স্কোর: বাংলাদেশ ১৩৮/২ (১৩.৩ ওভার) নেদারল্যান্ডস ১৩৬/৮ (২০ ওভার) ফলাফল: বাংলাদেশ ৮ উইকেটে জয়ী।
তাসকিন ম্যান অব দ্য ম্যাচ:
বাংলাদেশের জয়ের নায়ক হয়েছেন তাসকিন আহমেদ। বোলিংয়ে তাসকিন আগুন ঝরিয়েছেন। ২৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নেদারল্যান্ডসের রান বড় হতে দেননি তিনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি তার চতুর্থ ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
লিটনের ফিফটির পর সাইফ ঝড়ে জিতল বাংলাদেশ:
লিটন ফিফটি তুলে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। তবে টিকিটের পয়সা উসুল করে দিয়েছেন সাইফ হাসান।
ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১৯ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে শেষ দিকে গ্যালারিতে আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছেন। চার বছর পর জাতীয় দলে ফিরে প্রথমে বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে অবদান রাখেন সাইফ। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে জয়ের পথ মসৃণ করেন ঝড়ো ইনিংস খেলে। তার ছোট্ট ক্যামিও ইনিংসে ছিল ১ চার ও ৩ ছক্কা। লিটন ২৯ বলে ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ইনিংসটি সাজান তিনি।
বোলিংয়ে প্রভাব খাটানোর পর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ ছিল দুর্দান্ত। ব্যাট-বলে দারুণ দিন কাটিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। ৩৯ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছছে বাংলাদেশ। যা বল হাতে রেখে বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
লিটনের ফিফটিতে জয়ের পথে বাংলাদেশ:
মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে জবাব দিচ্ছে বাংলাদেশ। নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক লিটন। বাংলাদেশের অধিনায়ক পেয়ে গেছেন ফিফটির স্বাদ। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ১৩তম ফিফটি। ৫৩ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।
লিটনের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বেঁধেছিলেন তানজিদ হাসান। ৩৯ বলে ৬৬ রান যোগ করেন তারা। আলগা এক শটে সাজঘরে ফেরেন তানজিদ। ২৪ বলে ২ চারে তানজিম ২৯ রান করেন। স্পিনার প্রিঙ্গেলকে উড়াতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার।
উইকেটে লিটনের নতুন সঙ্গী সাইফ হাসান।
লিটন-তানজিদের ব্যাটে জবাব দিচ্ছে বাংলাদেশ:
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর লিটন ও তানজিদের ব্যাটে জবাব দিচ্ছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের মামুলি বোলিং তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। অনায়েস ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যের দিকে ছুটছেন দুই ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লে’তে বাংলাদেশ তুলে নেয় ৫৭ রান। লিটনের ব্যাট হাসছে। এরই মধ্যে ৩ চার ও ১ ছক্কা মেরেছেন। তানজিদ দেখে শুনেই এগিয়ে যাচ্ছেন।
হতাশ করে ফিরলেন পারভেজ:
ভালো শুরুর পর পারভেজ হোসেন ইমনের উইকেট হারাল বাংলাদেশ। অফ স্পিনার আরিয়ান দত্তকে প্রথম ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মেরেছিলেন পারভেজ। অফস্পিনার নিজের দ্বিতীয় ওভারে নিয়ে নেন মধুর প্রতিশোধ। উপচে ফেলেন পারভেজের উইকেট। ভালো শুরুর পর হতাশ করে আউট হলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২৯। উইকেটে তানজিদ হাসানের নতুন সঙ্গী লিটন দাস।
বাংলাদেশের টার্গেট ১৩৭ রান:
টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে লক্ষ্য নাগালে রেখেছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসকে বেশিদূর যেতে দেয়নি লিটনের দল। ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলেছে অতিথিরা। বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৩৭ রান।
দলের সেরা বোলার ছিলেন তাসকিন আহমেদ। চারটি স্পেলে বোলিং করেছেন। প্রতি স্পেলেই পেয়েছেন ১টি করে উইকেট। ৪ ওভারে ২৮ রানে তার শিকার ৪ উইকেট। এছাড়া সাইফ হাসান ১৮ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। চার বছর পর জাতীয় দলে ফিরে দারুণ করেছেন এই অফস্পিনার।
৫১ বল ডট করেছেন বোলাররা। চার ছক্কাও তেমন ছিল না। ১২ চার ও ৩ ছক্কা এসেছে নেদারল্যান্ডস ইনিংসে।
শুরুটা ভালো করলে ডাচরা মাঝে ও শেষটা রাঙাতে পারেনি। তাতে স্কোরবোর্ডে বড় পুঁজি পায়নি। বোলাররা তাদেরকে ম্যাচে ফেরাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
দারুণ বোলিংয়ে চালকের আসনে বাংলাদেশ:
দ্রুত রান তোলার তাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটিং করছে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু ব্যাট-বলে টাইমিং মিলছে না। উইকেট হারাচ্ছে নিয়মিত বিরতিতে। বাংলাদেশের ফিল্ডিংও হচ্ছে যুৎসই। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সঙ্গে গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে ভালো করায় প্রবল চাপে পড়েছে নেদারল্যান্ডস।
১৫ ওভার শেষে ৫ উইকেটে তাদের রান ৯৮। পরের ওভারে শতরানের স্বাদ পেলেও হারিয়েছে আরো একটি উইকেট।
বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে পুল করতে গিয়ে জাকেরের হাতে ক্যাচ দেন শারিয়াজ আহমেদ। তাসকিন নিজের তৃতীয় ওভারে পান আরেকটি উইকেটের স্বাদ। কাইল কেলিন তাসকিনের স্লোয়ার বল উড়াতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন ৯ রানে।
নেদারল্যান্ডসকে চাপে রেখেছে বাংলাদেশ:
পাওয়ার প্লে’র পর প্রতি আক্রমণে গিয়ে দ্রুত রান তুলতে চেয়েছিল নেদারল্যান্ডস। কয়েকটি বাউন্ডারিও এসেছিল। কিন্তু ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ চাপে রেখেছে অতিথিদের।
তাসকিন আহমেদ দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আবার প্রথম বলে উইকেটের স্বাদ পান। তাকে উড়াতে গিয়ে লং অনেক ক্যাচ দেন বিক্রমজিত সিং (৪)। এরপর নিদামিনুরু বিশাল ছক্কা উড়ান তাসকিনকে। অধিনায়ক এডওয়ার্ডস ক্রিজে এসে চার পান রিশাদের বলে।
চমক দেখান সাইফ হাসান। দশম ওভারে বোলিংয়ে এসে পেয়ে যান দুই উইকেট। লিটন স্টাম্পিং মিস না করলে আরো একটি উইকেট পেতে পারতেন ডানহাতি অফ স্পিনার। নিদামিনুরু (২৬) ও এডওয়ার্স (১২) তার শিকার হন।
১০ ওভার শেষে নেদারল্যান্ডসের রান ৬৮। হারিয়েছে ৪ উইকেট।
পাওয়ার প্লে’তে রানের চাকায় লাগাম টেনে ধরল বাংলাদেশ:
শুরুর ৩ ওভারে নেদারল্যান্ডসের রান ২৫। পরের ৩ ওভারে মাত্র ৯। পাওয়ার প্লে’তে নেদারল্যান্ডসের রান ৩৪। হারিয়েছে ১ উইকেট। ম্যাক্স ও’ডউডের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নেদারল্যান্ডস উড়ন্ত সূচনা পায়। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১৫ বলে ২৩ রান করেন ৩ চার ও ১ ছক্কায়।
চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে তাকে থামান তাসকিন। ওই ওভারে খরচ করেন মাত্র ১ রান। পরের দুই ওভারে শরিফুল ও মোস্তাফিজ দেন ৮ রান। তাতে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে আসে বাংলাদেশ।
প্রথম ওভারেই তাসকিনের উইকেট:
