ভারতীয় ক্রিকেটের মানচিত্রে নতুন এক গৌরবের অধ্যায় লিখল ঝাড়খণ্ড। আর এই মহাকাব্যিক জয়ের মহানায়ক হয়ে থাকলেন উইকেটকিপার-অধিনায়ক ইশান কিষাণ। মহেন্দ্র সিং ধোনির উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে তিনি কেবল দলকে প্রথমবার সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি জেতালেন না, বরং ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে পেছনে ফেললেন খোদ ‘মাহি’কেও।
বৃহস্পতিবার সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির ফাইনালে হরিয়ানার বোলারদের রীতিমতো শাসন করেছেন ইশান। তার বিধ্বংসী শতকের ওপর ভর করেই ঝাড়খণ্ড ৬৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে হরিয়ানাকে। ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই মর্যাদাপূর্ণ আসরে এটি ঝাড়খণ্ডের প্রথম শিরোপা।
ফাইনালে ব্যাট হাতে নামার পর থেকেই হারিয়ানার বোলারদের কোনো সুযোগ দেননি ইশান কিষাণ। মাত্র ৪৫ বলে ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করে তিনি পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম টি-টোয়েন্টি শতক। ৪৯ বলের এই ক্যামিওতে ছিল ১০টি ছক্কা ও ৬টি চার। এই শতকের মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অভিষেক শর্মার সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির (৫টি) রেকর্ডে ভাগ বসালেন তিনি।
ইশানের এবারের ইনিংস কেবল সেঞ্চুরিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, ছিল রেকর্ডের হাতবদলও। উইকেটকিপার-অধিনায়ক হিসেবে কোনো টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ছক্কার বিশ্বরেকর্ড এখন ইশানের দখলে। পুরো টুর্নামেন্টে ৩৩টি ছক্কা মেরে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনির ২০১৮ আইপিএলে মারা ৩০ ছক্কা ও আইএলটি২০-তে নিকোলাস পুরানের মারা ৩০ ছক্কার রেকর্ড।
ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইশানের ১০১ রানের সৌজন্যে ঝাড়খণ্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৬২ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ দাঁড় করায়। রান তাড়া করতে নেমে হরিয়ানা ১৯৩ রানেই থমকে যায়। ঘরোয়া ক্রিকেটের ১২তম দল হিসেবে এই শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল ঝাড়খণ্ড।
২০২৩ সালের পর থেকে জাতীয় দলের রঙিন পোশাকে দেখা যায়নি ইশানকে। সঞ্জু স্যামসন ও জিতেশ শর্মাদের সাথে যখন লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি, তখন ঠিক মোক্ষম সময়েই এই ইনিংস খেলে নির্বাচকদের দরজায় সজোরে কড়া নাড়লেন তিনি। ভারত ‘এ’ দলের গণ্ডি পেরিয়ে আবারো মূল দলে ফেরার দাবিটা এই ঐতিহাসিক পারফরম্যান্সের পর আরও জোরালো হলো।