উদয় হাকিম শ্রীলঙ্কা থেকে

ফরহাদ রেজার অভাব বোঝা গেল প্রথম ওয়ানডেতে

উদয় হাকিম, কলম্বো (শ্রীলঙ্কা) থেকে: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দৃষ্টিকটূভাবেই হেরে গেছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটে এরকম জয়-পরাজয় অবশ্য বড় কোনো ঘটনা নয়। গৌরবময় অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে এরকমটা অহরহ ঘটে। কিন্তু শুক্রবারের প্রথম ওয়ানডেতে তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে ফরহাদ রেজাকে।

ইনজুরিতে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি সফর থেকে ছিটকে গেলে স্বাভাবিকভাবে দলে একজন পেসার নেয়ার প্রয়োজন ছিলো। দলে ঢুকেছেন ফরহাদ রেজা, সফিউল এবং তাসকিন। প্রথম ওয়ানডেতে একাদশে জায়গাও পেলেন সফিউল। পেলেন তিনটি উইকেটও। কিন্তু ক্রিকেট এমন একটি খেলা; যেখানে উইকেট বা রানও অনেক সময় শেষ কথা নয়। সবকিছু মিলিয়ে বিচার করতে হয়।

মাশরাফিকে অলরাউন্ডার হিসেবেই জানেন টাইগার ভক্তরা। সুতরাং তার জায়গায় একাদশে একজন বোলিং অলরাউন্ডার দরকার ছিলো। সাইফউদ্দিন হলে ঠিক ছিলো। কিন্তু শফিউলের জায়গায় সম্ভবত ফরহাদ রেজাই হতো বেস্ট চয়েজ। বিশেষ করে গত ক্রিকেট মৌসুমটা দারুন কেটেছে ফরহাদ রেজার। বলা চলে ব্যক্তিগত পারফরমেন্সের তুঙ্গে ছিলেন তিনি। অলরাউন্ড নৈপূন্য দিয়ে ধাঁধিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট ভক্তদের। বিপিএল, বিসিএল, প্রিমিয়ার লীগ- ঘরোয়া ক্রিকেটের সব খানেই তিনি অলরাউন্ড নৈপূণ্য দেখিয়েছেন। যে কারণে নিবার্চকরা তাঁকে আয়ারল্যান্ডের দলে রেখেছিলেন। যদিও মাঠে নামানো হয়নি একটি ম্যাচেও। জায়গা হয়নি বিশ্বকাপের দলেও। শ্রীলঙ্কা সফরে দলে জায়গা পেয়েছেন। থাকতে পারতেন একাদশেও। তবে মাঠে তার অভাব তীব্রভাবেই অনূভব করেছেন টাইগার ভক্তরা।

 

শুক্রবারের ম্যাচে শুরু থেকেই বাংলাদেশ দলের পেসাররা মার খাচ্ছিলেন। একটা পর্যায়ে তা থেকে বাদ যাননি স্পিনাররাও। মোদ্দা কথা স্পিন এবং পেস- দুই বিভাগই অনেকটা অসহায়ের মতো বল করে গেছেন বোলাররা। একমাত্র মিডিয়াম পেসার সৌম্যই একটু সাহস দেখিয়েছেন। খরচে বোলার হিসেবে রুবেল ছিলেন পুরোটাই ফ্লপ। শফিউল তিনটা উইকেট পেলেও দিয়েছেন অনেক রান। ফিল্ডিংয়ে শফিউল, রুবেল, মোস্তাফিজ সবাই ফ্লপ। ব্যাটিংয়ে এরা যে খুব দুর্বল এটা সবারই জানা। আর ওই জায়গাটাতেই ফরহাদ রেজা এগিয়ে। ইনিংসের যে কোনো সময় পেস বোলিংয়ে যেমন কার্যকর; তেমনি দলের প্রয়োজন মতো ব্যাটিংয়েও সিদ্ধহস্ত ফরহাদ রেজা। এমনকি কম বলে বেশি রান নেয়ার চাপের মধ্যেও বুক চিতিয়ে লড়াই করা কিম্বা দল জিতিয়ে আনার মতো ইনিংস খেলতে পারেন তিনি।   

শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামেই রোববার হচ্ছে দ্বিতীয় ওয়ানডে। সেদিন হারলেই সিরিজ খোয়ানো নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। কিন্তু ওই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য দলে পরিবর্তন প্রয়োজন। নির্বাচকরা নিশ্চয় ব্যাপারটি নিয়ে ভাবছেন।

তবে প্রথম ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি ছিলো আত্মবিশ্বাসের। দেরাদুনে আফগানিস্তানের সঙ্গে টি টুয়েন্টি সিরিজেও দেখেছি আত্মবিশ্বাসের অভাবে তিন ম্যাচের সবগুলিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। শুক্রবারের ম্যাচেও বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ভীষণ অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। তামিম, রিয়াদ, মিরাজরা আস্থার প্রতিদান দিতে পারছেন না। অথচ তাঁদের ঘুরে দাঁড়ানো জরুরি।

 

আর তাই, এখন সবার আগে প্রয়োজন জয়ের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা; সেইসঙ্গে যারা নিয়মিত খারাপ করছেন তাদের অবসর দিয়ে ফরহাদ রেজা, তাইজুলদের মতো পরীক্ষীতদের সুযোগ দেয়া।

**

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুলাই ২০১৯/উদয় হাকিম