জাকির হুসাইন : ‘বাড়িতে টেলিভিশন না থাকায় স্ত্রী অন্যের বাসায় টিভি দেখতে যায়। এটা আমার কাছে পীড়াদায়ক। কিন্তু টাকার কারণে টিভি কিনতে পারছিলাম না। শেষমেষ কিস্তিতে টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম। মাত্র ৫ হাজার টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ওয়ালটনের একটি এলইডি টিভি কিনি। অবাক ব্যাপার! সেই টিভি কিনেই এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছি। আমার জীবনে এমন খুশির খবর আর কখনো আসেনি।’ আবেগতাড়িত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের খোরশেদ আলম। গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে ওয়ালটনের ডিলার শোরুম মোহনা ইলেক্ট্রনিকস থেকে ৩২ ইঞ্চি এলইডি টেলিভিশন কিনে লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পান তিনি, যা দিয়ে কিনেছেন ওয়ালটনের এসি-ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় সব ইলেকট্রনিকস পণ্য। খোরশেদ আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার বারপাড়া ইউনিয়নের জঙ্গল গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি মেজ। মা-বাবা, স্ত্রী ও ভাইবোনদের নিয়ে যৌথ পরিবার তার। লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে টিভি সব পরিবারের জন্য খুবই দরকারি। আমাদেরও একটি টিভি ছিল। কিন্তু সেটি সম্প্রতি আমার ছোট ভাই রাগের মাথায় ভেঙে ফেলে। তারপরে আর টিভি কেনা হয়নি। প্রায়ই স্ত্রী আমাকে টিভি কেনার জন্য চাপ দিত। কিন্তু মুখে বললেই তো আর হয় না। এর জন্য টাকার দরকার।’ তিনি বলেন, ‘আমি বাড়ির পাশে এসকিউ ওয়ার অ্যান্ড কেবলস ফ্যাক্টরিতে কাজ করি। যা বেতন পাই তা দিয়ে বড় পরিবারের খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই টিভি কেনার ব্যাপারে একটু গড়িমসি করি। কিন্তু যখন দেখলাম আমার স্ত্রী শুধু টিভি দেখার জন্য অন্যের বাড়িতে যাতায়াত করছে, তখনই টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নিই।’
লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য ওয়ালটন পণ্য নিয়ে মহাখুশি খোরশেদ আলম
খোরশেদ জানান, আগে থেকেই ওয়ালটন টিভি কিনবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন। কোম্পানিটি সম্পর্কে আমার অনেক আগে থেকেই ধারণা রয়েছে। আমি নয় বছর মালয়েশিয়াতে ছিলাম। তখন থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশের খোঁজখবর নিতাম। সে সময় ওয়ালটনের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে। বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। তখন থেকেই আমি ওয়ালটনের ভক্ত। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাড়ি ফিরে আসি। বাড়িতে এসেই ওয়ালটনের একটি ফ্রিজ কিনি। প্রায় চার বছর হয়েছে এখনো পর্যন্ত ফ্রিজে কোনো সমস্যা হয়নি। এতে ওয়ালটনের প্রতি আমার বিশ্বাস ও আস্থা আরো বাড়ে। এ কারণে টিভি কেনার ক্ষেত্রে কোন কোম্পানির টিভি কিনব, তা নিয়ে ভাবতে হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন পণ্য কিনে লাখ টাকা পাওয়ার সুযোগ আছে, এমন তথ্য আমার জানা ছিল না। শোরুমের কর্মকর্তারাই জানিয়েছেন। তাদের কথামতো রেজিস্ট্রেশন করে টিভি নিয়ে বাসায় যাই। বাসায় টিভি রেখে কাজে যাই। কাজের চাপ থাকায় এসএমএস দেখতে পারিনি। এ সময় কেউ ফোন দিলেও ধরতে পারি না। পরে রাতে শোরুমের কর্মকর্তারা ফোন দেন। তারা বলেন, ‘আগামীকাল আপনি একটু শোরুমে আসবেন। কারণ জানতে চাইলে বলেন, আপনি লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন। ফাজলামি মনে করে ফোন কেটে দেই।’ খোরশেদ বলেন, ‘তৃতীয়বার তাদের ফোন ধরি। তারা বলেন, আপনি সত্যি সত্যিই ভাগ্যবান। আর বিষয়টি পুরোপরি নিশ্চিত হওয়ার পর আমার যে কী আনন্দ লাগে তা বলে বুঝাতে পারব না। আর যখন পরের দিন উপহার তুলে দেন, তখন আমি আমার নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। তখন আমার শরীর কাঁপছিল। মুখে কোনো কথা আসছিল না। কেমন যেন লাগছিল তা আমি নিজেও বুঝতে পারছিলাম না। আমার জীবনে এমন খুশির খবর আর কখনো আসেনি। যেখানে জীবনে কখনো একটি টাকাও পাইনি, সেখানে লাখ টাকা! এজন্য ধন্যবাদ ওয়ালটনকে।’ খোরশেদ জানান, লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে তিনি এসি, ফ্রিজসহ সংসারের প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য কিনেছেন। গত বুধবার তার হাতে ক্যাশ ভাউচারের টাকায় কেনা পণ্য তুলে দেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শাহ শহীদ, নারায়ণগঞ্জ সার্ভিস সেন্টারের ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম এবং মোহনা ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী খোরশেদ আলমসহ অন্যান্যরা। উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৭/অগাস্টিন সুজন/সাইফুল