ইয়াসিন হাসান ইংল্যান্ড থেকে

দুই ‘বুড়ো’র বিশ্বকাপ লড়াই!

টনটন থেকে ইয়াসিন হাসান : একজনের বসয় ৩৪, আরেকজনের ৩৯। দুজনের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হয়েছিল একই সঙ্গে, ২০০৩ সালে। শেষ হচ্ছে ২০১৯ দিয়ে। মাঝে একজন একটি বিশ্বকাপ খেলেননি চোটের কারণে। আরেকজন ২০০৩ সালের পর কোনো বিশ্বকাপ মিস করেননি। বলতে পারবেন তারা কোন দুইজন? ক্রিকেট নিয়ে যাদের আগ্রহ খুব বেশি, তারাও হয়তো দ্বিধায় পড়ছেন! আসি-আসি করেও মুখে নামটা আসছে না? অপেক্ষায় রাখছি না। তারা দুজন আর কেউ নন, ক্রিস গেইল ও মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২০০৩ বিশ্বকাপ খেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবল গেইল ও মাশরাফি খেলছেন এবারের বিশ্বকাপে। যদি এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে ‘বুড়ো’ ক্রিকেটারের নাম জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে এই দুজনের নাম তো আসবেই। বিশ্বকাপে সবচেয়ে ছোট মাঠ টনটনে সোমবার মাঠে নামবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইন ফিল্ড ও অফ ফিল্ডের দুই বন্ধু এবার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বিশ্বকাপের মঞ্চে। বিপিএলে একই দলে খেলার কারণে দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে সখ্যতা। দুজন দুজনের সঙ্গ উপভোগও করেন দারুণ।  ইন ফিল্ড ও অফ ফিল্ডে পারস্পারিক বোঝাপড়াটাও ভালো। কিন্তু জাতীয় দলের জার্সিতে দুজনই প্রবল প্রতিপক্ষ।  বিশ্বকাপ মঞ্চেও দেখা মিলবে সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার। দুই বন্ধুর বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে। গেইল এরপর টানা খেলে গেছেন। ঘরের মাঠে ২০০৭ বিশ্বকাপের পর ২০১১, ২০১৫ বিশ্বকাপ খেলেছেন স্বঘোষিত ‘ইউনিভার্স বস’।  মাশরাফি ২০০৩ বিশ্বকাপের পর ২০০৭ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন। ঘরের মাঠে ২০১১ বিশ্বকাপ মিস করেছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। ২০১৫ সালে আবার বিশ্বকাপে ফেরেন। খেলে যাচ্ছেন এখনো।

দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ পড়েছিল এক গ্রুপে। কিন্তু ওই বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ খেলা মাশরাফির সুযোগ হয়নি ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে নামার। চোটের কারণে দল থেকে বেরিয়ে যান নড়াইল এক্সপ্রেস। বাংলাদেশের বিপক্ষে অবশ্য রান পাননি গেইল।  পেসার মাঞ্জারুল ইসলামের বলে আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। দুজনের প্রথম সাক্ষাৎ হয় ২০০৭ সালে।  দুই দলই গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে ওঠে সুপার এইটে। নতুন বলে প্রথম ওভারেই মাশরাফির সামনে পড়েছিলেন গেইল।  ৫ বলে ১ রান। ওই ম্যাচেও গেইল রান পাননি। সৈয়দ রাসেলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছিলেন। ২০১১ বিশ্বকাপে খেলা হয়নি মাশরাফির। তবে ঘরের মাঠে মাশরাফিবিহীন বাংলাদেশকে ৫৮ রানে অলআউটের লজ্জা দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তা তো মনে আছে সবারই। লক্ষ্য তাড়ায় ওই ম্যাচে গেইল করেছিলেন ৩৭ রান। ২০১৫ বিশ্বকাপে আলাদা আলাদা গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। শেষ আটেও তাদের দেখা হয়নি। পরবর্তীতেও না। দুই দলই বাদ পড়ে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। চার বছর পর দুই বন্ধু মুখোমুখি লড়াইয়ের অপেক্ষায়। ইংল্যান্ডে আসার আগে দুজনই ঘোষণা দিয়েছেন এটাই তাদের শেষ বিশ্বকাপ। দুজনই খুব করে চেয়েছেন নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ রাঙাতে, দেশকে বড় কিছু দিতে। কার মুখে ফুটবে হাসি? জানতে অপেক্ষা করতে হবে আর একটা দিন। রাইজিংবিডি/টনটন/১৬ জুন ২০১৯/ইয়াসিন/পরাগ