নির্বাচন

ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধে তাজিকিস্তানে গণভোট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে গণভোট হচ্ছে মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তানে। এ গণভোটে আরো কয়েকটি বিষয়ে জনগণের মতামত নেওয়া হচ্ছে, যা প্রেসিডেন্ট এমোমালি রাখমোনের ক্ষমতা আরো সুসংহত করবে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ১৯৯১ সালে তাজিকিস্তান স্বাধীন হয়। ১৯৯২ সাল থেকে দেশটি শাসন করছেন এমোমালি রাখমোন। তার শাসনামলে পাঁচ বছর গৃহযুদ্ধ হয়। ইসলামপন্থিদের সঙ্গে এক চুক্তির মাধ্যমে ওই গৃহযুদ্ধ শেষ হয় এবং রাখমোনের হাতেই থাকে দেশ শাসনের ক্ষমতা। গত বছর থেকে ইসলামি রেনেসাঁ পার্টি নিষিদ্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ দলটি প্রেসিডেন্ট রাখমোনের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ভূমিকা রেখে আসছে।রোববারের গণভোটে আর যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো- প্রেসিডেন্ট রাখমোন যত বার ইচ্ছা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারবেন। তার বেলায় কোনো ধরাবাঁধা মেয়াদ থাকবে না। অবশ্য তাজিকিস্তানের সংবিধানে সর্বোচ্চ দুই বার প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও রাখমোনের অনুগামী পার্র্লামেন্টে তা সংশোধন করে চার বারে উন্নীতি করা হয়। বর্তমানে চতুর্থ বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রাখমোন। ২০২০ সালে তার মেয়াদ শেষ হবে।  আরো একটি বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তা হলো- প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের বয়সসীমা। প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের সর্বনিম্ন বয়সসীমা ছিল ৩৫ বছর। গণভোটে প্রস্তাব করা হয়েছে তা পাঁচ বছর কমিয়ে ৩০ বছর করার। এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে বিরোধীরা দাবি করছেন। রাখমোনের ছেলে রুস্তমের বয়স এখন ২৯ বছর। রাখমোনের মেয়াদ শেষে যদি তিনি ইচ্ছা করেন তাহলে ছেলেকে প্রেসিডেন্ট পদে বসাতে পারেন। সেক্ষেত্রে বয়সের বাধা আগেই দূর করে রাখছেন তিনি। তাজিকিস্তানের প্রায় ৯৯ শতাংশ লোক মুসলিম। তবে ধর্মীয় আচারণ-অনুষ্ঠান উদযাপন ও পালনে কঠোর নিয়মনিষ্ঠতা মেনে চলতে হয় সবাইকে। অধিকাংশ তাজিক মনে করেন, প্রেসিডেন্ট রাখমোনই দেশ পরিচালনার জন্য সঠিক লোক। ফলে ইসলামপন্থিরা সেখানে সুবিধা করতে পারে না। মধ্য এশিয়ায় অন্যতম দরিদ্র দেশ তাজিকিস্তান। পাহাড়-পর্বতঘেরা এ দেশের অর্থনীতি জনশক্তি রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল। তাজিকরা সাধারণত কাজের খোঁজে রাশিয়ায় যায় এবং রাশিয়াই তাদের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস। এ কারণে তাজিকিস্তানে রাশিয়ার প্রভাব রয়েছে। তাজিকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত রয়েছে। আশঙ্কা করা হয়, আফগানিস্তানের জঙ্গি তৎপরতা দেশটিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মে ২০১৬/রাসেল পারভেজ