শুরুর ৩ ওভারে ২৫ রান তুলে বাংলাদেশ শিবিরে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। তবে বোলিং পরিবর্তনেই বাংলাদেশ পেল সাফল্যের দেখা। তাসকিন আহমেদ নিজের প্রথম ওভার করতে এসে প্রথম বলেই পেলেন উইকেটের দেখা।
শরিফুলকে ৩ চার ও মাহেদীকে ছক্কা উড়ানো ম্যাক্স ও’ ডউড তাসকিনের বলে কাভারে সহজ ক্যাচ দেন। বাড়তি গতি ও সুইংয়ে আটকে যান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। জাকের আলী বাকি কাজ সারেন। চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশ পেল প্রথম উইকেটের দেখা। ওই ওভারে তাসকিন মাত্র ১ রান দেন।
টস জিতে নেদারল্যান্ডসকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল বাংলাদেশ:
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিলেটে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে বোলিং করবে বাংলাদেশ। টস জিতে বাংলাদেশের অধিনায়ক লিটন বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টায় দুই দলের ম্যাচটি শুরু হবে।
সাইফ ফিরলেন চার বছর পর:
জাতীয় দলের স্কোয়াডে ফেরার পর একাদশে জায়গা হলো সাইফ হাসানের। চার বছর পর বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামার সুযোগ পেলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে সবশেষ জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন তিনি।
এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবরে এশিয়ান গেমস খেলেছেন। যা পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মর্যাদা পায়। সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের জার্সিতে। ৫ ম্যাচে কেবল করেছেন ৫২ রান।
বাংলাদেশ একাদশ:
লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, সাইফ হাসান, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী অনিক, শেখ মাহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও রিশাদ হোসেন।
নেদারল্যান্ডস একাদশ:
ম্যাক্স ও’ ডউড, বিক্রমজিত সিং, অনিল তেজা নিদামিনুরু, স্কট এডওয়ার্ডস, শারিজ আহমাদ, নোয়া ক্রোয়েস, কাইল ক্লেইন, টিম প্রিঙ্গেল, আরিয়ান দত্ত, পল ভন ম্যাকরেন ও ড্যানিয়েল ডোরাম।
পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ এগিয়ে:
নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে বাংলাদেশ ৫টি-টোয়েন্টি খেলেছে। ৪টিতে বাংলাদেশ জিতেছে। নেদারল্যান্ডসের জয় ১টিতে।
এশিয়া কাপের প্রস্তুতি বাংলাদেশের, ছাড় দেবে না নেদারল্যান্ডস:
ভারতের বিপক্ষে সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ার পর ফাঁকা স্লট ছিল বাংলাদেশের। নেদারল্যান্ডসকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানালে তারাও সুযোগটি লুফে নেয়। মাসখানেকের বিরতির পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার পরপরই বাংলাদেশ এশিয়া কাপ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজটা বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই প্রস্তুতির মঞ্চ।
তবে নেদারল্যান্ডস কোনো ছাড় দেবে না, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, ভালো ক্রিকেট খেলতে পারলে যে কোনো দলকে আমরা হারাতে পারি। আমরা দেখিয়েছি যে আমরা তা পারি।’’ - বলেছেন দলটির কোচ রায়ান কুক।
অকপট, আত্মবিশ্বাসী হওয়ার বড় কারণ, শেষ বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছিল। বাংলাদেশের সাবেক ফিল্ডিং কোচ সেই কথাটাই মনে করিয়ে দিয়ে আরেকবার হুমকিও দিয়ে রাখলেন, “গত বিশ্বকাপে আমরা ওদেরকে হারিয়েছি। আবার একই গ্রুপে পড়লে (বিশ্বকাপে) আবারও চেষ্টা করব হারাতে।”