ভ্রমণ

সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ, বিজেপির নীলনকশা, সংকটে উপমহাদেশ

চন্দন লাহিড়ী : যুদ্ধাপরাধের বিচারের কয়েকটি রায় কার্যকর হওয়ার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ স্বস্তি পয়েছে। কিন্তু তা ক্ষণস্থায়ী। কেননা এর পরপরই এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর চালানো হয়েছে নির্যাতন। তাদের ভীতি প্রদর্শন, বাড়িঘর ভাঙচুর, মন্দিরে আগুন, প্রতিমা ভাঙচুর, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ এমনকি পোস্টার লাগিয়ে দেশত্যাগের হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এসব ঘটনায় প্রাথমিক অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসনের ঘটনাস্থল পরিদর্শন ছাড়া তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। কিছু ক্ষেত্রে তারা  বিচারের আশ্বাস দিয়েছে বটে, কোথাও আবার অনেক পরে বাড়িঘর নির্মাণসহ কিছু আর্থিক সহায়তাও করেছে- এটুকুই। কিন্তু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, গ্রেফতার এবং শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করারে জোড়ালো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে যারাই জড়িত তারা বিশেষ একটি মতাদর্শের মানুষ। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। এদের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। আবার অনেক সময় এই রাজনৈতিক পরিচয়, প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ের কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তাদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোটকথা, রাষ্ট্রযন্ত্র এখনো স্বমহিমায় নির্যাতিতের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ! ফলে মৌলবাদী শক্তি, অন্যদিকে যারা এ ধরনের সংখ্যালঘু নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, শক্তি বৃদ্ধি করে তারা সংগঠিত হচ্ছে।সরকারের সাফল্য অনেক, তাহলে কেন এই ব্যর্থতার দায়ভার তাদের বহন করতে হচ্ছে? কী কারণ থাকতে পারে এর পেছনে- নেহাত কি অসমর্থতা, না অবহেলা? নাকি আসলে গোটা রাজনৈতিক, সামাজিক পরিমণ্ডলে চলছে দর্শনের দারিদ্র্য? যদি শেষের বাক্যটি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে ভয়াবহ সংকটের দিকেই আমরা হাঁটছি। সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে এমন বিপজ্জনক অবস্থায় সংখ্যালঘুদের জন্য সরকারের শক্ত অবস্থান না থাকায়। ফলে সংখ্যালঘুদের আত্মবিশ্বাসে নতুন করে চিড় ধরছে, বাড়ছে দেশত্যাগের ঘটনা। দেশত্যাগ মানে, পাশের দেশ ভারতে পলায়ন। পলায়ন বলছি কারণ, মাতৃভূমি, ভিটেমাটি, স্বজন সবকিছু ফেলে কেউ তো খুশিমনে চলে যায় না। এমন সংকটের মুখোমুখি হলে আত্মরক্ষার্থে মানুষ আসলে পলায়ন করে। দেশত্যাগ বা পলায়ন যা-ই বলি না কেন, বাংলাদেশি হিন্দুদের ভারতে ঠাঁই দিতে সে দেশের পার্লামেন্টে বিল উঠতে যাচ্ছে। ভারতে এই উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগের হিড়িক পড়বে, অন্যদিকে যারা দেশে থাকবেন তাদের সম্পদ দখলের উদ্দেশ্যে কুচক্রী মহল মরিয়া হয়ে উঠবে। সৃষ্টি হবে আরেকটি অস্থির সময়। গত ১৭ এপ্রিল অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বাংলা ট্রিবিউন’-এ দিল্লি থেকে রঞ্জন বসু লিখেছেন, বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে যে হিন্দু শরণার্থীরা ভারতে আশ্রয় নিতে আসবেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্য একটি বিল পেশ করার কথা বিবেচনা করছে ভারতের বিজেপি সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বাসভবনে বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে একদফা বৈঠক হয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির বরাবরের নীতি হলো, প্রতিবেশী দেশ থেকে যে হিন্দুরা ভারতে আশ্রয় নিতে আসবেন, তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত হবেন। এই নীতিকে তারা মোটেই ‘পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট’ বলে মনে করেন না, বরং কোনো রাখঢাক না করেই বিজেপি নেতারা তাদের এই হিন্দুপ্রীতির বড়াই করে থাকেন। যার ফলে এই প্রস্তাবিত হিন্দু পুনর্বাসন বিল। বস্তুত, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদিও একাধিক জনসভায় বলেছেন, ‘পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে হিন্দুদের যদি বিতাড়িত হতে হয়, তাহলে তাদের যাওয়ার জায়গা আছে একটাই-সেটা ভারত। ফলে হিন্দুরা এলে ভারতকে তাদের আশ্রয় দিতেই হবে। ভারতের কোনো রাজ্যই তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবে না।’এরপর তিনি লিখেছেন, এই ধারাবাহিকতায় এখন এই হিন্দু শরণার্থীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি পাকাপাকি একটা চেহারা দিতেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার তাদের পুনর্বাসনের জন্য নতুন একটি বিল পাস করতে চাইছে। এই বিল যদি ভারতের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়, তাহলে বিদেশ থেকে ভারতে আসা হিন্দুরা সে দেশে বসবাসের আইনি অধিকার পাবেন। বিদেশি হিন্দুদের অধিকার ভারতে সুরক্ষিতই থাকবে। বিলটি আনার জন্য বিজেপির ওপর তাদের অভিভাবক আরএসএস বা সঙ্ঘ পরিবারেরও অবশ্য বেশ চাপ আছে। তিনি লিখেছেন, এই বিল পাস হলে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু পরিবারগুলো এর সুবিধা পাবে। এই বিল পাসের বিষয়ে বিজেপির উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব একমত হয়েছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। প্রস্তাবিত এই বিলের চেহারা কীরকম হতে পারে, তার উল্লেখযোগ্য অংশ হলো : ১. পাকিস্তান বা বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুরাই এই পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্রে তাদের জানাতে হবে, কেন তারা নিজের দেশ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন ২. এই হিন্দুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে ভারত তাদের জন্য নাগরিকত্ব আইনও কিছুটা শিথিল করবে। যেমন, কোনো হিন্দু শরণার্থীর সন্তান যদি বাবা-মায়ের পাসপোর্টে ভারতে ঢুকে থাকে, তাহলে নিজের (বাংলাদেশি/পাকিস্তানি) পাসপোর্ট না থাকা সত্ত্বেও সে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে। এই বিল যখনই পাস হোক, বাংলাদেশের হিন্দু জনসংখ্যার যে অংশটা সে দেশে নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে বলে বিজেপি মনে করছে, তাদের জন্য ভারতে অন্তত একটা ভরসার জায়গা তৈরি করা যাবে বলেই বিজেপির ধারণা। এই দলের শীর্যস্থানীয় একজন নেতার উক্তি মনে পড়ছে। তিনি বলেছেন, ‘কাগজে-কলমে আমরা হিন্দুরাষ্ট্র না হতে পারি, সারাবিশ্বের হিন্দুদের জন্য শেষ রাষ্ট্র যে একটাই, সেটা তো আমরা প্রমাণ করতে পারব।’ এই হচ্ছে উল্লেখিত বিলের মূল কথা। তবে এর আসল উদ্দেশ্য নিহিত আছে বিজেপির অপরাজনৈতিক দর্শনের সঙ্গে। যখন আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন নিপীড়িত মানুষের ছায়ায় আবৃত, তখন আমার জন্য খবরটি অন্ধকারে আশার আলো। এইসঙ্গে এটি আমার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ও বটে। কারণ এ রকম আইন হলে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে গিয়ে অন্তত অমর্যাদাকর জীবনযাপন করতে হবে না। নাগরিকের মর্যাদা অন্তত পাওয়া যাবে। আবার যখন আমি বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মুক্তমনের প্রগতিশীল চিন্তার একজন মানুষ, তখন এটি আমার কাছে একটি সাম্প্রদায়িক শক্তির ফাঁদ। তখন আমি এর বিরোধিতা করি। যে অন্ধকার থেকে আপাতমুক্তির আশায় আলোর দিশার দিকে বা পেছনে ছুটছি তা আসলে আরেকটি অন্ধকার, সে কথাই বারবার তখন মনে হয়। কারণ পৃথিবীজুড়েই মৌলবাদী চক্রের কৌশল, পথ একই রকমের, অভিন্ন। একই কায়দায় এরা ধর্মের বাতাবরণে মানুষকে জিম্মি করে নিজেদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চায়। শেকড়সহ উচ্ছেদ হওয়া কোনো বৃক্ষ কোথাও নতুন মাটিতে রোপিত হলে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। যাই হোক, একজন সংখ্যালঘু মানুষের এটাই হচ্ছে দ্বৈতসত্তা বা মনোজাগতিক অবস্থান। এমন অবস্থায় মানুষকে অন্ধকারের পথ ত্যাগ করে, নিজের শুভ বুদ্ধির ওপর ভর করে এগিয়ে যেতে হয়। মানুষ আসলে কোন পথ বেছে নেবে তা নির্ভর করে সময় ও অবস্থার ওপর। তবে অবশ্যই সব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।বিজেপির এ ধরনের উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য আসলে কী? কেন তারা ভারতীয় পার্লামেন্টে হিন্দুদের স্বার্থ সংরক্ষণের উসিলায় এ বিল পাসের উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে? এটি আসলে একটি নিছক মৌলবাদী রাজনৈতিক চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। এ বিল পাস হলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হিন্দুদের ওপর নতুন করে বাড়বে নির্যাতনের মাত্রা, বাড়বে দেশত্যাগের ঘটনাও। এর পাশাপাশি ভারতের সংখ্যালঘু বলে পরিচিত মুসলিমদের আত্মবিশ্বাসে চির ধরবে, তারা শঙ্কিত হবেন নির্যাতনের আশঙ্কায়। দেশত্যাগী হিন্দুরা দলে দলে ওপারে গিয়ে তাদের পরম ত্রাতা হিসেবে বিজেপিতে নাম লেখাবে। শক্তি বাড়বে বিজেপির। তাদের ভোটব্যাংক বৃদ্ধি পাবে। আর একই সঙ্গে ভারতে হিন্দুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। দেশত্যাগীদের ক্ষোভ, ঘৃণা কাজে লাগিয়ে বিজেপি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা করবে নিজের দেশে। মানে নিজেদের সাম্প্রদায়িকতার বন্দুক তুলে দিবে শরণার্থীদের হাতে। তৈরি হবে আর একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। এই বিল পাসের উদ্যোগ মূলত সে দেশের সংখ্যালঘুদের অস্তিত্বের সংকট প্রকট করবে। অন্যদিকে তারা ভারতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জনগোষ্ঠী বা ভোটারদের বোঝাতে সমর্থ হবে যে তাদের নিপীড়িত স্বজাতিকে রক্ষায় তারা এগিয়ে এসেছে এবং একমাত্র এরাই (বিজেপি) হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।আপাত সাধারণ মানুষের হৃদয়, মন তো নির্যাতিতদের পক্ষেই, আবার তা যদি হয় নিজের সম্প্রদায় বা আত্মীয়স্বজন তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। এই ধারণাটির মধ্য দিয়ে গোটা ভারতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাধারণ ভোটারের মাঝে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প আবার ছড়িয়ে দেবে তারা। গোটা পৃথিবীর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির এটি একটি কৌশল। কারণ বিজেপিই সব সময় যা বলে আসছে, এবার তা করে দেখানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। দেশত্যাগীরা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রতি  বিদ্বেষ নিয়ে ওপারে যাবেন। ফলে ভারতের সংখ্যালঘুদের প্রতি তাদের ঘৃণা বাড়বে। ঘটবে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আবার উসকে দেওয়া হবে সাম্প্রদায়িকতা। সুতরাং এ বিল পাস হলে এর প্রভাব পড়বে গোটা উপমহাদেশে। পৃথিবীজুড়ে ভারতের যে অসাম্প্রদায়িকতার পরিচয় আছে তা মিলিয়ে যেতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না।