খেলাধুলা

বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ: ৩৮২/১০  প্রথম ইনিংসে আফগানিস্তান: ১৪৬/১০  দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ: 8২৫/৪  লক্ষ্য: ৬৬২ দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানিস্তান: ১১৫/১০  ফল: ৫৪৬ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ

আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। রান বিবেচনায় এটি টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে সবচেয়ে বড় জয় ছিল ২২৬ রানে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রায় দেড়যুগ আগে ২০০৫ সালে এই জয় পায় বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি তৃতীয় বড় জয়ের রেকর্ড। ৬৭৫ রানে জয় পেয়ে প্রথম স্থানে আছে ইংল্যান্ড। তবে ১৯৩৪ সালের পর এই প্রথম কোনো দল টেস্টে ক্রিকেটে ৫০০ রানের বেশি ব্যবধানে জয় পেল। ৬৬২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আফগানিস্তান অলআউট হয় মাত্র ১১৫ রানে! সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে রহমের ব্যাট থেকে। আর কোনো ব্যাটার বিশের ঘর পেরোতে পারেনি। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তাসকিন। ৩ উইকেট নেন শরিফুল। 

রিটায়ার্ড হার্টে নাটকের শেষ 

এর আগে দুবার আউট হয়েও আউট হননি জহির খান। শেষ পর্যন্ত তাসকিনের লেগ স্ট্যাম্পে করা শর্ট বলে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন। বাংলাদেশ পেয়ে যায় কাংক্ষিত জয়ের দেখা। এর আগে গতকাল হাশমতুল্লাহ রিটায়ার্ড হার্ট। তার পরিবর্তে আজ ব্যাট করেন বাহির শাহ। তবে তাসকিনের আফসোস টেস্ট ক্রিকেটে তার প্রথম ফাইফার হয়েও হলো না।  

আউট-নট আউট নাটক 

৩৩তম ওভারের তৃতীয় বল। তাসকিনের আউট সাইড অফের ফুল লেন্থ ডেলিভারি জহির খানের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে যায় উইকেটের পেছনে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। পরের রিভিউতে দেখা যায় ব্যাট স্পর্শ করেনি। বাংলাদেশ জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে কিন্তু লাভ হয়নি। পরের বলেই জহির বোল্ড হন। কিন্তু এবার নো-বল। দুই-দুবার আউট, হয়ে গেলো নট আউট। বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা বাড়লো। হলো না টেস্ট ক্রিকেটে তাসকিনের প্রথম ফাইফার। 

মিরাজের পর আবার তাসকিন, আর মাত্র ১ উইকেট  

আউট অফে টার্ন করা মিরাজে  বল পুল করতে চেয়েছিলন হামজা। ব্যাটে-বলে ঠিক হয়নি। বল হামজার গ্লাভস-হেলমেট হয়ে যায় শর্ট লেগে মুমিনুলের হাতে। ৫ রান করেন হামজা। পরের ওভারের প্রথম বলে ইয়ামিনকে ফেরান তাসকিন। মাত্র ১ রান করেন ইয়ামিন। অফ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন ইয়ামিন। এটি তাসকিনের চতুর্থ উইকেট।   

আবার তাসকিনের জোড়া আঘাত 

আউট সাইড অফের শর্ট ডেলিভারিতে পরাস্ত রহমত শাহ। ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন রহমত, কিন্তু দুর্ভাগ্য। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় উইকেটের পেছনে। ৭৩ বলে ৩০ রান আসে রহমতের ব্যাট থেকে। পরের ওভারেই আবার তাসকিনের আঘাত। শর্ট লেন্থের আউটসাইড অফের বল। করিম জানাত ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বল ব্যাট ফাঁকি দিয়ে ভেঙে দেন উইকেট। ১৮ বলে ১৮ রান রান করেন জানাত। বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন আর মাত্র ৪ উইকেট।

 

এবার শরিফুলের আঘাত

ধারাবাহিক বোলিংয়ের পুরস্কার পেলেন পেসার শরিফুল। সকাল থেকেই নির্দিষ্ট চ‌্যানেল ধরে ক্রমাগত আক্রমণ করে যাচ্ছিলেন। অপেক্ষার পর মিলল প্রত‌্যাশিত সাফল‌্য। তার শর্ট বলে ব‌্যাট সরাতে না পেরে গালিতে ক‌্যাচ সহজ ক‌্যাচ দেন আসগর জাজাই। মিরাজের নির্ভার হাতে বল জমে যায় সহজেই। আফগানিস্তান হারাল চতুর্থ উইকেট। রহমত শাহর নতুন সঙ্গী বাহির শাহ। 

জয়ের জন‌্য ৭ উইকেট প্রয়োজন বাংলাদেশের

শনিবার চতুর্থ দিনের শুরুতেই পেসার ইবাদত হোসেন আফগানিস্তান শিবিরে আঘাত করে বাংলাদেশকে সাফল‌্যে ভাসালেন। তার লেন্থ বল লাফিয়ে নাসির জামালের ব‌্যাট ছুঁয়ে যায় উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে। ২২ বলে ৬ রানে শেষ নাসিরের ইনিংস। আফগানিস্তান হারাল তৃতীয় উইকেট। রহমত শাহর সঙ্গে উইকেটে নতুন ব‌্যাটসম‌্যান আফসার জাজাই। 

কঠিন চ‌্যালেঞ্জের সামনে আফগানিস্তান

আফগানিস্তানকে আজ কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। ৬৬২ রানের বিশাল লক্ষ‌্যে তারা ব‌্যাটিং করছে। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পাহাড় সমান এই রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই কোনো দলের।

বাংলাদেশ রেকর্ড রানে জয়ের অপেক্ষায়। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়েকে চট্টগ্রামে ২২৬ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। রানের ব‌্যবধানে এটাই সর্বোচ্চ জয়। দারুণ ছন্দে থাকা বোলাররা অবিশিষ্ট ৮ উইকেট পেতে কম সময় ও কত রান দেন সেটাই দেখার।