ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন

ওয়ালটন পণ্য : কুতুবউদ্দিনের বাড়িতে শত মানুষের ভিড়

জাকির হুসাইন : গরিব পরিবারে জন্ম মো. কুতুবউদ্দিনের। ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন। এরপর জীবনযুদ্ধে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। পরিণত বয়সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধও হয়েছেন। কাজ করছেন একটি দর্জির দোকানে। তারপরও অভাব তাকে ছাড়ছে না। সেই কুতুবুদ্দিনের বাড়িতে এখন ফ্রিজ-টিভিসহ ঘরভর্তি ওয়ালটন পণ্য, যা দেখতে শত শত মানুষ আসছেন তার বাড়িতে। কুতুবউদ্দিনের বাড়ি পাবনার সাথিয়া উপজেলার পূর্ব ভবানীপুরে (কালাইচারা)। গত ১৪ ডিসেম্বর সাথিয়ার মডার্ন ইলেকট্রনিকস থেকে তাকে একটি ফ্রিজ কিনে দেন তার চাচা। যা খুলে দেয় তার সৌভাগ্যের দুয়ার। সেই ফ্রিজ কিনেই লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন কুতুবউদ্দিন। রাইজিংবিডিকে কুতুবউদ্দিন জানান, দুই ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর কুতুবউদ্দিনের চাচা মো. তৌহিদ আলী তার দেখভাল করেন। তৌহিদ আলী পাবনা ভূমি অফিসের নায়েব। এই চাচাই নিজের টাকা দিয়ে সন্তানতুল্য কুতুবউদ্দিনকে একটি ফ্রিজ কিনে দেন। সেই ফ্রিজ কিনেই এক লাখ টাকা ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন তারা, যা দিয়ে টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান, রাইস কুকার, প্রেসার কুকার, ওভেনসহ ঘরভর্তি পণ্য পেয়েছেন কুতুবউদ্দিন। কুতুবউদ্দিনের অবিভাবক তৌহিদ আলী জানান, সেসব পণ্য ও ভাগ্যবান কুতুবউদ্দিনকে দেখতে তার বাড়িতে প্রতিদিন শত শত লোক ভিড় করছেন। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার দিনই ৫ শতাধিক লোকের সমাগম হয়। কুতুবউদ্দিন বলেন, ‘আমরা খুবই গরিব। দর্জির কাজ করে কোনোমতে জীবন যাপন করি। টিভি-ফ্রিজের মতো দামি জিনিস কেনার সামর্থ নাই। বাবা মারা যাওয়ার পর আমার এক বোন মো. তৌহিদ আলীকে ধর্ম পিতা বানিয়েছেন। প্রকৃত অর্থে পিতার পরেই তিনিই আমাদের অভিভাবক। আমার অসহায়ত্ব দেখে তিনি ২৪ হাজার ৩০০ টাকা দিয়ে আমাকে ১১ সিএফটি সাইজের একটি ফ্রিজ কিনে দেন।’ তিনি বলেন, ‘ওয়ালটন ফ্রিজ কিনলে পুরস্কার পাওয়া যাবে, এই খবর আমাদের আগে জানা ছিল না। শোরুমের কর্মকর্তাদের কাছে শুনে নিয়ম অনুযায়ী চাচার মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করি। কিছুক্ষণ পরে চাচার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। মেসেজটি পড়ে তিনি বলেন, এতে এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার লেখা আছে। ঘটনা কী জানতে চাইলে কর্মকর্তরা বলেন, আপনারা ভাগ্যবান। আপনারা ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে এক লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পেয়েছেন।’ কুতুবউদ্দিন আরো বলেন, ‘এই সংবাদ শুনে আমার তখন কেমন লেগেছিল, তা আমি বলতে পারব না। তবে এতটুকু বলতে পারি, এই খবর আমার জীবনে সেরা খবর। এ পুরস্কার পাওয়ায় আমার সকল আত্মীয়-স্বজন মহাখুশি। তবে বেশি খুশি আমার অভিভাবক চাচা।’ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে কী কিনেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। চাচার টাকায় ফ্রিজ কিনে পুরস্কার পেয়েছি। তাই এ পুরস্কার দিয়ে টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান, রাইস কুকার, প্রেসার কুকার, ওভেনসহ অনেক কিছু কিনেছি। এর থেকে চাচাসহ আমার ভাই-বোনদের কিছু উপহার দেব।’ এদিকে মডার্ন ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুর রহমান জানান, লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার প্রাপ্ত কুতুবউদ্দিনকে তার পছন্দের পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে ফুলের মালা পরিয়ে গাড়িতে করে তার লাখ টাকার পণ্যসহ বিজয় বেশে পুরো পাবনা জেলায় ঘুরানো হয়েছে। এতে এলাকায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ ডিসেম্বর ২০১৭/অগাস্টিন সুজন/সাইফুল