দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে খেলা ওয়ানডে ক্রিকেটকে অবশেষে বিদায় জানিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ক্যারিয়ারের শুরুতে অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমনের নেতৃত্বে খেলেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। কেমন ছিল মুশফিকের আগমনি দিনগুলো? কি দেখেই বা বাশার বুঝেছিলেন মুশফিক লম্বা রেসের ঘোড়া?
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত আলাপে বাশার মুশফিকের শুরুর দিনগুলোসহ তার ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেন। পাঠকদের জন্য চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো…
এখন থেকে যদি বিশ বছর আগে ফিরে যাই, মুশফিকের শুরুটা কেমন দেখেছিলেন?
বাশার: মুশফিক টেকনিক্যালি ভেরি সাউন্ড। একদম শুরু থেকে। ব্যাটিংয়ে টেকনিক খুব নিখুঁত ছিল। ব্যাটার কাম উইকেট কিপার। ও খেললে আমাদের একজন ব্যাটার বেশি খেলানো যেতো। ওই সময়ে মুশফিকের আগমন বাংলাদেশ ক্রিকেটে বড় একটা পরিবর্তন এসেছিল। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বাড়তি পাওয়া ছিল।
‘এই ছেলেটা অনেক দূর যাবে’-শুরুতে এটা মনে হয়েছিল কোনো কিছু দেখে?
বাশার: ২০০৫ সালের ইংল্যান্ড সফরের কথা বলবো। অনুশীলন ম্যাচে সে ১০০ করে। অনুশীলন ম্যাচ হলেও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে সেঞ্চুরি দেখে তখনি মনে হয়েছিল ছেলেটা লম্বা রেসের ঘোড়া। ওরকম কন্ডিশনে আমরা স্ট্রাগল করছিলাম। আর ও এসেই এমন খেললো। এই ইনিংসটা কেউ দেখেনি, আমি দেখেছিলাম।
যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচের কথা বলি?
বাশার: আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বলবো ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে। ওই ইনিংসটা তার পথ অনেকটা সহজ করে দিয়েছিল। সে কেমন ক্রিকেটার শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, বিশ্ব ক্রিকেটে একটা বার্তা দিয়েছিল।
অভিষেকের পর কয়েকবছর ধারবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারেননি মুশফিক। এরপর লম্বা সময় ধরে টানা পারফর্ম করছেন। ক্যারিয়ারের দুই ভাগ নিয়ে যদি বলি মুশফিক বেশি সময় পেয়েছেন?
বাশার: আমার মনে হয় প্রথম থেকেই সে এমন একজন ব্যক্তি যে, পারফর্ম করছে আর অবদান রাখছে। সে একজন পারফর্মার... জেনুইন পারফর্মার। মিস্টার ডিপেন্ডেবল পরে উপাধি পেয়েছে কিন্তু সে শুরু থেকেই ভেরি মাচ ডিপেন্ডেবল।
অধব্যসায় আর কঠোর পরিশ্রমের হিসেব করলে মুশফিকের আশেপাশে বাংলাদেশ ক্রিকেটে কেউ নেই। এটা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে কি না?
বাশার: আমি আশা করি তরুণ ক্রিকেটাররা মুশফিকুর রহিমকে দেখে শিখবে। তরুণ ক্রিকেটারদের সামনে জলন্ত উদাহরণ সামনেই আছে। স্কিলতো সবারই কমবেশি থাকে, কিন্তু ক্যারিয়ার লম্বা করতে যে ডেডিকেশন দরকার হয়, সেটার একটা স্ট্যান্ডার্ড সেট করে দিয়েছে মুশফিক।
এমন পরিশ্রমি কাউকে দেখেন এখন? বাশার: তাকে ফলো করে তার কাছাকাছি গেলেও হবে। মুশফিকের কাছাকাছি যেতে পারলেও ক্যারিয়ারে অনেক ভালো করবে। মুশফিক যে মান দাঁড় করিয়েছে সেটাকে অতিক্রম করা যে কারও পক্ষে কষ্ট হবে। এটা বাকিরা ফলো করতে পারবে।
শেষ প্রশ্ন। মুশফিকের রিপ্লেসমেন্ট কে হতে পারে? কার মধ্যে এমন সম্ভাবনা দেখেন? বাশার: একজন মানুষ এতদিন ধরে ক্রিকেট খেলছে তার রিপ্লেসমেন্ট এক কথায় বলা যায় না। মুশফিকের এই জায়গা রিপ্লেস করতে সময় লাগবে। বড় প্লেয়াররা যখন চলে যায় তার শূন্যস্থান পূরণ করতে সময় লাগে। সহজ হয় না।