বিলটি পাসের মধ্যে দিয়ে এ দেশ থেকে হিন্দুদের যদি দেশত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ বা সংখ্যালঘু নিপীড়নকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হবে। যেটি মোটেই কাম্য নয়। খেয়াল করলে আমরা দেখতে পাব যে, রিপোর্টে উল্লেখিত প্রস্তাবিত বিলের এক জায়গায়, যারা দেশত্যাগ করে সেই দেশে যাবেন, নাগরিকত্বের আবেদনপত্রে তাদের জানাতে হবে, কেন তারা নিজের দেশ ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এ প্রশ্নের উত্তরে কেউ নিশ্চয়ই লিখবেন না যে, তাঁরা শখের বশে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। বরং তারা এ দেশ ত্যাগের কারণ হিসেবে যা উল্লেখ করবেন তা আমাদের দেশের জন্য মোটেই সুখকর হবে না। বিভিন্ন ইস্যুতে ভারত এটি ব্যবহার করবে আমাদের দেশের বিরুদ্ধে। তখন নানাবিধ সুবিধা লাভের চেষ্টা করবে তারা। মোদ্দাকথা, বাংলাদেশের ঐতিহ্যগত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যা মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে অর্জিত চেতনা ভুলুন্ঠিত হবে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত, সরাসরি এ ধরনের বিল পাসের বিরোধিতা করা। আর এর পাশাপাশি দেশের সংখ্যালঘুদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য দ্রুত বাস্তবসম্মত, প্রয়োগযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশের সংখ্যালঘুদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা। না হলে এই বিরোধিতাও হাস্যরসে পরিণত হবে। দেশত্যাগের ঘটনা যদি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা যায় তবেই বিলটি বিরোধিতার একটি মোক্ষম যুক্তি উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। আর ব্যর্থ হলে এর সুযোগ নেবে দুই দেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। এর প্রভাব পড়বে উপমহাদেশ জুড়েই। তাই সময় থাকতেই শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এই সংকটজনক পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য। মনে রাখতে হবে, যে সমস্যার গর্ভে আমাদের ঢোকানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে, তা হবে সবার জন্য মরণফাঁদ।সর্বোপরি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরও মনে রাখতে হবে, নির্যাতনকারী বা সাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষের সংখ্যা এ দেশে এখনো নগণ্য বরং এর উল্টো ধারার মুক্তবুদ্ধি ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষের সংখ্যা এখনো অনেক বেশি- যারা বিপদের সময় এগিয়ে আসছে, পাশে দাঁড়াচ্ছে, সংকট মোচনে উদ্যোগী হচ্ছে। সুতরাং দেশের গোটা সম্প্রদায়ের প্রতি ক্ষোভ না রেখে, দেশত্যাগের ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে প্রগতিশীল শক্তির কাতারে দাঁড়াতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে যে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ঢুকে পড়ছে তা রোধ করতে হবে সংগ্রাম করেই। শক্তিশালী করতে হবে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে চলমান উদ্যোগকে। মনে রাখতে হবে, সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা মোকাবিলা করা যাবে না, মোকাবেলা করতে হবে মানুষের হৃদয়ের শক্তি দিয়েই। এ শক্তির জয় অনিবার্য।রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ মে ২০১৫/তাপস রায়