ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার টি২০ লিগ

ফরহাদের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে প্রাইম দোলেশ্বর ফাইনালে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : প্রথমে বল হাতে পাঁচ উইকেট এবং পরে ব্যাট হাতে ঝোড়ো ব্যাটিং করে প্রাইম দোলেশ্বরকে ফাইনালে তুলেছেন ফরহাদ রেজা। মিরপুর শের-ই-বাংলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। ৪ মার্চ ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির ফাইনালে প্রাইম দোলেশ্বরের প্রতিপক্ষ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। প্রথম সেমিফাইনালে তারা ৫ উইকেটে হারিয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে। আগে ব্যাটিং করে প্রাইম ব্যাংক ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান জমা করে। জবাবে ২ বল আগে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে প্রাইম দোলেশ্বর। দোলেশ্বরকে বিশাল লক্ষ্য দিয়ে ১৭ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিল প্রাইম ব্যাংক। পরের দুই ওভারেই প্রাইম ব্যাংকের সব ওলটপালট হয়ে যায়। ১৭তম ওভারে দোশ্বেরের রান ছিল ২ উইকেটে ১২৮। জয়ের জন্য ১৮ বলে ৪৩ রান লাগত তাদের। আল-আমিনের করা ১৮তম ওভারে ফরহাদ ১৬ ও মার্শাল ৩ রান তুলে দলকে এগিয়ে নেন। ১৯তম ওভারে মার্শাল এক ছক্কা মেরে আউট হলেও ফরহাদ এক ছক্কাসহ তোলেন ১০ রান। সব মিলিয়ে ‍দুই ওভারে ৩৫ রান তুলে লক্ষ্য নাগালে নিয়ে আসে প্রাইম দোলেশ্বর। বাকিটা পথ খুব সহজেই পাড়ি দেয় দোলেশ্বর। ৮ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৪ রান করেন ফরহাদ। তার সঙ্গে ৫ বলে ৮ রানে অপরাজিত থাকেন সৈকত। লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৫১ রান তোলেন সাইফ হাসান ও মোহাম্মদ আরাফাত। বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক এ জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ আরাফাতকে ফিরিয়ে। ক্রিজে আসা ফরহাদ হোসেন টিকতে পারেননি। ১ রানে মনির হোসেনকে ফিরতি ক্যাচ দেন। তৃতীয় উইকেটে মার্শাল আইয়ুব ও সাইফ হাসান ৭৬ রানের জুটি গড়েন ৫৩ বলে। এ জুটিতেই জয়ের ভিত পায় প্রাইম দোলেশ্বর। দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান শুরুতে দলের রান এগিয়ে নেন সিঙ্গেলস ও ডাবলসে। উইকেটে থিতু হয়ে আক্রমণ চালান বোলারদের ওপর। ৪২ বলে সাইফ তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। হাফ সেঞ্চুরির পর আরও ১২ রান যোগ করে সাজঘরে ফেরেন রান আউটে। ৩১ বলে ৪৬ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দেন মার্শাল। এরপর ফরহাদের শেষ ঝড়ে সহজেই জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে প্রাইম দোলেশ্বর। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ২৩ রান তুলতেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। রুবেল মিয়া ৯ রানে স্পিনার সানীর বলে ক্যাচ দেন মার্শালের হাতে। অধিনায়ক এনামুল এক চার ও এক ছক্কা মেরে ভালো শুরু করেছিলেন। কিন্তু তার ইনিংসটি থামে আরাফাতের ঘূর্ণিতে। তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন। এরপর আল-আমিন (৬), আরিফুল (৩) ও নাজমুল হোসেন মিলন (৯) হতাশ করেন। আল-আমিন ফরহাদের বলে ক্রস করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। আরিফুলকে বোল্ড করেন এনামুল হক জুনিয়র। আর নাজমুল এনামুলের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন সৈকতের হাতে। তবে একপ্রান্ত আগলে ব্যাটিং করে যান পুচকে জাকির হোসেন। উইকেটের চারিপাশে শট খেলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ৭১ রান তুলতেই প্রাইম ব্যাংক হারায় ৫ উইকেট। সেখান থেকে জাকিরকে সঙ্গ দেন অলোক কাপালি। দুজন দারুণ কয়েকটি শটে রানের চাকা সচল রাখেন। ১৪তম ওভারে দলীয় শতরানের স্বাদ পায় প্রাইম ব্যাংক। ৩৭ বলে জাকির তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। কিন্তু মাইলফলক ছোঁয়ার পরপরই সাজঘরের পথ ধরেন এ ব্যাটসম্যান। ফরহাদ রেজার ফুলটস বল তুলে মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে লং অনে ক্যাচ দেন ৫২ রানে। ৩৯ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। এরপর প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস একাই টানেন অলোক কাপালি। বাহারি শটে মাঠ মাতিয়ে রাখেন এ ব্যাটসম্যান। ফরহাদ রেজার চতুর্থ শিকারে পরিণত হওয়ার আগে অলোক ৩১ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৫৫ রান। নিজের স্পেলের শেষ বলে ফরহাদ রেজা বোল্ড করেন মনির হোসেনকে। এ উইকেট নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেটের স্বাদ পান ফরহাদ। এরপর ব্যাটিংয় ঝড় তুলে ফরহাদ রেজা পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল