপ জিতেছিল সেবার আকবররা বিশ্বকাপ চলাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারেও ছিল সীমাবদ্ধতা।
আকবর সেই দিনগুলোর কথা মনে করে গর্ব করেন এখনও, ‘আমরা কি পরিমাণে ফোকাস ছিলাম ভাবলেও অবিশ্বাস্য লাগে। বিশ্বকাপ জিততেই হবে এমন একটা জেদ থেকে কতো কিছু যে করেছি। নিয়ন্ত্রিত জীবন, আউট অফ দ্য ফিল্ড কিছু চিন্তা না করা, নিজেদের কাজগুলো ঠিকমতো করা।’
সেই দলেরই একজন ছিলেন শাহাদাত হোসেন দিপু। বড় কিছু পেতে হলে কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ছাড়তে হয় তা ভালোভাবেই জানেন দিপু। তাইতো জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার পর মাকে প্রথম সুসংবাদ দেওয়ার পরপরই নিজের ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভ করে দেন। এই মুহূর্তে নিজের মনোযোগ স্থির রাখতেই এবং বাইরের কথা না ভাবতেই এমন সিদ্ধান্ত দিপুর।
গণমাধ্যমে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো না। বিশেষ কারণ আসলে কিছু না। জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি, এখানেই পুরো মনোযোগ রাখতে চাই। বাইরের কোনও কিছু যেন মাথায় না আসে, সেই ভাবনাতো ছিলই।’
দিপুর আগে থেকে সতর্কাবস্থায় যাওয়ার পেছনে বড় কারণ থাকা অস্বাভাবিক নয়। তার পূর্বসূরীদের অনেকেরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। দর্শকদের তীর্যক মন্তব্য, বিদ্রুপের শিকার হয়েছেন হরহামেশা। ট্রলের শিকার হয়ে তাদেরও কেটেছে বাজে সময়। অনাকাঙ্খিত সেসব পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতেই দিপু আগে থেকে সতর্ক।
বেশ কষ্ট করেই দিপু আজ জাতীয় দলে। মাত্র ৯ বছর বয়সে প্রিয় বাবাকে হারান। তিন বছর পর বিকেএসপিতে ট্রায়ালেও টিকেননি। কিন্তু দমে না গিয়ে নিজের বড় ভাই ও মায়ের অনুপ্রেরণা ও চট্টগ্রামের ক্রিকেটার সুদীপ্ত দেবের সাহায্যে দিপু নতুন করে পথ চলতে শুরু করেন। এরপর কেবল সাফল্যের পথে এগিয়ে যাওয়া। নানা পথ পেরিয়ে জাতীয় দলের চৌহদ্দিতে। সুযোগ পেলে নিজের সর্বোচ্চটা উজার করে দেওয়ার পণ তার কণ্ঠে।