ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইন

স্ত্রীর জন্য ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে ভাগ্যবান অটোরিকশাচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বিয়ের পর প্রায় দিনই আকার-ইঙ্গিতে ফ্রিজ কেনার কথা বলত আমার বোবা (বাকপ্রতিবন্ধী) স্ত্রী। টাকা না থাকায় আমি ছিলাম অসহায়। কিন্তু স্ত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে যেভাবেই হোক ফ্রিজ কেনার সিদ্ধান্ত নিই। আল্লাহর কী লীলা, দেখেন! মাত্র ৮ হাজার টাকা দিয়ে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনেই পেয়েছি ১ লাখ টাকার পুরস্কার। প্রতিবন্ধী স্ত্রীর জন্য ফ্রিজ কেনায় আল্লাহ আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছেন।’ ওপরের কথাগুলো মো. শাহজাহানের। পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার দোয়াখোলার বাসিন্দা তিনি। তিন বছরের এক মেয়ে এবং বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে তার ছোট পরিবার। ওয়ালটন ডিজিটাল ক্যাম্পেইনে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শাহজাহান বলেন, ‘অনেক দুঃখ-কষ্টের সংসার আমাদের। এর সঙ্গে আমার সংসারে যোগ হয়েছে বোবা স্ত্রী। সারা দিন গাড়ি চালিয়ে ঘরে এসে বউয়ের সঙ্গে একটু কথা পর্যন্ত বলতে পারি না আমি। আকার-ইঙ্গিতে যতটুকু পারি, তাতে সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তাতে আমার কোনো আফসোস নাই। কারণ, আমি জানি, এটা আমার কপালে ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের আশপাশে বেশিরভাগ বাড়িতে ফ্রিজ আছে। বোবা হওয়ায় স্ত্রী তাদের ফ্রিজে কিছু রাখতে গেলে নানা সমস্যা হয়। সে কারণে আকার-ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে সে প্রায়ই ফ্রিজ কেনার কথা বলে। কিন্তু ভাড়া করা সিএনজি চালিয়ে যা আয় হয়, তাতে খরচ বাদ দিয়ে বেশি টাকা থাকে না। ফ্রিজ কিনব কীভাবে?’ শাহজাহান জানান, তার বাড়ির আশপাশে অনেকেই ওয়ালটনের ফ্রিজ ব্যবহার করে। তাদের কাছ থেকে শোনেন যে, এই কোম্পানির ফ্রিজ ভালো সার্ভিস দেয়। আরো জানতে পারেন, কিস্তিতে ফ্রিজসহ বিভিন্ন পণ্য দেয় ওয়ালটন। যা বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে তাকে আশার আলো যোগায়। অনেক কষ্টে কিছু টাকা জোগাড় করেন তিনি। পরে রাসেল নামের এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গত ২০ ডিসেম্বর মুক্তাগাছা ওয়ালটন প্লাজায় যান শাহজাহান। সেখান থেকে ১১ সিএফটি আয়তনের একটি ফ্রিজ পছন্দ করেন। যার দাম ২৬ হাজার ২৪৪ টাকা। ৮ হাজার টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ফ্রিজটি কেনেন তিনি। বাকি টাকা ১২ মাসের কিস্তিতে পরিশোধ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। শাহজাহান বলেন, ‘ফ্রিজ কেনার সময় শোরুমের কর্মকর্তারা আমার মোবাইল নাম্বার দিয়ে কী যেন করে। তারা বলেন, এতে নাকি উপহারও আছে। ভাগ্য ভালো হলে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাবে। সেখান থেকে ফ্রিজ নিয়ে আমি বাড়িতে যাই। পরে গাড়ি চালাতে বের হই।’

মো. শাহজাহানের হাতে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার ও অন্যান্য ওয়ালটন পণ্য তুলে দেওয়া হচ্ছে

শাহজাহান জানান, এ সময় তার মোবাইলে একটা মেসেজ আসে। কিন্তু তিনি মেসেজ পড়তে জানেন না বলে তাতে কী লেখা আছে, তা দেখেননি। এরপর ওয়ালটন প্লাজা থেকে ফোন করে তাকে ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার খবর জানানো হয়। কিন্তু শুরুতে সেটা তিনি বিশ্বাস করেননি। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, ‘আপনারাই বলেন, এটা আজগুবি কথা না? ফ্রিজ কিনেছি মাত্র ৮ হাজার টাকা দিয়ে। বাকি টাকা এক বছরে দেব। আর সেই ফ্রিজ কিনে আমি নাকি ১ লাখ টাকা পেয়েছি। এটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। আমিও করিনি। কিন্তু শোরুম থেকে আবার ফোন করে সেখানে যেতে বললে গিয়ে দেখি সত্যিই আমি ভাগ্যবান।’ শাহজাহান বলেন, ‘আমার মতো গরিব মানুষ ১ লাখ টাকার পুরস্কার পাবে, এটা ভাবতেও আমার মনে ভয় লাগছে। ১ লাখ টাকার পণ্য বুঝে পাওয়ার পরেও আমার মন থেকে ভয় কাটছে না। সব সময় মনে হচ্ছে, আমার কাছ থেকে কি আবার পণ্যগুলো কেড়ে নেবে নাকি।’ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার দিয়ে কী কী পণ্য কিনলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনরে কোনো দিন কিছু দিতে পারি নাই। তাই এ পুরস্কার থেকে আমার আত্মীয়-স্বজনদের কিছু উপহার দিতে চাই। এ কারণে পুরস্কারের এ টাকা দিয়ে অনেক কিছু কিনেছি। এর মধ্যে আছে আরেকটি ফ্রিজ, টিভি, সাতটি মোবাইল, রাইস কুকার, ফ্যান ও আয়রন। ফ্রিজটা মাকে দিয়েছি। মোবাইলগুলা আমার মা, স্ত্রী, শাশুড়ি, ভাই, বন্ধু রাসেল এবং এক চাচাতো ভাইকে দিয়েছি। এগুলো পেয়ে সবাই মহাখুশি। সবচেয়ে বেশি খুশি আমার স্ত্রী। আমি ওয়ালটন কোম্পানি ও তার সকল কর্মকর্তাদের জন্য দোয়া করছি। একই সঙ্গে ওয়ালটনের সফলতা কামনা করি।’ উল্লেখ্য, ক্রেতাদের দোরগোড়ায় অনলাইনে দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা দিতে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করেছে ওয়ালটন। এই কার্যক্রমে ক্রেতাদের অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রতিদিন দেওয়া হচ্ছে নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। ওয়ালটন প্লাজা এবং পরিবেশক শোরুম থেকে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি মূল্যের পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করে সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকার ক্যাশ ভাউচার পাচ্ছেন ক্রেতারা। ক্যাশ ভাউচার পাওয়ার এই সুযোগ থাকবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ ডিসেম্বর ২০১৭/অগাস্টিন সুজন/রফিক