ইয়াসিন হাসান ভারত থেকে

কোহলির উইকেট ও ইবাদতের স্যালুট রহস্য

ইডেনে ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে থামিয়েছিলেন পেসার ইবাদত হোসেন।

উইকেট ইবাদতের পকেটে গেলেও কোহলির আউটের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তাইজুল ইসলামের। লং লেগে দাঁড়িয়ে মাথার ওপর দিয়ে আসা বল লাফিয়ে তালুবন্দি করেন তাইজুল! অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়। কোহলিও হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন! ব্যাট তাক করে যেন বলেছিলেন, ‘ও কী করল এটা?’

ইন্দোরে কোহলিকে মাত্র দুই বল টিকতে দিয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহী। ইডেনে ইবাদতের বলে কোহলি ফিরলেও রান করেন ১৩৬। তবে কোহলির উইকেট পেয়ে উচ্ছ্বসিত ইবাদত, ‘এটা আমার স্বপ্ন ছিল। বিশ্বের সেরা একজন ব্যাটসম্যান কোহলি। যেকোনো বোলার তার উইকেট পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। হয়তো ওকে বিট করে আউট করতে পারিনি। কিন্তু তারপরও নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’

কোহলির উইকেটের পর নিজের ট্রেডমার্ক উদযাপন করতে ভুল করেননি ইবাদত। স্যালুট দিয়েছিলেন মাঠেই। কিন্তু তার স্যালুটকে ‘সেন্ড অফ’ ভেবে ইবাদত ও অধিনায়ক মুমিনুলকে ডেকেছিলেন দুই আম্পায়ার জো উইলসন ও মারাইস এরাসমাস। মুমিনুল পুরো বিষয়টি পরিষ্কার করেন দুই আম্পায়ারকে।

‘আমি আমার উদযাপন করেছিলাম। আম্পায়াররা ভেবেছিলেন আমি সেন্ড অফ করছি। তাই আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেছিল কেন আমি স্যালুট দিয়েছি। অধিনায়ক মুমিনুল ভাইকেও ডেকেছিলেন আম্পায়াররা। আমরা দুজন উনাদের বোঝাতে পারি যে, এটা আমার ট্রেডমার্ক উদযাপন’- বলেছেন ইবাদত।

ডানহাতি পেসারের স্যালুটের পেছনে রয়েছে ছোট্ট গল্প। কলকাতায় বসে সেই গল্পও শুনিয়েছেন ইবাদত, ‘প্রথম শ্রেণির ম্যাচে অভিষেক হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাইয়ের সঙ্গে খেলছিলাম। উনি আমাকে বলল, “পেসারদের ভেতরে তেজ থাকতে হয়, তুই একটা ট্রেডমার্ক উদযাপন বের কর”। আমি বিমানবাহিনী থেকে এখানে এসেছি উনি জানতেন। পরামর্শ দিলেন পরবর্তীতে উইকেট পেলে স্যালুট দিতে। আমি জানতাম কীভাবে স্যালুট দিতে হয়। উনি আমাকে বুদ্ধিটা দিলেন। এরপর উইকেট পেলে স্যালুট করে উদযাপন করি।’ 

ভারত সফরে ইবাদত বুঝেছেন পেস বোলিং করতে হয় কীভাবে।  ভারতের পেসারদের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করতে গিয়ে ইবাদত বলেছেন, ‘আমরা ওদের থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। একই উইকেটে দুই দলের পেসাররা খেলল, অথচ কতটা আলাদা পারফরম্যান্স। আমাদের বোলিংয়ের লেংথ আর ওদের বোলিংয়ের লেংথ পুরো আলাদা। আমরা ব্যাক অব লেংথে বোলিং করে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। আর ওরা ফুলার লেংথে বল করে, সাথে ওদের বোলিংয়ে সুইংও থাকে। ফলে আমাদের বল খেলা ওদের জন্য অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে, আর ওরা আমাদের ব্যাটসম্যানদের বেশ ভুগিয়েছে। এখন আমাদের শুরু। আমরা যত তাড়াতাড়ি শিখতে পারব। তত দ্রুত সফল হব।’

 

কলকাতা/ইয়াসিন/পরাগ